সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সরকারি দলের এক নেতার দেয়া ‘বীর বাহাদুর’ খেতাব পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন শুরু করেছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি খোরশেদ। এর আগেও তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধরের নজির সৃষ্টি করেছিলেন।
মোশারফ হোসেনকে সভাপতি ও শাহআলম মুকুলকে সেক্রেটারি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি গঠনের পর বন্দর থানা যুবদলের নেতা মহিউদ্দীন শিশিরকে মারধর করেছিলেন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার লোকজন।
এমন অভিযোগে সেই সময় বন্দরে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও খোরশেদের কুশপুত্তলিকাহ করেছিলেন বন্দর বিএনপির সেক্রেটারি মাজহারুল হক হিরণ ও কেন্দ্রীয় ওলামাদল নেতা মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু। এবার মহানগর যুবদলের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে মারধর করার অভিযোগ ওঠেছে খোরশেদ ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ-সরকারি দলের এমপিদের খ্যাতাব ও বাহবাহ পেয়ে নিজেকে আকাশচুম্ভি মনে করছেন তিনি।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জরুল আলম মুছাকে বাড়িতে ডেকে এনে সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ যুবদলের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ফরম বিতরণের কথা বলে মঞ্জুরুল আলম মুসাকে নিজ বাড়িতে ডেকে আনেন খোরশেদ এবং সেখানে পরিবহন সন্ত্রাসী বোরহান সহ খোরশেদ বাহিনী হামলা চালিয়ে নিরিহ যুবদল নেতা মুসাকে আহত করে এবং ভবিষ্যতে খোরশেদের বিরোধীতা করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে বলে জানা যায়।
সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে একের পর এক নিয়ম বহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা অভিযোগ সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে। এর জন্যে গত কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সভাপতি সেক্রেটারীর কাছেও তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। যুবদলের সভাপতি খোরশেদ গত ৬মাসে যুবদলের ব্যানারে একটি কর্মসূচিও পালন করেননি বরং টিম খোরশেদ নাম দিয়ে নিজেকে হাইলাইট করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
এর কারনে কেন্দ্রীয় যুবদল নেতারা তার কাছে কৈফিয়ত চাইলে তিনি তার সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও যুবদলের ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্যতার কোন মূল্যায়ন না করে তার অনুগতদের দিয়ে কমিটি সাজানোর পায়তারা করছেন বলেও কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ রয়েছে খোরশেদের বিরুদ্ধে। এ কারনে কেন্দ্রে জমা দেয়া কমিটির তালিকা বাতিল করে দেয়া হয় এবং পুনরায় কেন্দ্র থেকে ফরম দেয়া হয় সকল পদ প্রার্থীদের মাঝে বিতরণ করার জন্রে এবং নির্দেশনা দেয়া হয় সুপার ফাইভের সকলকে নিয়ে সকলের সাথে আলোচনা করে তা বিতরণের জন্যে। কিন্তু এবারেও কেন্দ্রের নির্দেশনার কোন তোয়াক্কাই না করে খোরশেদ একাই সেই ফরম বিতরণের উদ্যোগ নেন মঙ্গলবার তার নিজ বাড়িতে।
এ বিষয়ে সুপার ফাইভের তিনজন সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধানের সাথে কোন আলোচনাই করেননি।
ফরম বিতরণের জন্যে নিজ অনুগত নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন খোরশেদ। এ অনুষ্ঠানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশি মঞ্জুরুল আলম মুসাকে ডেকে আনেন খোরশেদ। সেখানে উপস্থিত বোরহান সহ ৫/৬ জন অতর্কিত হামলা চালায় মুসার উপরে। এ সময় সভাপতি খোরশেদ সেখানে উপস্থিত থাকলেও তিনি নিরব ভূমিকা পালন করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী যুবদল নেতা মঞ্জুরুল আলম মুসা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের আহবায়ক প্রার্থী। দীর্ঘদিন যাবত দলের জন্যে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ফলে মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভের তিনজনই আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু সভাপতি খোরশেদ তার অনুগত লোককে সভাপতি বানানোর জন্যে আমাকে এ পদ থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার তিনি ফরম বিতরণের আয়োজন করেছেন কিন্তু সেখানে সুপার ফাইভের কেউ উপস্থিত ছিলেন না অথচ কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া ছিলো সুপার ফাইভের সাথে আলোচনা করেই এবং তাদেরকে নিয়েই ফরম বিতরণ কার্য়ক্রম পরিচালনার জন্যে। আমাকে যেতে বলা হলে যাই এবং আমার উপর হামলা চালানো হয়। আমি কেন্দ্রীয় যুবদলের কাছে এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি মিডিয়াতে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।