আবদুল্লাহ আল মামুন, বিশেষ প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতিতে ভবিষৎ ভরসা এখন মাহমুদুর রহমান সুমন। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন পেয়েও নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতে ব্যর্থ হয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। ২০০১ সালের পর সংস্কারবাদীর কারনে আর বিএনপির মনোনয়ন পাননি বিএনপির সাবেক এমপি ও সুমনের চাচা আতাউর রহমান খান আঙ্গুর। বয়সের ভারেও তিনি অনেকটা পিছিয়ে। ফলে রাজনীতিতে এখন তার বিদায় ঘন্টা। জিয়া পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে আর সুবিধা করতে পারবেন না আজাদ। ফলে আড়াইহাজার বিএনপির ভবিষৎ কর্ণধার হিসেবেই থাকছেন মাহমুদুর রহমান সুমন। এমনটাই মনে করছেন আড়াইহাজারের বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। গত জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন খসরু। তার মৃত্যুর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মাহমুদুর রহমান সুমনের উপর দায়িত্ব দেন। মাহমুদুর রহমান সুমন কেন্দ্রীয় যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদেও। তার বাবা এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর উত্তরসূরী হিসেবে নেতাকর্মীরা সুমনকে নিয়ে এগিয়ে আসছিলেন। কিন্তু গত নির্বাচনে প্রথমে তিনজনকে এখানে মনোনিত করা হলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন ভাগিয়ে আনেন আড়াইহাজারে নেতাকর্মী সংকটে থাকা নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ।
অন্যদিকে, বিএনপির একাধিক বারের সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর এখণ বয়সে কুলিয়ে ওঠতে পারছেন না। সেই সঙ্গে ২০০১ সালের পর মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতাকর্মীরাও তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দলের আন্দোলন সংগ্রামেও ছিলেন না। দলের বিরোধীতা করে এক এগারোর সময় হয়েছিলেন সংস্কারবাদী। মুলধারায় ফিরলেও সেই তমকা মুছতে পারেননি আঙ্গুর। যে কারনে নেতাকর্মীরা তাকে মেনে নিতে পারেনি।
এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেলেও আড়াইহাজারের বিএনপি নেতাকর্মীদের তার পক্ষে নামাতে পারেননি। কারন তার সঙ্গে আড়াইহাজার বিএনপির উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মীরা ছিলেন না। তাকে দলের মনোনিত হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে লোক দেখানো ফটোসেশন করলেও নির্বাচনের পর কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না আজাদ। এমনকি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গেলেও তার মুক্তির দাবিতে কোন ভুমিকা রাখেননি। নিজেকে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ কর্মী পরিচয় দিয়ে আড়াইহাজারের বাহিরের নেতাকর্মীদের বগল বন্দি করেছেন। জেলার বিভিন্ন থানার নেতাকর্মীদের নিয়ে আড়াইহাজারে শোডাউন করেছেন। জেলার অন্যান্য থানার নেতারা পদ পদবীর লোভে দলের কর্মকান্ড বাদ দিয়ে আজাদের পিছনে ছুটেছিলেন। কিন্তু দলের কর্মকান্ডে ছিলেন না। আড়াইহাজারের রাজনীতিতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এখন তিনি আড়াইহাজারে নেই। ফলে আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরা এখন কর্ণধার হিসেবে দেখছেন সুমনকেই।