সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন দুটি থানা যুবদলের দুই সেক্রেটারি বাকযুদ্ধে নেমেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি জুয়েল প্রধান বন্দর থানার একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এবার জুয়েল প্রধানের ওই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন বন্দর থানা যুবদলের সেক্রেটারি আহাম্মদ আলী।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনকল্পে গত ১৫সেপ্টেম্বর শহরের মাসদাইর এলাকায় মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাসায় যুবদলের তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করা হয়। এরপর ১৭সেপ্টেম্বর বন্দরে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেন সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু।
এই কর্মসূচির পর ১৮সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে ফরম বিতরণ করেন খোরশেদ অনুগামীরা যেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ অপু এবং সভাপতিত্ব করেন মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি জুয়েল প্রধান। এই অনুষ্ঠানটি কোন যুবদলের অনুষ্ঠান ছিল না বলে মন্তব্য করে মমতাজ উদ্দীন মন্তু বলেছেন, ‘সেটা ছিল মাদকসেবীদের মিলন মেলা। মঞ্চের ৭ জনের মধ্যে ৬ জনই ছিল মাদকসেবী।’
২১সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ১০নং ওয়ার্ডের লক্ষী নারায়ণ এলাকায় যুবদলের শতশত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ১০টি ওয়ার্ডের যুবদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মাঝে এসব তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন মমতাজ উদ্দীন মন্তু।
তিনি মন্তব্য করেছেন, কেন্দ্রীয় যুবদল নির্দেশনা দিয়েছে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করতে। অথচ ১৮সেপ্টেম্বর তারিখে সিদ্ধিরগঞ্জে যে প্রোগ্রাম করা হলো সেখানে ব্যানারে লেখা ছিল সদস্য ফরম বিতরণ! আসলে ওটা কোন যুবদলের প্রোগ্রাম ছিল না। ওটা ছিল মাদকসেবীদের মিলন মেলা। ছবিতে দেখেছি মঞ্চে বসা ৭ জনের মধ্যে ৬জনই মাদকসেবী।
সোমবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাগর প্রধানের সভাপতিত্বে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন মন্তু এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা, মহানগর যুবদল ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জরুল হক মুছা, মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি ও বন্দর থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী, মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি নাজমুুল হক রানা।
এর আগে গত ১৭সেপ্টেম্বর বিকেলে বন্দরের কবিলের মোড় এলাকায় মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হক রানার বাড়িতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন বন্দর যুবদলের আওতাধীন ৯টি ওয়ার্ড যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তু ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, সহ-সভাপতি নাজমুল হক রানা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক মুছা।
এখানে উল্লেখ্যযে, সর্বপ্রথম গত ১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকায় মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাসায় তার অনুগামী নেতাকর্মীদের নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের বিষয়ে সুপার ফাইভের তিন নেতা মমতাজ উদ্দীন মন্তু, মনোয়ার হোসেন শোখন ও সাগর প্রধান সহ অনেককেই জানানো হয়নি। ওইদিন সেখানে গেলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জরুল হক মুছার উপর হামলা করে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠেছে খোরশেদের বিরুদ্ধে।
পরবর্তীতে মুলত এসব বিষয়ের কাউন্টার দিতে ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের ৮নং ওয়ার্ডের এনায়েতনগর এলাকায় থানা যুবদলের আয়োজনে প্রতিটি ওয়ার্ডের যুবদলের শীর্ষ নেতাদের হাতে তথ্য সংগ্রহ ফরম তুলে দেন মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রশিদুর রহমান রশু।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি জুয়েল প্রধান বন্দরে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণের বিষয়ে সুপার ফাইভের তিন নেতার কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, বন্দরে কতিপয় কিছু লোকজন নিয়ে সেখানে ফরম বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু যারা মুলধারার রাজনীতি করেন তারাই ছিলেন না। ভাসমান লোকজন নিয়ে ফরম বিতরণ করা হয়েছে। মন্তু যুবদলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন তিনি দলের শৃঙ্খলা ফিরাতে পারেন না। তিনি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় না। তিনি ভয় পায়। কারন কি?
২১ সেপ্টেম্বর সোমবার সিদ্ধিরগঞ্জের অনুষ্ঠানে বন্দর থানা যুবদলের সেক্রেটারি আহাম্মদ আলী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বন্দরে আমরা তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেছিলাম। আপনাদের সেক্রেটারি (জুয়েল প্রধান) বলেছেন আমরা নাকি বন্দরে ভাসমান লোকজন নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেছি। আমরা বিএনপির পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করি। আমি বন্দর থানা যুবদলের সেক্রেটারি, তিনিও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি। তাহলে আমি যদি ভাসমান হই তাহলে তিনিও ভাসমান।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের সমালোচনা করে আহাম্মদ আলী বলেন, আমরা কথায় কথায় বলি গণতন্ত্র চাই। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করি, রাজপথে রক্ত ঝড়াই। গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার করি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য সরকারের সমালোচনা করি। কিন্তু গণতন্ত্র পেতে হলে সবার আগে আমাদের দলেও গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। সভাপতির (খোরশেদ) কাছে গণতন্ত্র নেই। যুবদলে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। যুবদলকে সভাপতি একনায়কতন্ত্র করে রেখেছেন। আমরা দলে গণতন্ত্র চাই। সভাপতি স্বৈরতন্ত্র করে রেখেছেন। দেশে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে নিজেদেরকেও গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে।