সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
ছাত্রলীগের একজন তৃনমূল থেকে ওঠে আসা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া। আওয়ামীলীগ পরিবারের এই সন্তান এখন নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রয়েছেন তিনি সমিতির আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে। এর আগেও তিনি কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত হন। এখন স্বপ্ন দেখছেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে জনগণের জন্য কাজ করার। তার স্বপ্ন রূপগঞ্জের মানুষের সেবক হতে চান। তবে এসব স্বপ্নের মাঝেও রয়েছে তার কঠোর পরিশ্রম। একজন নম্র ভদ্র সদাচারী আইনজীবী তীল তীল করে রাজনীতিতে ওঠে আসছেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে একমাত্র মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) পাট ও বস্ত্র মন্তীর সুদৃষ্টি অর্জন করেছেন স্বপন ভুইয়া।
জানাগেছে, ১৯৯৭ সালে রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া। ওই সময় ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে বেশ আলোচিত ছিলেন তিনি। তিনি মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের জিএস প্রার্থীও ছিলেন। তবে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার কারনে নির্বাচনে তিনি দাড়াননি। তবে পদে না আসলেও তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন অগ্রভাগে। নারায়ণগঞ্জ থেকে এবার একমাত্র মন্ত্রীত্ব পাওয়া পাট ও বস্ত্রী মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর (বীর প্রতীক) এর বিশ্বস্থ কর্মী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের এই নম্র ভদ্র সদাচারী আইনজীবী নেতা ২০০১ সালের পর জোট সরকার আমলে মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। তারপর রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি নির্বাচিত হন। তার কয়েক দিন পর রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে তিনি সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৫ জনের কমিটিতে তিনি এই পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই সময় তিনি ছাত্রলীগের এই শীর্ষ পদে থেকে পুরো উপজেলায় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেন। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় গিয়ে কমিটি গঠনে কাজ করেন। যার ফলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হতে আহ্বানও রাখেন। কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি হলে তিনিই ওই সময় সভাপতি নির্বাচিত হতেন। যা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও বেশ আলোচিত ছিলেন তিনি। তবে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের বয়স ৩১ নির্ধারণ করায় তিনি আর সেই পদে প্রার্থী হতে পারেননি।
২০১০ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে আইনজীবী হিসেবে সনদ লাভ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া। এর আগে তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি পুরোদমে আইন পেশায় মনোযোগী হন। ভার্সিটি জীবনেও তিনি ভার্সিটিতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আইন পেশায় এসে তিনি ২০১৫ সালের দিকে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের রূপগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানেও তিনি একই পদে বহাল রয়েছেন। এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও জানাগেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালিত আওয়ামীলীগ পরিবারের এই সন্তান যার বাবা আফজাল হোসেন ভূঁইয়া ছিলেন গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। প্রয়াত আফজাল হোসেন ভূঁইয়া মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হিসেবে জনগণের সেবা করেছেন। বর্তমানে মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়ার ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম দুলাল মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের জিএস। আপন বড় ভাই খোকন ভূঁইয়া আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের রূপগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি। এছাড়াও আরেক ছোট ভাই আবু ভূঁইয়া মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত।
