সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ধীরে ধীরে তরুণরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। কমিটি গঠনে জট লাগায় এখানে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছেনা। যে কারনে ঘুরে ফিরে আগেরকার নেতারাই নেতৃত্বের হালে এদিক সেদিক হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও পদবিহীন ঝুঁলে আছেন। নারায়ণগঞ্জে একমাত্র ছাত্রলীগের কমিটি নিয়মিত গঠনে প্রক্রিয়া ঠিক থাকলেও জেলা ও মহানগরে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ সহ অন্যান্য সংগঠনের কমিটি গঠনেও লেগেছে সেশন জট। যে কারনে নতুন করে নেতৃত্ব বাড়ছেনা।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারি দলের কোন সংগঠনের পদেই নাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু। তারও পরের কমিটিতে সভাপতি পদে নেতৃত্বে ছিলেন শেখ সাফায়েত আলম সানি ও সেক্রেটারি পদে ছিলেন মিজানুর রহমান সুজন। বর্তমানে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও সানি ও সুুজনকে এখনও কোন দায়িত্ব দেয়া হয়নি। অথচ ছাত্রলীগের তাদের কমিটি দেশব্যাপী উদাহরণ হিসেবে ভুমিকা রেখেছিল।
বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে এহসানুল হাসান নিপুকে সভাপতি ও জিএম আরাফাতকে সেক্রেটারি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি গঠনের কয়েক মাসের মাথায় সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যে ফাটল ধরে। তারা ফতুল্লা থানায় পাল্টাপাল্টি কমিটিও ঘোষণা দেন।
সেই কমিটির মেয়াদের পর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে সানিকে সভাপতি ও সুজনকে সেক্রেটারি করা হয়। এই কমিটি গঠনের পর নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক প্রায় সকল কর্মকান্ডে ব্যাপক ভুমিকা রাখে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড থেকে শুরু করে উন্নয়নমুলক কাজ এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন কর্মকান্ডে সক্রিয় ভুমিকা রাখে সানি সুজনের কমিটি।
ওই সময় তাদের প্রশংসনীয় ভুমিকা দেশব্যাপী আলোচিত হয়। একটা সময় সারাদেশের বিভিন্ন জেলার ছাত্রলীগের কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে কোন না কোন অভিযোগ ওঠলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের নিয়ে দৃশ্যমান কোন অভিযোগ ওঠেনি। টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি জুট সন্ত্রাসী বালু সন্ত্রাসী এর ধরণের কোন একটি ঘটনায়ও সানি ও সুজনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
ওই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লোকাল বাসে চরে সংগঠনের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছেন। শহরের আশপাশের নেতারা পায়ে হেটে চাষাড়া এসে সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থাকা নেতাদের অনেকের পকেটে চা পানের পয়সাও ছিল না। তবুও কেউ বিতর্কিত কোন কর্মকান্ডে অংশ নেননি। দলীয় শীর্ষ নেতাদের সহযোগীতায় ছাত্রলীগের কর্মকান্ড পরিচালনা করেছিল।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে সারাদেশে যখন মাসের পর মাস বাসে অগ্নিসংযোগ পেট্রোল মারা হতো তখন ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার নিরাপত্তা দিতে মাসের পর মাস কাজ করেছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে পাহাড়া দিয়েছিল ছাত্রলীগ। যে সব এলাকায় বাসে পেট্রোল মারা হতো তারা সেদিকে অবস্থান নিতেন। এমন সব হাজারো প্রসংশনীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিল সানি সুজনের ছাত্রলীগের কমিটি।
তারা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিলেও দীর্ঘদিন যাবত পদবিহীন ঝুঁলে আছেন। নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের কমিটি আসবে আসছে করেও হচ্ছেনা। কেউ কেউ জানিয়েছেন এহসানুল হাসান নিপু চলে যেতে পারেন মুল দল আওয়ামীলীগে। যুবলীগের নেতৃত্বে দেখা যেতে পারে সানি সুজনের মত নেতাদের। এমনটা দেখার অপেক্ষায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এই সানি ও সজুনের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন আরো একঝাঁক সাংগঠনিক নেতা যারাও পদবিহীন ঝুঁলে আছেন। রয়েছেন বিভিন্ন থানা এলাকার নেতারাও।