সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
রাজধানী ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম হোতা শ্যাম ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। তার কাছ থেকে ৬টি স্বর্ণের বার ও নগদ ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার।
তিনি জানান, গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ১০ জুন বুধবার রাতে ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায় এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আন্তজার্তিক স্বর্ণ চোরাচালানের একজন অন্যতম হোতা ও স্বর্ণ পাচার মামলার পলাতক আসামি শ্যাম ঘোষকে (৪৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে শ্যাম ঘোষের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাঁতীবাজারে তার দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ৬টি স্বর্ণের বার যার ওজন ৭০০.৫০ গ্রাম ও চোরাচালানকৃত স্বর্ণ বিক্রয়ের নগদ ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, গত ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন মৈনট ঘাট এলাকায় হতে অবৈধ স্বর্ণ পাচারকালে ২০০টি স্বর্ণের বার সহ আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের ৫ জন সদস্যকে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। উদ্ধারকৃত ২০০টি স্বর্ণের বারের ওজন সর্বমোট ২৩ কেজি ৩২৮ গ্রাম, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৯ কোটি টাকা।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে চোরাচালান আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি বর্তমানে র্যাব তদন্ত করছে। আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রত্যেকের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একটি বিষয় উঠে আসে যে, এই স্বর্ণের চোরাচালানের অন্যতম হোতা শ্যাম ঘোষ নামের তাঁতীবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী এবং সে এই পাচারকৃত স্বর্ণের মূল মালিক।
এছাড়াও গত ২০১৯ সালের ৩১ মে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ‘দিনে কোটি টাকার স্বর্ণ পাচার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে অবৈধ স্বর্ণ পাচারকারী হিসেবে শ্যামের নামটিও উঠে আসে। উক্ত সংবাদে বলা হয়- গত ২৭ মে ২০১৯ তালিখে ১০৩টি স্বর্ণের বার সহ আব্দুস সালাম নামে এক স্বর্ণ পাচারকারীকে ঢাকা বিমান বন্দরের গ্রিন চ্যানেল এলাকা হতে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার এবং বিমান বন্দর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। রিমান্ডে আব্দুস সালাম জানায় যে ঢাকার তাঁতীবাজারের জনৈক শ্যাম ও কৃষ্ণা নামে দুই ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে চোরাই স্বর্ণ কিনতো।
র্যাব আরও জানায়, র্যাবের তদন্তাধীন এই মামলায় দীর্ঘদিন শ্যাম ঘোষ পলাতক ছিল। অভিযুক্ত শ্যামকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব-১১ বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সর্বশেষ গত ১০ জুন ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকা হতে শ্যাম ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এই মামলায় তাকে দুই দফায় মোট ৬ দিনের রিমান্ডে আনা হয়।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। সে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের একটি সেন্ডিকেট এর মূলহোতা। এছাড়াও স্বর্ণ চোরাচালান সম্পর্কে শ্যাম ঘোষ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ জুন ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায় তার দোকানে অভিযান পরিচালনা করে চোরাচালানকৃত ৬টি স্বর্ণের বার ও নগদ ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে ৬দিনে রিমান্ড শেষে আজ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে যে সকল তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত ও তাদের গ্রেপ্তার করার লক্ষ্যে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।