সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ১১ জুলাই প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মৃত্যুকালীন সময়ে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদেও ছিলেন। প্রয়াত নেতার মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন। তারা মনে করছেন- আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতিতে খসরুর অবদান ভুলে যাওয়ার মত নয়। তিনি নেতাকর্মীদের মাঝে কৃতিমান। তারা বলছেন- বিএনপির নেতাকর্মীদের হৃদয়ে এখনো আছেন প্রয়াত নেতা খসরু।
প্রয়াত নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরুকে স্মরণ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত বলেন, খসরুর তুলনা খসরু নিজেই। তার সঙ্গে তুলনা করা যায় এমন রাজনীতিবিদ আড়াইহাজার বিএনপিতে জন্মগ্রহণ করেননি নিঃসন্দেহে। কারণ তিনি শোষণের রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি রাজনীতি করতেন আড়াইহাজারবাসীর কল্যাণের জন্য। আমার জানামতে, তার জীবদ্দশায় তিনি আড়াইহাজারবাসীর অকল্যাণ হোক এমন কাজ করেনি। আর তার সাক্ষী তার শেষ বিদায় বেলায় জনতার ঢল। এতেই প্রমাণ মিলে আসলে তিনি কেমন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন রাজনীতিবিদ, ধর্মভীরু, সমাজসেবক, পরপুকারী ও আদর্শবান বাবা ছিলেন।
জেলা যুবদলের সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ শব্দর আলী প্রয়াত খসরু সম্পর্কে বলেন, যারা দলের দুঃসময়ে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন, দলের পোড় খাওয়া নেতাকর্মী, কিন্তু দলীয় কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেননি এমন নেতাদের রাজনৈতিকভাবে মূল্যায়ন করতে তিনি কন্ঠাবোধ করতেন না। কারণ তিনি নিজেও ছিলেন সত্যিকার অর্থে একজন তুখোর পোড় খাওয়া রাজপথের লড়াকু সৈনিক। নারায়ণগঞ্জে চাষাড়ায় তৎকালীন তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালে তিনি যে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তা আজও আমাকে পীড়া দেয়। তিনি চেয়েছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা হবে একটি আদর্শ উপজেলা। আর সেই লক্ষেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জীবনযুদ্ধে প্রকৃতির নিয়মে হঠাত করে আল্লাহর ডাকে পাড়ি জমান ওপারে। মৃত্যুর দুই বছর পার হতে বসলেও তার চলে যাওয়ার শূণ্যতা আজও পূরণ করতে পারেনি আড়াইহাজার বিএনপি। তার শূণ্যতা আজও আমাদের বেদনা দেয়। তিনি থাকলে হয়তো আড়াইহাজার বিএনপিতে এতো বিভাজন বিরাজ থাকতো না। সত্যিকার অর্থে আমরা আড়াইহাজার বিএনপি একজন ন্যায়পরায়ণ অভিভাবক হাড়িয়েছি। যার অভাব বিএনপির এ দুঃসময়ে আমরা হারে হারে টের পাচ্ছি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ মহান সৃষ্টিকর্তা যেন খসরু সাহেবকে বেহেশতের সম্মানিত স্থান দান করেন।
জেলা যুবদলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ কামাল বলেন, সকলের কাছেই খুব প্রিয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নেতা ছিলেন এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। তিনি ছিলেন আমার রাজনীতির অভিভাবক ও আদর্শ। তিনি শুধু আড়াইহাজারের নেতাই ছিলেন না একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাও ছিলেন। মানুষের মাঝে খসরু অনেক বড় মাপের নেতা ছিলেন যার মাপকাঠি অনিবার্য। এই নেতা আর আসবে না ভাবতেই অবাক লাগে। আগামী ১১জুলাই এএম বদরুজ্জামান খান খসরু দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সেই সঙ্গে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই আল্লাহ যেন তাকে বেহেশতের সম্মানিত স্থানে আসীয়ান করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, গত ২০১৮ সালের ১১ জুলাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও আড়াইহাজার উপজেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
এএম বদরুজ্জামান খান খসরু এক সময়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮৮ সালে বন্যার্তদের মাঝে ব্যাপক ত্রাণ বিতরণ করে তিনি আলোচনায় চলে আসেন। পরে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।