সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
মহামারি এই করোনাকালে আপনার প্রত্যাহিক খাবারের তালিকায় রদবদল আনুন। পাতে রাখুক পুষ্টিকর খাবার। যেসব খাবার খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড় সেসব খাবার খান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের প্রথম খাবারকে হতে হবে পুষ্টিগুণ ও খনিজে ঠাসা। ফুড পিরামিড অনুসারে সকালের খাবার যেন পরিমাণেও যথেষ্ট হয়। পেটে সামান্য খিদে রেখে খেলেও এই খাবারকেই হতে হবে সবচেয়ে ভারী, যা সারা দিনের কাজে রসদ জোগাবে।
করোনার সময়ে সব রকম খাবারের অভ্যাসেই কিছু রদবদল এসেছে। নিয়মিত ভাবে প্যাকেটজাত সসেজ, সালামি খাওয়ায় রাশ টানতে বলছেন চিকিৎসকরাই। মাছ-মাংস-ডিম সবই ভাল করে রান্না করে খাওয়ার যুক্তিতে বাদ গিয়েছে ডিমের পোচও। কাজেই খাবারের মেনুতেও আনতে হয়েছে বদল। কোন কোন খাবার বাদ দেবেন?
এই সময় শারীরিক শ্রম কম হচ্ছে। তার উপর জিম-যোগাসন প্রশিক্ষণ ক্লাস বন্ধ। তাই পুষ্টির সঙ্গে যতটা পারা যায় ডায়েটেও মন দিতে হবে। বাড়িতে বানানো কেক সকালে খাবার-পাতে রাখতে চান অনেকেই। কেউ বা স্যালাড রাখেন পাতে। এই দুই খাবারেই অনেকটা মাখন বা তেলের পরিবর্তে মেশাতে পারেন ম্যাশড কলা। পাকা কলাকে মিক্সারে ঘুরিয়ে ভাল করে থকথকে বানিয়ে নিলেই তৈরি। পুষ্টিবিদদের হিসেব অনুযায়ী, এক কাপ মাখনে যেখানে ১৬২৮ ক্যালোরি ও ১১৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, সেখানে এক কাপ ম্যাশড কলায় রয়েছে মাত্র ২০০ ক্যালোরি ও আধ গ্রামেরও কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট। সঙ্গে উপরি পাওনা পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ও ফাইবার।
লবণ হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে এমনিতেই খুব একটা ভাল নয়। অথচ, শরীরে প্রয়োজনীয় আয়োডিনটুকুর জোগান দিতে যেটুকু লবণ দরকার, তা খেতে হবে। কিন্তু তার বেশি নয়। পানি বেশি ও লবণ কম— এই সমীকরণে শরীরে মেদও কম জমে। তাই স্যালাডে লবণ যোগ করার বদলে মেশান কিছু ঘরোয়া মশলার সঙ্গে সাইট্রাস জুশ। লবণের স্বাদ আসবে এতেই।
চিনির বদলে মধু বা গুড়ের বাতাসা মেশান রান্নায়। চিনির কাজও হবে, এ দিকে চিনির ক্ষতি থেকেও শরীরকে রাখতে পারবেন নিরাপদ দূরত্বে। নারকেলের চিনিও খুব স্বাস্থ্যকর, তবে লকডাউনের সময় তা পাওয়া একটু কষ্টসাধ্য। তাই মধু ও বাতাসায় আস্থা রাখুন।
হৃদরোগীদের জন্য তো বটেই, সাধারণ মানুষজনের জন্যও অ্যাভোকাডো খুবই দরকারি। মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটি বড় উৎস এই অ্যাভোকাডো। মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডকে যেমন কমাতে পারে, তেমনই টাইপ-২ ডায়াবিটিসকেও কমাতে সক্ষম। তাই মেয়োনিজের বদলে অ্যাভোকাডো গুঁড়ো যোগ করুন খাবারে। স্যালাডেও তা যোগ করতে পারেন।
আলুর বদলে রাঙালু বা পেঁপে বেছে নিন। এতে যেমন মেদের ভয় কমবে, তেমনই অতিরিক্ত ফাইবার, ভিটামিন সি, এ ও বি কমপ্লেক্সের জোগানও পাবেন। তারা আলুর বদলে পাতে স্কোয়াশ রাখুন।
টম্যাটো সসের বদলে টম্যাটো খান। প্রিজারভেটিভ যোগ করা খাবারের নানা দোষ রয়েছে। মেদ বাড়ানো থেকে শুরু করে নানা অসুখবিসুখ ডেকে আনতে সে ওস্তাদ। তাই বাড়িতে বানানো পিৎজা হোক বা চাউমিন, নিশ্চিন্তে তাতে যোগ করুন টম্যাটো বা টম্যাটো বেটে নুন ও গোলমরিচ মেশানো ঘরে বানানো পিউরি।
সাদা পাউরুটির বদলে খান ব্রাউন ব্রেড। এতে ফাইবার অনেক বেশি। পুষ্টিগুণও বেশি। মেদ জমার ভয়ও থাকে না।
প্যাকেটজাত সসেজ, সালামি এ সব ক’দিন বন্ধ থাক। প্রোটিনের ভাগ বাড়াতে বরং তাদের জায়গায় পাতে তুলুন চিকেন স্টু। দোকান থেকে চিকেন কিনে তা দিয়ে বাড়িতেই সব রকম সবজি সহযোগে বানিয়ে নিন চিকেন স্টু।
ফলের রস আর নয়। প্যাকেটজাত ফলের রসে প্রচুর কৃত্রিম চিনি ও লবণ মেশানো থাকে। ট্রান্স ফ্যাটও থাকে বেশি। তাই গোটা ফল খান। চিবিয়ে ফল খেলে তার ফাইবারও অনেক বেশি করে পাওয়া যায়।
ডিমের পোচ ক’দিন বন্ধ থাক। করোনার সময়ে সব রকম খাবারই ভাল করে ফুটিয়ে ও রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাই পোচের বদলে সেদ্ধ ডিম রাখুন পাতে। তাতে প্রোটিন যেমন পাবেন, তেমন ডিমটাও ভাল ভাবে সেদ্ধ করে খাওয়ার ফলে কোনও রকম ব্যাক্টিরিয়ার ভয় থাকবে না।
সূত্র: ঢাকা টাইমস