সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপি জামাতের ক্ষমতা থাকাকালীন সময় থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতিতে মোবারক হোসেন। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে ছাত্রদলের রাজনীতিতে ছিলেন ক্ষমতার রসদের আশায়। তারপর থেকে বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। এরি মাঝে ক্ষমতার স্বাদ নিতে মেশে গিয়েছিলেন সরকার দল আওয়ামীলীগে। এখন ছাত্রদলের কমিটি হবে তাই ফিরেছেন আবার বিএনপির ছাত্রদলের রাজনীতিতে। সোজা তিনি হয়ে যাচ্ছেন আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। যার পেছনে বিশেষ সুবিধা নিয়ে জেলা ছাত্রদলকে ম্যাসেজ করছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির একজন নেতা।
কিন্তু ছাত্রদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশি ও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মানতে নারাজ এই মোবারক হোসেনকে। দীর্ঘদিন সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘা ভাসিয়েছিলেন ক্ষমতার জোয়ারে। সেই মোবারক হোসেনের নানা কর্মকান্ডের ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। যা নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শুধু মোবারক হোসেনই নয় তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সেইসব ছবিও প্রকাশ পেয়েছে।
কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপনের সঙ্গে মিটিং মিছিল সভা সমাবেশের ডজন ডজন ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এই চেয়ারম্যান পুলিশ সদস্য রুবেল সহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি। সেই স্বপনের সঙ্গে এলাকায় বুক ফুলিয়ে রাজনীতি করেছেন মোবারক হোসেন। আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন চরাঞ্চল এলাকা। কিন্তু সেই এলাকায় মোবারক হোসেন করেছেন আওয়ামীলীগের রাজনীতি।
১৫ আগস্টে আওয়ামীলীগের সমাবেশে মিছিল নিয়ে যোগদান করেছিলেন মোবারক হোসেন। যা সেই সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন এবং তার প্রমাণপত্র ছবিও প্রকাশ পেয়েছে। ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একাধিক মিটিংয়ের ছবিও মোবারক হোসেনের সঙ্গে রয়েছে। স্থানীয় সরকারি দলের এমপির সঙ্গে তার আত্মীয়স্বজনদেরও রাজনীতির কর্মকান্ডের একাধিক ছবি প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়াও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন নজরুল ইসলাম আজাদ। কিন্তু সেই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর পক্ষে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন মোবারক হোসেন। সেই ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর মোবারক হোসেনকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জোড়ালো সক্রিয় দেখা যায়নি। সম্প্রতি করোনাকালিন সময়ে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে উকি দেন। আর এতেই উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কের পদ ভাগিয়ে নিতে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার ইশারায়।
তবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে মোবারক হোসেন দাবি করেছেন- যেসব ছবিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে তা কম্পিউটারে এডিট করা। তবে মিছিলের নেতৃত্বে থাকা লাল টি-শার্ট পরিধানকারী ব্যক্তিটি আপনি কিনা জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন-ওটি ছিল এলাকার একটি স্কুলের অনুষ্ঠানের ছবি। পরক্ষনেই তিনি নিউজটি না করার জন্য অনুুরোধও করেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ছাত্রদলের রাজনীতিতে জুবায়ের হোসেন জিকুর চেয়ে অনেক বেশি রাজপথে যারা ঘাম ঝড়িয়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে জিকুকে সদস্য সচিব পদে রাখার চেষ্টা চলছে। মোবারক হোসেনকে আহ্বায়ক। যার ফলে স্থানীয় সক্রিয় মাঠ পর্যায়ের রাজপথে নেতাকর্মীরা তাদেরকে মানতে নারাজ। জেলা ছাত্রদল ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমুল্যায়ন করে এই দুই বিতর্কি ব্যক্তির হাতে উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি তুলে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। আরো অভিযোগ ওঠেছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে আড়াইহাজার উপজেলায় ছাত্রদলের কমিটির নিয়ন্ত্রনের নেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও ওঠেছে অভিযোগ।
এ অভিযোগের বিষয়ে ২২ জুলাই বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে তার গ্রামীণফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার এয়ারটেল নম্বরে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম সজীবের মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
যদিও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি বরাবর সব সময় দাবি করে আসছেন- কেউ কোন বিশেষ সুবিধা দিয়ে কিংবা উপটোকন দিয়ে বা চাপ প্রয়োগ করে কমিটি নিতে পারবেনা। যারা রাজপথে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেছেন এবং যোগ্য তাদের হাতেই নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। তাদের এমন বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটছে না।