সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১) করোনা হটস্পট নারায়ণগঞ্জে শুরু থেকে দায়িত্বপালন করে আসছে। লকডাউন কার্যকর করা থেকে শুরু করে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণ, বাজার নিয়ন্ত্রণ, কাঁচাবাজারে করোনা পরিস্থিতির স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ, জনসাধারণের নিরাপত্তা বিধান, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সামাজিক হেনস্থা দূরীকরণ ইত্যাদি কর্মকান্ড অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছে।
এছাড়াও সংকটকালে ১০ হাজার দুস্থ কর্মহীন জনসাধারণের মাঝে র্যাব-১১ কর্তৃক নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য প্রদান করা হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সর্বপ্রথম গত ১৫ এপ্রিল প্রথম তিনজন র্যাব সদস্য করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন পদবীর সর্বমোট ১১৭ জন অকুতোভয় র্যাব-১১ এর সদস্য কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদবীর ১১৩জন সদস্য করোনা জয় করে নতুন উদ্যোমে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আত্মনিয়োগ করেছে। বর্তমানে ৪ জন সদস্য সুস্থ্য হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
র্যাব-১১ এর সর্বমোট আক্রান্ত ১১৭ জন সদস্যের মধ্যে ১৯জন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), ১০ জন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ), ৬জন নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও ২ জন কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল এ চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরকারী হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর চাপ থাকায় শুধুমাত্র বিভিন্ন উপসর্গ ও জটিলতা দেখা দেয়া করোনা পজিটিভ র্যাব সদস্যবৃন্দদেরকে তাদের স্ব-স্ব বাহিনীর জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। র্যাব-১১ এর ৭১ জন সদস্য ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে স্থাপিত অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং ৭৬ জন ইতিমধ্যে সুস্থ্য হয়ে কর্মে যোগদান করেছেন। ব্যাটালিয়ন সদরে স্থাপিত অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টারে ৪ জন সুস্থ্য হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
র্যাব-১১ এর সদস্যদের মাঝে ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ হ্যান্ড ওয়াশিং পয়েন্টসহ পারসোনাল হাইজিন প্রতিপালনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র্যাব-১১ এর সদস্যদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন সি সম্মৃদ্ধ মৌসুমী ফল খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতির মাঝেও দৃঢ় মনোবল নিয়ে র্যাব-১১ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গত ২৬ মার্চ লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি ১১ জুন পর্যন্ত র্যাব-১১ কর্তৃক সর্বমোট ৫৪টি সফল অভিযানে মোট এক লক্ষ চৌত্রিশ হাজার ত্রিশ পিস ইয়াবা, ২৫৪.৫ কেজি গাঁজা, ১১৬৭ বোতল ফেনসিডিল, ১০০ ক্যান বিয়ার, ১৩ বোতল হুইস্কি, ১৫০০ লিটার অ্যালকোহল, ১৮০০ বোতল নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১২৫০টি বিভিন্ন ব্যান্ডের লেবেল, ৪টি ট্রাক, ৩টি পিকআপ, ৪টি কাভার্ড ভ্যান, ১টি মাইক্রোবাস, ৩টি মোটর সাইকেল, ১টি অটোরিক্সা, ৪০টি মোবাইল, ৩৪টি সিম, নগদ ১৪,৮৯,২০৫০টাকা এবং ১জন অপহৃত ভিকটিম উদ্ধারসহ ৪৬ জন মাদক ব্যবসায়ী, ৬ জন ডাকাত, ২জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ৪জন চাঞ্চল্যকর ধর্ষণকারী, ৩জন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী, ১২জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ও ১৮জন অন্যান্য আসামি সহ সর্বমোট ৯১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়।