করোনা মহামারিতে যেভাবে জনগণের পাশে বিএনপি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দেশের তিনটি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ বিএনপি ও জাতীয়পার্টি। এই তিনটি দলের নেতাদের মধ্যে করোনা মহামারিতে নারায়ণগঞ্জের জনগণের মাঝে সবচেয়ে বেশি সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন বিএনপির নেতারা। সরকারি দলের এমপি, চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাই কেবল জনগণের পাশে দাঁড়ালেও সরকারি দলের সংগঠনের পদে থাকা নেতারা জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি।

পর্যবেক্ষণ মহলের মতে আরও দাবি- একই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন এলাকার বিএনপির জনপ্রতিনিধিরাও পুরোদস্তর জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতারা যেভাবে গরীব অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেভাবে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির দলের নেতাদের মধ্যে দুএকজনকে দেখা গেলেও বাকিদের ছায়াও দেখা যায়নি জনগণের মাঝে। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির যেসব নেতা জনপ্রতিনিধি তারাই কেবল জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

নেতাকর্মীদের সূত্রে, করোনা মহামারিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের অসহায় গরীব দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি দাবি করেছেন- তৈমূর আলম খন্দকার রূপগঞ্জে দুই দফায় ২৫ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও গত ঈদ উল ফিতরে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি প্রান্তিক কৃষকের পাকা ধান কেটে দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানালে তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। বর্তমানে তিনি আরও দাবি করেছেন- জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩০ হাজার গাছের চারা রোপন করবেন। যার মধ্যে প্রায় ৮ হাজার চারা গাছ শেষের দিকে রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।

নারায়ণগঞ্জের দেশব্যাপী আলোচিত আইনজীবী নেতা ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান করোনা মহামারির শুরু থেকেই ২৩ মার্চ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রচারণায় নামেন। সেই সঙ্গে তিনি মাস্ক বিতরণ করেন নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায়। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাওয়ালাদের মাঝে চাল ডাল তেল আলু পিয়াজ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। মহানগরীর সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কয়েক দফায় তিনি খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উল ফিতরে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। বিএনপির নেতাদের মধ্যে তিনিই একমাত্র নেতা যিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে গিয়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে নিজ হাতে গরীব অসহায় মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন। এক টানা তিনি মাসব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করেন। সেই সঙ্গে তিনি সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকাতেও খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। ঈদে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝেও ঈদ উপহার প্রদান করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যেও তিনি সপ্তাহব্যাপী খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবং রান্না করা খাবার বিতরণ ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচি পালন করেন।

একইভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়েও করোনা মহামারির শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নির্দেশনায় লিফলেট বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, জীবানুুনাশক স্প্রে সহ সচেতনতামুলক কর্মসূচিগুলো পালন করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সংক্রমণ ঠেকাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। এসব কাজের সমন্বয় করেন জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সেলিম হোসেন দিপু। পরবর্তীতে আজহারুল ইসলাম মান্নান নিজ হাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। আজহারুল ইসলাম মান্নানের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর মাঝে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। একই সঙ্গে প্রান্তিক কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন নেতাকর্মীরা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমনও করোনা মহামারির শুরু থেকেই লড়াই করেন। শুরুতেই তার নির্দেশনায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাস্ক বিতরণ, লিফলেট বিতরণ, জীবানুনাশক স্প্রে কর্মসূচি সহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। পরবর্তীতে কয়েক দফায় আড়াইহাজারের গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদকে অতিথি করেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের কর্মসূচি পালন করেছিলেন সুমন। একইভাবে প্রান্তিক কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

করোনা মহামারি ভয়াবহ পরিস্থিতির সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের এক হাজার পরিবারের খাদ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। এক সপ্তাহ তিনি এক হাজার পরিবারের খাদ্য সরবরাহ করেন তিনি। পরবর্তীতে তার নির্দেশনায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা যার যার এলাকায় গরীব অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে ২০ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ করেন জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন। উপজেলা যুবদলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকায় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন তিনি। সেই সঙ্গে গরীব অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করেন। একই সঙ্গে যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভুঁইয়াও উপজেলার প্রতিটি এলাকার একেবারে গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। যুবদলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে তিনি এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এদিকে করোনা মহামারিতে ভিন্ন রকম কর্মকান্ডে ব্যাপক প্রসংশা কুড়িয়েছেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। সিদ্ধিরগঞ্জে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এলাকায় টিম গঠন করে মাইকিং করেন। মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। পরবর্তীতে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন সাগর প্রধান। সাগর প্রধানের নির্দেশনায় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। একই সঙ্গে তিনি শিশু খাদ্য ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। প্রতিবন্ধিদের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শুধুমাত্র সাগর প্রধানকেই দেখা গেছে করোনা মহামারিতে ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তিনি নিজ উদ্যোগে মহানগর যুবদলের উদ্যোগেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। রোজায় তিনি ফলফ্রুট বিতরণ করেন।

করোনা যুদ্ধে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতনতামুলক প্রচারণায় ছিলেন সবচেয়ে বেশি মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ ও সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবু। গত ঈদ উল ফিতরের পূর্বে সাহেদ আহমেদ ও মমিনুর রহমান বাবু মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৃথকভাবে গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তারা দুজনই পৃথকভাবে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। সেই সঙ্গে তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে মহানগর ছাত্রদল। সাহেদ আহম্মেদের জন্মদিনেও তিনি গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে নিজের জন্মদিন পালন করেন। একইভাবে মহানগর ছাত্রদলের নির্দেশনায় সহ-সভাপতি রাসেল আহম্মেদও বন্দরের বিভিন্ন এলাকার গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনিও করোনা মহামারিতে গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে তিনি কর্মসূচি পালনের মাধ্যমেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেন।