সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পৌরসভার গত নির্বাচনে জেলার প্রভাবশালী দুই এমপির দূরত্বের কারনে সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও দুইভাগে বিভক্তি হয়ে যায়। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বীর বিরোধীতা করে আওয়ামীলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান ভুঁইয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
ওই নির্বাচনে ভিতরগতভাবে স্থানীয় জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরাও ছিলেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে। তবে এবার সেই রাজনৈতিক বিরোধ নেই। জেলার প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর মধ্যে বর্তমানে সেই দূরত্ব নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে আবারো অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বীই হতে যাচ্ছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন- গত নির্বাচনে জেলার প্রভাবশালী দুই এমপি সরাসরি পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান না দিলেও নির্বাচনে দলীয় প্রতীক পাওয়ার আগেই পৌরসভার আমিনপুর মাঠে বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমানের হাতেই নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছিলেন জেলার প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান ও স্থানীয় জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
কিন্তু আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর কঠোর ভুমিকায় নৌকা প্রতীক ওঠে জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বীর হাতে। যে কারনে ওই নির্বাচনে প্রভাবশালী এমপিদের রাজনৈতিক লড়াইয়ে পরিনত হয়েছিল। যে কারনে নির্বাচনে জয় পরাজয় রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেছিল। জেলার শীর্ষ পর্যায়ের আওয়ামীলীগ নেতাদের রাজনৈতিক লড়াইয়ের কারনে নৌকার প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও সেটা হয়ে ওঠেনি বলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামত।
আরও জানাগেছে, ওই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের অনুগামী নেতাকর্মীরাও নৌকার পক্ষে জোড়ালোভাবে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন না। তবে এবার এটি ফজলে রাব্বীর সঙ্গে কালামের সু-সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে জেলার দুই প্রভাবশালী এমপির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে যাচ্ছেন ফজলে রাব্বী। সেই সঙ্গে তার জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠজন কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সদস্য আবু নাঈম ইকবাল যিনি এটি ফজলে রাব্বীর ভাই। তবে নির্বাচনের আগের দিনেও নানা নাটকীয়তা হতে পারে সেটা সময়ের ব্যাপার। রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নেই বলেও নেতাকর্মীদের মতামত।
১২ সেপ্টেম্বর পৌর আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীদের এক কর্মী সভায় সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত মনোনয়ন প্রত্যাশি গাজী মজিবুর রহমানকে সমর্থনের যে খবর বেরিয়েছে সেটা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন কায়সার হাসনাত। কায়সার হাসনাত দাবি করেছেন- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন তিনি সেই প্রার্থীর পক্ষে জোড়ালোভাবেই কাজ করবেন। এর আগে তার ব্যক্তিগত কোন সমর্থন বা প্রার্থী নেই। দলীয় প্রার্থীই হবেন তার প্রার্থী।
অন্যদিকে জানাগেছে, পৌর নির্বাচনে ইতিমধ্যে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসেবে মাঠে নেমেছেন গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী এটি ফজলে রাব্বী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছগীর আহমেদ ও কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন সুলতানা ঝরা। তারাও নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে নেমেছেন। আশা ছাড়ছেন না তারাও। মাস ছয়েক পূর্বে বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান বলেছিলেন তিনি আবারো নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। তবে তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সে রকম কোন ঘোষণা দেননি। নির্বাচনী মাঠেও তিনি এখনও পর্যন্ত নেই। তিনি শারীরিকভাবে পূর্বের চেয়ে আরো অসুস্থ্য বলে জানাগেল।