সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সাত মাস আগে তৃতীয়বারের মতো বিয়ে করে সংসার শুরু করেছেন ‘সারেগামাপা’ খ্যাত বাংলাদেশি গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। স্ত্রী মেহরুবা সালসাবিলকে নিয়ে তিনি বর্তমানে রাজধানীর নিকেতনে একটি ফ্ল্যাটে থাকছেন। গত দুদিন ধরে এমন গুঞ্জনই ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। বিয়ের কাবিন নামাও প্রকাশ পেয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোবেলের একাদিক ঘনিষ্ঠজনও এই বিয়ের কথা নিশ্চিত করেন।
তবে দেশের প্রথমসারির একটি দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে নোবেলের দাবি, তিনি জীবনে অনেকগুলো সম্পর্কে জড়ালেও এটি তার প্রথম বিয়ে। ভালোবেসে মেহরুবার মঙ্গে ঘর বেঁধেছেন তিনি। নোবেল জানান, মাত্র আড়াই মাস প্রেম করার পর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়। সেখানে নোবেলের পরিবারের সবাই উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না মেয়ে পক্ষের কেউ।
এ ব্যাপারে নোবেলের বক্তব্য, ‘মেহরুবা আমাকে পালিয়ে বিয়ে করেছে। তাই ওর পরিবারের কেউ ছিলেন না। নোবেল জানান, ‘বিয়ের জন্য মেহরুবা আমার সঙ্গে আমাদের ডেমরার বাসায় চলে আসে। সেখানে আমার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। এক মাস পর অবশ্য আমার শশুরবাড়ির লোকজন সবকিছু জানতে পারেন। এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। মেহরুবার পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নিয়েছেন।’
স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় সম্পর্কে নোবেল জানান, ‘প্রায় ১০ মাস আগের কথা। আমি শো করতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। হিউস্টনে একটি শো শেষে অ্যারিজোনাতে যাচ্ছিলাম। বিমানে থাকা অবস্থায় মেহরুবা আমাকে ইনস্টাগ্রামে নক দিয়েছিল। সেই থেকে পরিচয় ও সখ্যতা। এরপর দেশে আসি, ওর সঙ্গে দেখা করি। আড়াই মাস চুটিয়ে প্রেম করার পর আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমরা দুজনে আমাদের নিকেতনের বাসায় থাকছি।’
কিন্তু বিয়ের কথা এত দিন লুকিয়ে রাখলেন কেন গায়ক? এ ব্যাপারে নোবেলের ভাষ্য, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে বেশ কয়েক মাসের জন্য ভারতে শো করতে গিয়েছিলাম। নানা ব্যস্ততার কারণে বিয়ের কথা জানানো হয়নি। এখন তো সবাই জেনে গেছে। ভালোই হয়েছে, আমি খুশি হয়েছি। কারণ বিয়ের বিষয়টা কীভাবে সবাইকে জানাব, তা নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম। এখন নিজেকে চাপমুক্ত মনে হচ্ছে।’
এদিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, এটি নোবেলের তৃতীয় বিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গায়কের এক ঘনিষ্ঠজন এমন দাবি করেন। তিনি জানান, এর আগে রিমি নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন নোবেল। সেই সংসার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। রিমিই ডিভোর্স দিয়েছিলেন নোবেলকে। এরপর এক আত্নীয়ের সঙ্গেও সংসার শুরু করেন নোবেল। সেই সম্পর্কেও অল্প দিনের মধ্যে দাঁড়ি পড়ে যায়।
কিন্তু এই খবরকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন নোবেল। তিনি বলেন, ‘এর আগে আমার কোনো বিয়ে হয়নি। তবে অনেক মেয়ের সঙ্গে রিলেসন ছিল। সংখ্যাটা এত যে গুনে শেষ করা যাবে না। বয়সের কারণে এটা হয়ই। বিয়ের আগে সবার জীবনেই প্রেম থাকে। কারো কম, কারো বেশি। আমার একটু বেশিই ছিল। এই অবস্থায় এখন যদি বলা হয় এটি আমার তৃতীয় বিয়ে, সেটা ঠিক না। এটা গুজব।’
প্রসঙ্গত, গান গেয়ে যতটা না আলোচিত হয়েছেন, নানা কর্মকাণ্ডের জন্য তার চেয়ে বহুগুণ বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছেন গোপালগঞ্জের ছেলে নোবেল। গত বছর ভারতের জি বাংলা চ্যানেলের গান বিষয়ক রিয়ালিটি শো ‘সারেগামাপা’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পর থেকে খুব অল্প সময়েই তিনি অনেক বেশি বিতর্ক ছড়িয়েছেন। নামিদামি গায়ক, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি নিজের নতুন গান ‘তামাশা’র বিতর্কিত প্রচারণা চালিয়েও সমালোচিত হন নোবেল। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির একজন ইউটিউবারের সঙ্গে আপত্তিকর তর্কে জড়িয়ে পড়েন নোবেল। যার কারণে র্যাব কার্যালয় থেকে তার ডাক পড়ে। সেখানে গিয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে আসেন বাংলাদেশের এই উঠতি গায়ক। সেই বিতর্ক শেষ না হতেই ছড়ায় তার এই তৃতীয় বিয়ের গুঞ্জন।