সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে যুবলীগ নেতা খান মাসুদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ সেক্রেটারি কাউন্সিলর সাইফুদ্দীন মাহামুদ দুলাল প্রধান বাহিনীর মধ্যে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনায় খান মাসুদ অভিযোগ করেছেন দুলাল প্রধানের মাদক ব্যবসায়ী সিকিন্ডেটের লোকজন হামলা করেছে। তবে দুলাল প্রধান উল্টো খান মাসুদের লোকজন আগের রাতেই ডিস লাইন কেটে দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে অভিযোগ ওঠেছে খান মাসুদের বোনের বাড়িতে দুলাল কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় একপক্ষ অপরপক্ষের ড্রেজারে অগ্নিসংযোগ সহ বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালিয়েছে। ওই সময় হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে মহিলা সহ ২ জন জখম হয়েছেন। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
৬ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে বন্দরের খানবাড়ি এলাকায় ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। সংবাদ পেয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনর্চাজ ফখরুদ্দীন ভূঁইয়া সহ তার সঙ্গীয় ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এলাকাবাসী জানান, ক্যাবলটিভি ব্যবসা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় ডিশ ব্যবসায়ী শ্যামল, শাহনেওয়াজ খান, পারভেজ খানের সাথে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু এবং ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের সমর্থকদের মাঝে মনোমালিন্য চলে আসছিল। মুলত বন্দরের হাট ঘাট মাঠ অটো স্টান্ড সহ বিভিন্ন বৈধ অবৈধ সেক্টর তারা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
বন্দর ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাসুদ জানান, শনিবার গভীর রাতে শ্যামল গংয়ের হাসান (২২) ও সাব্বির (২৪) নামের ২ ডিশ কর্মীকে বিন্দুর কর্মীরা তার কাটার অপরাধে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ নিয়ে সকালে উভয় পক্ষের লোকজন থানায় গেলে সহকারী পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) উভয় পক্ষকে মদনপুর ইষ্ট টাউনে তার কার্যালয়ে ডাকেন। শ্যামলের আত্মীয় জেলা যুবলীগ নেতা খান মাসুদ সহ কয়েকজন সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিষয়টি মীমাংসায় বসেন।
যুবলীগ নেতা খান মাসুদ অভিযোগ করেন, যে সকল ব্যবসায়ীরা ৩০ বছর যাবত এালাকায় ক্যাবল ব্যবসা করে আসছেন তাদের পেটে লাথি মারতে দলের অনুপ্রবেশকারীরা ডিশ বাবুর লাইন বন্দরে ঢুকানোর পায়তারা করছে। আমি সার্কের অফিসে থাকাবস্থায় ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভাই মার্ডার মামলার আসামী রিপন প্রধান, সুমন প্রধান, মাদক ব্যবসায়ী কুদ্দুছ, ভাগিনা অপুসহ ৩০/৪০জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তলোয়ার, ছোড়া ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে আমাদো খানবাড়ি প্রবেশ করে কয়েকটি বাড়ি ভাঙ্গচুর করে। এক পর্যায়ে বাঘা ফয়সাল একটি মটর সাইকেল ভাংচুর করে আমার বড় বোন স্বপ্না (৪৫) ও আসিফ (২৫) কে মারধর করে। আমার লোকজন পাল্টা আঘাত করতে চেয়েছিল কিন্তু আমার নির্দেশে কোন কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এমনিতেই দেশের অবস্থা ভাল না। নারায়ণগঞ্জে মসজিদে দূর্ঘটনায় অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। আমার অভিভাবক একেএম শামীম ওসমানের মন এমনিতেই ভাল না। আমাদের সবারই মন খারাপ। আমরা কোন সংঘর্ষ চাই না। যারা বিশৃঙ্খলায় জড়িত তারা আমাদের আ’লীগের লোক নয় তারা লেবাসধারী। আজ আমি যদি তাদের হামলার প্রতিরোধ করতাম কেউ বাসায় সুস্থ্য যেতে পারতনা। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে মামলা করব।
এদিকে সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুলাল প্রধান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার রাতে খান মাসুদের লোক রাজুর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী কবরস্থান রোডে আমার সকল তার এবং অফিস সংলগ্ন মেশিন রুম হতে মেশিন লুট করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন আগে আমার একটি ড্রেজার জ¦ালিয়ে দিয়েছে। পাইপের ক্ষতি সাধন করেছে। এতে প্রয় ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমি মামলা করব। পাতলা রাজুর নেতৃত্বে কিশোর বাহিনী বন্দরে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে ঘুরে বেড়ায়। খান মাসুদের শতাধিক ছেলেরা আমার এলাকার ছেলেদের ওপর হামলা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আমি আমার এলাকার ছেলেদের শান্ত করে ফিরিয়ে আনি। আমি একজন শান্তিপ্রিয় লোক। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এলাকা অশান্ত করতে চাইলে প্রশাসন তার ব্যবস্থা নিবে।
এ ব্যাপরে বন্দর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ফখরুদ্দীন ভূঁইয়া জানান, ডিশ ব্যবসা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যুবলীগ নেতা খান মাসুদ, তার চাচা রোকনউদ্দিন খানের বাড়িতে হামলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা করবেন বলে তিনি জানান।