সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফুল হক ভুঁইয়ার নেতৃত্বে তার নিয়োজিত লোকজনকে দিয়ে জোরপূর্বক স্থাপনা করে ৩ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভুয়া দাতা সাঁজিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করে ওই জমি দাবি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
১০ আগস্ট সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী জমির মালিক শামিমা সুলতানা ঝুনু রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। শামিমা সুলতানা ঝুনু ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম হারুন অর রশিদ ভুঁইয়ার স্ত্রী। বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফুল হক ভুইয়া ও মরহুম হারুন অর রশিদ ভুঁইয়া আপন দুই ভাই।
সংবাদ সম্মেলনে শামিমা সুলতানা ঝুনু অভিযোগ করেন, আমলাবো মৌজার ১০৬নং আরএস খতিয়ান এর আরএস ১৮৪৬ নং দাগের ১৬ শতাংশ জমি রেকর্ডীয় মালিক কোকিলা সুন্দরীর কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে হারুন অর রশিদ ভূইয়া দীর্ঘ দিন ধরে ভোগদখলে ছিলেন। গত ৫ বছর পূর্বে হারুন অর রশিদ ভুইয়া মারা যাওয়ার পর ওই জমির উপর নজর পরে দেবর আরিফুল হক ভুইয়ার। আরিফুল হক ভুইয়ার নামে জমিটি রেজিষ্ট্রি করে দিতে বলা হয় কিন্তু হারুন অর রশিদ ভুইয়ার ওয়ারিশগণ রেজিষ্ট্রি করে দেননি। শামিমা সুলতানা ঝুনু দেশের বাহিরে থাকার সুযোগে এবং জমিটি আত্মসাতের লক্ষ্যে গত দুই বছর আগে নরসিংদী জেলার মাদবদী থানার মাদবদী আনন্দী এলাকার মৃত বিশ্বরূপ দাসের ছেলে সহদেবকে কোকিলা সুন্দরীর নাতি বানিয়ে আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির নামে রেজিষ্ট্রি করে নেয়।
তবে যদিও সংবাদ সম্মেলনে নিজে উপস্থিত হয়ে ভুয়া দাতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহদেব নিজেই।
সহদেব দাবি করেন, সাওঘাট এলাকার বিজয় নামের এক দালাল তাকে ডেকে নিয়ে এসে ১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়। পরে হুমকি-ধামকি দিয়ে কোকিলা সুন্দরীর ভুয়া নাতি সাজিয়ে রূপগঞ্জ সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে একটি দলিল করে নেয়। দলিল নং-৪২১/২০১৮। অথচ সহদেব কোকিলা সুন্দরীর নাতি নয়। প্রকৃত পক্ষে সহদেবের নানির নাম জলকা রানি দাসি।
এদিকে, শামিমা সুলতানা ঝুনু অভিযোগ করে আরো দাবি করেন, কোকিলা সুন্দরীর কাছ থেকে স্বামী হারুন অর রশিদ ভুইয়ার নামে ক্রয় করার পরও যাতে ঝামেলার সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে কোকিলা সুন্দরীর আসল ছেলে মেয়ের কাছ থেকে পুনরায় জমিটি আবার শামিমা সুলতানা ঝুনু নিজের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেন। চেয়ারম্যান আরিফুল হক ভুইয়া তার নিয়োজিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোরপুর্বকভাবে ওই জমিতে টিনের স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে রেখেছে। বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। ইউএনও, এসিল্যান্ড ও ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে গেলে শামিমা সুলতানা ঝুনুর পেছনে সালামত নামের এক বখাটের নেতৃত্বে গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার দাবি করছেন তিনি।
এ ব্যপারে ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অভিযুক্ত আরিফুল হক ভুইয়া বলেন, আমার ভাই হারুন-অর রশিদ ভূঁইয়া মারা যাওয়ার পর ঐ জায়গা তার স্ত্রী জাল দলিল করেছে। সেটা সব জায়গায় প্রমাণ হয়েছে। এটা আমার জায়গাও না। আমি কিছু জানিও না।