সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মহানগর বিএনপির শীর্ষ পদে প্রায় সকলেই চাচ্ছেন থানা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির হর্তাকর্তা হতে। মহানগর যুবদলের মুলধারার বাহিরে রাজনীতিতে জড়িত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধানের কোন কর্র্তৃত্ব এই কমিটি গঠনে থাকছেন না। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ার বাহিরেই রয়েছেন তিনি। মহানগর যুবদলের সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তুর প্রতিও নারাজ সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ নেতারা। এসব নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জে করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা শিথিল হওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নিমিত্তে কাজ শুরু করেছে মহানগর যুবদল। করোনার পূর্বেই পৃথকভাবে বেশকজন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দাবি করে খসড়া কমিটিও সভাপতির কাছে জমা দিয়েছেন। খসড়া কমিটির বাহিরেও কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে আহ্বায়ক কিংবা সদস্য সচিব হতে লবিং করছেন সভাপতি ও সেক্রেটারির কাছে। কেউ কেউ সভাপতি ও সেক্রেটারি ছাপিয়ে তদবির নিয়ে লবিং করছেন ঢাকায়।
মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের সূত্রে জানাগেছে, মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভের ৫ সদস্য কোন থানা বা অন্য কোন ইউনিট কমিটির নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। এমন নির্দেশনা কেন্দ্রীয় যুবদলের রয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনার অপব্যাখ্যায় মমতাজ উদ্দীন মন্তু দাবি করছেন নিজেই আহ্বায়ক হতে। তার দাবি তিনি নেতৃত্বে আসবেন না তবে কমিটি গঠন করে দিয়ে যাবেন। যদিও তিনি বর্তমানেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি পদেও রয়েছেন।
এর আগে আহ্বায়ক কমিটি তাকে সভাপতি বসায়। ওই কমিটি গঠন নিয়ে মন্তু নিজেই তৎকালীন আহ্বায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে ৫লাখ টাকার লেনদেনের অভিযোগ করেছিলেন মন্তু। এমনকি মন্তুকে গুলি করার চেষ্টাও করেছিলেন বলে মন্তু মিডিয়াতে অভিযোগ করেছিলেন। এমন সব অভিযোগের পরেও মন্তুকেই সভাপতি পদে রাখা নিয়ে মন্তুর অভিযোগ বাস্তবে রূপ নেয়।
পরবর্তীতে আন্দোলন সংগ্রামে মন্তুর কোন সক্রিয়তা দেখা যায়নি। যার ফলশ্রুতিতে আন্দোলন সংগ্রাম চাঙ্গা রাখার জন্য সাগর প্রধানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন খোরশেদ। সেই সময় সাগর প্রধান খুশিতে আত্মহারা হয়ে খোরশেদের নির্দেশনায় আন্দোলন সংগ্রামও করেছেন এবং মন্তু পুরোপুরিভাবে রাজনীতিতে থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।
পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি খোরশেদের সঙ্গে সেক্রেটারি হয়ে আসেন মমতাজ উদ্দীন মন্তু। যে কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু। এই কমিটি গঠনের পর সাগর প্রধান ভিন্ন প্লাটফর্মে থেকে যুবদলের রাজনীতি করছেন এবং শোখন ও রশু নেই যুবদলের রাজনীতিতেই। আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেনকে রাখা হয় সহ-সভাপতি পদে যিনি বর্তমানে শারীরিকভাবে চরম অসুস্থ্য রয়েছেন।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি পদে রয়েছেন জুয়েল প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জুুয়েল রানা। তারাও দুজনই চাচ্ছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্ব। তারা দুজনই মহানগর যুবদলের শীর্ষ পদেও রয়েছেন। আবার কমিটির নেতৃত্ব চাচ্ছেন মহানগর যুবদলের আরেক নেতা ইকবাল হোসেনও।
তবে আলোচনায় সাড়া ফেলেছেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ অপু। যিনি মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। শেখ মোহাম্মদ অপু নিজেকে আহ্বায়ক পদে প্রত্যাশি হিসেবে মহানগর যুবদলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন বলেও জানাগেল। এসব নেতাদের মধ্যে সবাই মন্তুর প্রতি নারাজ। আর সাগর প্রধানের কোন কর্তৃত্ব নেই এই কমিটি গঠনে। সাগর প্রধানকে আমলেই নেয়া হচ্ছেনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায়। উপরোক্ত নেতাদের সমন্বয়ে এবং মতামতেই হতে যাচ্ছে কমিটি। সেক্ষেত্রে আবারো বিদ্রোহী রূপ নিতে পারেন সাগর প্রধান।