সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে অপহরণের ৮দিন পর রাসেলকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০ জুন শনিবার বিকেলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১৯ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোঃ রাসেলকে উদ্ধারসহ সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মোঃ আল আমিন (২৪) ও ইরা ইসলাম (২২)।
র্যাব আরও জানায়, ১৮জুন ভিকটিমের মা র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন। তিনি জানান গত ১১ জুন ভিকটিম মোঃ রাসেল নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল চিটাগাংরোডে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিম রাসেল বাড়িতে না ফেরায় তার মা অনেক খোঁজাখুজি করেন। ১২ জুন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে বলে যে আপনার ছেলে আমাদের কাছে আটক আছে। তারা ভিকটিম রাসেলকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়।
র্যাব আরও জানায়, আসামীরা পরষ্পর স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দীপ থানাধীন সাতঘরিয়া এলাকায়। আসামীরা আরো স্বীকার করে যে, তারা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য, দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এই ধরণের অপহরণ কার্যক্রম করে আসছে। অপহরণ করার ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তার মধ্যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ অন্যতম। তারা ভিকটিম মোঃ রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান সহ অন্যান্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ননা দেয়।
ভিকটিম রাসেল অপহরণ বিষয়ে আসামিরা জানায় যে, ধৃত আসামীরা গত ১১ জুন নারায়ণগঞ্জে চিটাগাং রোড থেকে রাসেলকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে অবচেতন করে তাদের ভাড়া করা একটি ফ্লাট বাসায় নিয়ে যায়। অতপর উক্ত বাসায় একটি গোপন কক্ষের ভিতর হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করা সহ বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং মুক্তিপণের ২ লক্ষ টাকার জন্য রাসেলের পরিবারের কাছে ফোন করে এবং এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য রাসেলের পরিবারকে রাসেল হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিম রাসেলের মুখের ভিতর কাপড় ঢুকিয়ে দেয় এবং গামছা দিয়ে চোখ, মুখ, হাত-পা বেধে লাঠি ও কাঠের তৈরি ব্রাশ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সুই দিয়ে খোঁচায়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে রাসেল জীবন বাঁচাতে ১৫ জুন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকী টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়।
পরবর্তীতে ভিকটিম রাসেলের মা র্যাব-১১ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে। যার প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল কর্তৃক গোয়েন্দা নজরধারীর মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে গত ১৯ জুন বিকেলে সাড়ে ৫টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং হতে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।