চাষাড়ায় বোমা হামলা মামলার অধিকতর তদন্ত চান শামীম ওসমান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনার ১৩ বছর পর আদালতে দাখিল করা চার্জশীটের বিষয়ে এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, চার্জশীট মানি না। চার্জশীটের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চেয়েছেন ওই ঘটনায় আহত এমপি শামীম ওসমান।

৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রথম বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানার আদালতে সাক্ষ্য প্রদান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ কথা জানান শামীম ওসমান। তবে চার্জশীট দাখিলের ৭ বছর পর মামলার সাক্ষ্য দিলেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, ‘ঘটনার পরে আমি সাক্ষ্যতে যে জবানবন্দী দিয়েছিলাম এখন দেখি বিচার চলাকালে সেই কথা কিছুই নাই। আমাদের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। ফলে আমি চাই এ ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী তাদের যেন বিচার হয়। আর যিনি দোষী না তিনি যেন আমার পপ্রতপক্ষ হলেও যেন সাজা ভোগ না করে। আদালত আমার বক্তব্য শুনে কনভেন্স হয়েছেন। আদালত পরে ওই আদালতের এপিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন পিটিশন দেওয়ার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে যে তদন্ত হয়েছে সেই তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার বক্তব্য ঠিকমত তুলে ধরেনি। আমি কোন সমঝোতা করবো না। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিকে বলেছি আমি এ চার্জশীট মানি না।’

এ মামলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভুক্তভোগী তিনজনের একজন নারায়ণগঞ্জের-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, যাকে সাক্ষী দেওয়ার জন্যই তিনবার সমন জারি করেন আদালত। শেষ সমনে গত ২৩ মার্চ সাক্ষ্য দেয়ার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও করোনার জন্য উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে আবারও পিছিয়ে যায় সাক্ষ্য প্রদানের দিন।

সোমবার দুপুরে নির্ধারিত শুনানির সময়ে আদালতে হাজির হন শামীম ওসমান। ওই সময়ে আদালতে মামলার আসামি শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে নিহত যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিডের ভোট ভাই শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লি কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছিল।

তাদের মধ্যে মুফতি হান্নানের একটি মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে। মোরসালিন ও মুত্তাকিন ভারতে পলাতক রয়েছে। আর অভিযুক্তদের মধ্যে কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু ও ওবায়দুল্লাহ রহমান জামিনে আছেন।

প্রসঙ্গত ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে ১৬জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। রাতে পৌনে ৮টার দিকে তখনকার এমপি শামীম ওসমান যখন জনগণের কথা শোনার জন্য সাক্ষাৎ দিচ্ছিলেন ঠিক তখনি বোমা হামলা হয়। সেই হামলায় আওয়ামীলীগের ২০ নেতাকর্মী প্রাণ হারান। গুরুতর আহত হন শামীম ওসমানসহ অর্ধশতাধিক লোক।

চিরতরে পঙ্গত্ববরণ করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলার সভাপতি চন্দন শীল, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রতন দাসসহ আরো অনেকেই।

সেদিনই নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা দুটি মামলা (একটি বিস্ফোরক ও অন্যটি হত্যা) দায়ের করেন।