এছাড়াও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে আইনজীবী সমিতির কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত হন। নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় এখন সদাচারী নম্র ভদ্র সহজ সরল আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট স্বপন ভূঁইয়া একই সঙ্গে রূপগঞ্জের সামাজিক কর্মকান্ডেও সক্রিয়। রয়েছেন রূপগঞ্জের স্থানীয় অনেষা জামে মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে। সহযোগীতা করে আসছিলেন ছোট ছোট বিদ্যালয়ের অনেক কর্মকান্ডেও। রয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও। তিনি বর্তমানে রূপগঞ্জ শিল্পগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সভাপতির পদেও রয়েছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জবাসীর সেবক হতে চান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, আমার বাবা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার (সদস্য) ছিলেন। তিনি মানুষের সেবা করেছেন। বাবার মত আমিও মানুষের সেবক হতে চাই। আমি চাই রূপগঞ্জবাসীর সেবক হতে। সেই প্রত্যাশা নিয়েই আমি আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন সম্ভাব্য প্রার্থী।
১০ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ নতুন কোর্ট এলাকায় তার নিজ চেম্বারে অনলাইন নিউজ পোর্টাল সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে রূপগঞ্জবাসীর জন্য কি কি করতে চান তা নিয়ে খোলা মেলা আলোচনায় এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া। একই সঙ্গে রূপগঞ্জের মানুষের জন্য কি কি উন্নয়ন তিনি করতে চান তারও বিস্তারিত স্বপ্নের কথা বলেছেন। বলেছেন মাদক, বাল্য বিবাহ ও ধর্ষণের মত ঘটনায় তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সোচ্চার ও কঠোর থাকবেন।
আপনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দাড়াতে চান এর মুল উদ্দেশ্য কি এবং কেন জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া বলেন, আমি তৃনমূল থেকে রাজনীতি করে আসছি। আমার শুরু ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে। আমি বিশ্ব মানবতার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জননেত্রী শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছেন, আমি সেই জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্যে একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে রাস্তা ঘাট ব্রীজ কালভার্ড মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে চাই। রূপগঞ্জবাসীর সেবক হতে চাই।
এই আইনজীবী নেতা আরও বলেন, রূপগঞ্জ ঢাকার পার্শ্ববতী এলাকা। এখানে শতভাগ শিক্ষিত সমাজের খুব প্রয়োজন। শিক্ষাখাতে আমি এখানে ছোট ছোট সমস্যাগুলো নিরসন করে শতভাগ উন্নতি দেখতে চাই। গরীব অসহায় মানুষ যাতে ছোট ছোট সমস্যাগুলো থেকে রেহাই পায় সেদিকে আমি কাজ করব। তাদের সচেতনতা ও সহযোগীতা করব। মোট কথা উপজেলা পরিষদ থেকে যা যা করণীয় কাজ করব। কারন একটি সমাজে শিক্ষিত সমাজ থাকলে ওই সমাজটি বেশি এগিয়ে যায়।
সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আমাদের রূপগঞ্জেও মাদকের সমস্যা রয়েছে। আমাদের মাননীয় পাট ও বস্ত্র গোলাম দস্তগী গাজী (বীর প্রতীক) এমপি এর নির্দেশে মাদক নির্মূলে কাজ করব। রাস্তা ঘাট মসজিদ মাদ্রাসা স্কুল সহ সামাজিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করব। একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের যেসব কার্যক্রম রয়েছে আমি শতভাগ করার চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ। আমাকে নির্বাচিত করা হলে আমি সেভাবেই কাজ করব।
তিনি আরেক প্রশ্নে বলেন, আমি রূপগঞ্জের মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। আমার প্রধান লক্ষ্য হলো আমার বাবাও মানুষের সেবা করে গেছেন। আমিও রূপগঞ্জবাসীর সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। আমার বাবা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ছিলেন। বাবা সারাজীবন মানুষের সেবা করে গেছেন। আমিও বাবার মত সেবক হিসেবে কাজ করব।
তিনি নারী উন্নয়নের বিষয়ে বলেন, বাল্য বিবাহ বন্ধে কঠোরভাবে কাজ করব। এছাড়াও নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের মত ঘটনায় আমি কঠোর অবস্থানে থাকবো। আমি একজন আইনজীবী হিসেবে যেভাবে শতভাগ কঠোর থাকা যায় সেভাবেই আমি এসব বিষয়ে কঠোর থাকবো। নারীদের শিক্ষিত করতে আমি কাজ করব। শিক্ষাখাতে এখন সরকার সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। আমি নারীদের অন্যান্য সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করব। যেখানে বখাটেদের ইভটিজিং এর কারনে নারীরা লেখাপড়া থেকে পিছিয়ে যায়। আর্থিক সংকটে অভাবে অনটনে অনেক মেধাবী যেনো ঝড়েনা যায় এসব বিষয়েও কাজ করব। নারীর নিরাপত্তায় কাজ করব। বিশেষ করে মাদক, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান থাকবে। উপজেলা পরিষদ থেকে নারীদের জন্য যা যা করণীয় আমি শতভাগ কাজ করব ইনশাহআল্লাহ।