সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদের দুই মেম্বার (সদস্য) এর অনুগামী দুই গ্রামবাসীর মাঝে বিবাদমান দ্বন্ধ নিরসন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। ৮ জুন ওই সংঘর্ষের ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছিলেন তিনি। এবার তিন দিনের মাথায় ওই দ্বন্ধ নিরসণ করেছেন।
১০ বুধবার দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হাবিবুর রহমান হাবু ও ফারুক হোসেনের মধ্যে চলমান দ্বন্ধ নিরসন করেন তিনি। বারদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল হকের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম উভয় পক্ষকে নিয়ে তাদের চলমান দ্বন্ধের অবসান ঘটান।
এ ব্যাপারে বারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, আমি বারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিষদের সকল সদস্যই আমার কাছের মানুষ। এখানে আমি করো পক্ষাবলম্ভন করতে পারিনা। দুই ইউপি সদস্যের মধ্যে যে দ্বন্ধ ছিল, তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে সাথে নিয়ে নিরসন করে দিয়েছেন। আশা করি বারদী ইউনিয়ন শান্তিপূর্ণ থাকবে।
এ বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে বারদী এলাকার দুটি পক্ষ দীর্ঘদিন যাবত মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছে। যা ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ছড়িয়ে পড়েছে ২টি গ্রামবাসীর মধ্যে। ব্যক্তি পর্যায়ে হলে আমরা আইনিভাবে মোকাবেলা করতাম কিন্তু দুটি গ্রামের কয়েক হাজার লোক এ দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এসব লোকের বর্তমান ও তাদের ভবিষ্যৎ প্রজম্মের কথা চিন্তা করে কঠোর হুশিয়ারীর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসা করে দিয়েছি। আশা করি তারা তাদের ভুল বুঝে ভবিষ্যতে আর দ্বন্ধ করবেনা। তারা এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসা করতে পেরে নিজের কাছে ভাল লাগছে।
অন্যদিকে জানাগেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপ মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এই সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ কঠোর ভুমিকাও নেয়। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে হিমশিম খাচ্ছিল পুুলিশ। ততক্ষণে দুই গ্রুপের কয়েক হাজার মানুষের হাতে টেটা বল্লব জুইত্তা রাম দা বটি কাস্তে সহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া ও সংঘর্ষ চলছে। এমন সময় তাদের সামনে গিয়ে হাজির হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। তার অধম্য সাহসিকতার ফলে দুই গ্রুপের কয়েক হাজার মানুষের হাতে দেশীয় অস্ত্রের সামনে তার ভুমিকায় উত্তেজনা শান্ত হয়। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদি ইউনিয়ন এলাকায়। বারদী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৮ জুন সোমবার সকালে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এতে উভয়পক্ষের ৩জন আহত হয়েছিলেন।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছুড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সূত্রে, গত ২৮ মে বারদি ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু ও চেঙ্গাকান্দী গ্রামের জমিলা মেম্বারের ছেলে সোহেল, জুয়েল, ফারুক মেম্বার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল।
ওই সংঘর্ষে ইউপি সদস্য হাবুকে কুপিয়ে জখম করে সোহেল গ্রুপের লোকজন। এ ঘটনার জের ধরে ৭ জুন রবিবার বিকেলে হাবু মেম্বারের ছেলে শান্তিরবাজারে চটপটির দোকানে বসা অবস্থায় সোহেল গ্রুপের লোকজন তাকে মারধর করে।
পরে সোমবার সকালে মাইকে দুই গ্রামের লোকজনদের মাঠে নামার ঘোষণা দিলে মান্দারপাড়া গ্রামের হাবু মেম্বার, চোঙ্গাকান্দী গ্রামের জমিলা মেম্বারের ছেলে সোহেল, জুয়েল ও ফারুক মেম্বারের সমর্থকরা দেশী তৈরী অস্ত্রসজ্জে সজ্জিত হয়ে ৮/১০টি ককটেল নিক্ষেপ ও দফায় দফায় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খরব পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
পরে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় উত্তেজিত লোকজন দেশীয় অস্ত্রসজ্জে সজ্জিত ছিল। তিনি উভয় গ্রুপের লোকজনদের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বস্থ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।