সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক প্রতিবন্ধী গৃহবধূর উপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। কয়েক বছর আগে বন্দরের ফরাজীকান্দা পূর্বপাড়া মাদরাসা রোড এলাকার এমারত হোসেন ও হামিদা আক্তারের মেয়ে শাহনাজ আক্তারের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শহরের শহীদনগর এলাকার শাহ জামালের এর সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সাড়ে তিন বছরের এক কন্যা সন্তান আছে।
অভিযোগ ওঠেছে- তবে প্রতিবন্ধী হওয়ার কারনেই গৃহবধুর কাল হয়ে দাঁড়ায়। স্বামী শ্বাশুরীর অমানবিক নিযার্তন সহ্য করতে হয় দিনের পর দিন। কিন্তু একমাত্র কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে তাদের সব অমানবিক নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে আসছেন তিনি।
আরও জানাগেছে, গত দু’মাস আগে খুন্তির ছ্যাকা দিয়ে মেয়ে রেখে বাপের বাড়ী তাড়িয়ে দেয় স্বামী শাহ জামাল। মরহুম পিতার বাড়ী বন্দরে এসে কয়েকদিন থাকাকালীন সময়ে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: কচি তাকে প্রতিবন্ধীর আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদে নিয়ে গেলে বন্দর উপজেলা নিবার্হী অফিসার শুক্লা সরকার তাকে বাচ্চা সহ একটি ছাগল উপহার দেন।
খবর পেয়ে স্বামী-শ্বাশুরী তাকে নিতে আসলে প্রতিবন্ধী শাহনাজ তার একমাত্র সন্তানের মায়া ছাড়তে না পেরে আবারও তাদের সাথে তার শ্বশুরবাড়ী শহীদনগর চলে যায়। তার স্বামী তাকে না জানিয়ে সে ছাগল দু’দিনের মধ্যেই বিক্রি করে দেয়। পরে জানতে পারলে শাহনাজ আক্তার প্রতিবাদ করলে তার স্বামী তাকে অকথ্য ভাষায় গালামন্দ সহ প্রচন্ড মারধর করে। তাকে বিভিন্ন যায়গায় ভিক্ষা করতে বলে। একমাত্র মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য বাসায় থাকতে চাইলে জোরপূর্বক তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে ছেড়ে আসতো পাষন্ড স্বামী।
প্রতিবন্ধী স্ত্রীর ভিক্ষার টাকাই একমাত্র সম্বল ছিল স্বামী শাহ জামালের। এদিকে প্রতিবন্ধী স্ত্রী সারাদিন হুইল চেয়ারে বসে ভিক্ষা করত অথচ স্বামী ভিক্ষার টাকা নিয়ে বাসায় বিভিন্ন মেয়ে নিয়ে অবাধে মেলামেশা ও তাদের নিয়ে নেশায় মত্ত থাকতো বলেও অভিযোগ।
যখন শাহনাজ ভিক্ষা করে বাসায় ফিরত তখন দেখতো তার ৩ বছরের একমাত্র মেয়ে সুরাইয়া অবহেলায় না খেয়ে পড়ে আছে খাটের এক কোনায়। মাতাল অবস্থায় শাহ জামাল তার চোখের সামনে মেয়ে নিয়ে মেলামেশা এবং রাত কাটাচ্ছে- এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তার স্বামী।
অসহায় প্রতিবন্ধী শাহনাজ আক্তার প্রতিবাদ করলে তাকে স্বামী, শ্বাশুরী মিলে গরম খুন্তির ছ্যাকা পিঠের নিজ থেকে পায়ের উপর দিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালায়। চুল কেটে তার মেয়ে রেখে আধমরা অবস্থায় তার মায়ের বাড়ীতে পাঠায়।
শাহনাজের ভাই তার একমাত্র বোনের এ রকম নির্যাতনের ঝাপ দেখে বন্দর থানায় সাধারণ জিডি করতে গেলে এক পুলিশ কর্মর্কর্তা বলেন, ‘জিডি এখানে করা যাবেনা, যেখানে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেই শহীদনগর এলাকাধীন থানায় জিডি করতে হবে।’ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নারায়ণগঞ্জ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন, যে তার পিঠের মাংস পচে ক্যান্সার হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা খুবই আশংকাজনক। যে কোন সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে সে। এ রকম অমানবিক নির্যাতনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সঠিক বিচার চেয়েছেন নির্যাতিত অসহায় প্রতিবন্ধী মৃত্যু শয্যাশায়ী শাহানাজ আক্তার ও তার পরিবার।