সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঙ্গা হতে যাচ্ছে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। একই সঙ্গে সেখানে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাও নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জয়ের লক্ষ্য নিয়েই দাউদপুর ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে যাচ্ছে বিএনপি। জেলা ও উপজেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সরাসরি নির্বাচনকে মনিটরিং করবেন। বিএনপি মনে করছে- জয়ী হতে ধানের শীষ প্রতীকের ভোট রয়েছে। তাই নির্বাচনকে যতটা প্রভাবমুক্ত করা যাবে ততটাই ফলাফল বিএনপির দিকে আসবে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শরীফ আহমেদ টুটুলও নির্বাচনে আগ্রহী। তবে তিনি বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন দাবি করলেও স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন টুটুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। যার ফলে বিএনপির প্রার্থী হতে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির বিগত কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার।
মনোনয়ন প্রত্যাশি অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার সম্পর্কে জানাগেছে, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য। ২০০৯ সালে গঠিত রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন আজোবধি। যেখানে গত ১৪ বছরে বিএনপির রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের আইনি সেবা দিয়ে গেছেন।
তিনি ১৯৮৮ সালে ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করার সময় থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তৎকালীন ঢাকসুর ভিপি বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে রাজনীতিতে সক্রিয় কর্মী ছিলেন হেলাল উদ্দীন সরকার। ওই সময় ঢাকা কলেজের ভিপি ছিলেন মীর সরাফত আলী সফু। পরবর্তীতে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন বিএনপির এই নেতা।
এদিকে দাউদপুর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা ভূমিদস্যূতা ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের মাধ্যমে আদর্শ ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছেন পুরোদমে। প্রায় কয়েক বছর ধরেই তিনি ইউনিয়নবাসীর সুখে দুঃখে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির একজন ক্লিন ইমেজের আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার বিএনপির রাজনীতিতেও রয়েছে তার ক্লিন ইমেজ। মিষ্টভাষী সদা হাস্যোজ্জল এই বিএনপি নেতা জনগণের সেবার ভ্রত নিয়ে বিএনপির কঠিন সময়েও ধানের শীষ প্রতীকের ঝান্ডা তুলে ধরতে যাচ্ছেন। যে কারনে এবারের নির্বাচনে তার হাতেই ধানের শীষ প্রতীকের ঝান্ডা তুলে দিতে যাচ্ছে বিএনপি। একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে জয়ের আশা নিয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছেন হেলাল উদ্দীন সরকার।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- এসব কারনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনের সুদৃষ্টিও রয়েছে হেলাল উদ্দীন সরকারের প্রতি।
এ ছাড়াও রূপগঞ্জের সন্তান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদের সুদৃষ্টিও এই নেতার দিকে। যে কারনে দাউদপুর ইউনিয়নে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে হেলাল উদ্দীন সরকারকে মনোনয়ন দেয়া হলে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। সেই জয়ের বিষয়েও নেতাকর্মীরা আশাবাদী।
নির্বাচনের বিষয়ে এক সাক্ষাতকারে অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার বলেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী। দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই আছি এবং থাকবো। দলের সকল সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। দলের কাছে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন চাইবো এবং আশা করি দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে। কারন আমি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইউনিয়নবাসীর পাশে আছি। আমাকে দল মনোনয়ন দিলে ধানের শীষ প্রতীকের সম্মান করবো এবং জয়ের জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমি নির্বাচনে করবো।
তিনি আরও বলেন, আমি দাউদপুর ইউনিয়নকে আদর্শ ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভূমিদস্যূতা ও মাদক। আমি চেয়ারম্যান হলে গরীব অসহায় মানুষের জমি দখলবাজি করতে দিব না। কোন ভূমিদস্যূকে ছাড় দিব না। মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোন আপোষ করবো না।
এই নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি প্রার্থী পুরোদমে আলোচনায় ওঠেছেন। নির্বাচনী মাঠেও নেমে গেছেন। তবে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নাম ওঠেছে অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার। যদিও বিএনপি নেতা শরীফ আহমেদ টুটুল বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন দাবি করলেও কেউ কেউ জানিয়েছেন তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন। যে কারনে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের প্রথম পছন্দ হেলাল উদ্দীন সরকার।
আগামী ২০ অক্টোবর রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্টিত হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর রবিবার নির্বাচন কমিশন এর তফসিল ঘোষণা করে। নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার। মনোনয়ণ পত্র বাছাই ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩অক্টোবর শনিবার। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ৪অক্টোবর। ভোট গ্রহণ ২০অক্টোবর মঙ্গলবার।
এখানে আরও জানাগেছে, দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদে সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৪ সালে। ওই নির্বাচনে নুরুল ইসলাম বিজয়ী হন। এর আগে চেয়ারম্যান ছিলেন বিএনপি নেতা শরীফ আহমেদ টুটুল। তিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার।