সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আওতাধীন বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারন বিএনপির মুলদলের শীর্ষ পদে থেকেও বন্দর উপজেলা যুবদলের নেতৃত্ব পেতে দৌড়যাপ করছেন বিএনপির মুলদলের বেশকজন নেতা। যাদের মধ্যে অন্যতম মনিরুল ইসলাম মনু ও মহিউদ্দীন শিশির। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে প্রায় ১১ বছর পূর্বে বন্দর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন এই দুই নেতা। কিন্তু ১১ বছর পরেও তারা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন। যে কারনে যুবদলের রাজনীতিতে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় যুবদলের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে যে, যারা মুলদলের কোন পদে থাকবেন তারা যুবদলের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের শীর্ষ নেতাদের ভুমিকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদলের সেই নির্দেশনাটি তারা মানবেন কিনা। কারন মনিরুল ইসলাম মনু ও মহিউদ্দীন শিশির বন্দর উপজেলা যুবদলের নেতৃত্বে ভাগিয়ে নিতে জোড় লবিং তদবির অব্যাহত রেখেছেন। জেলা যুবদলের শীর্ষ নেতাদের ম্যানেজ করারও চেষ্টা চলছে বলেও জানাগেছে বিভিন্ন সূত্রে। এতে নেতৃত্ব প্রত্যাশি রাজপথের সক্রিয় উদীয়মান নেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বাড়ছে।
জানাগেছে, এক সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দর থানাধীন সিটি কর্পোরেশনের বাহিরের ৫টি ইউনিয়ন জোর করেই নিয়ন্ত্রণ করতো মহানগর যুবদল। সিটি কর্পোরেশনের এলাকা নিয়ে বন্দর থানা কমিটি ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটিও দিয়েছিল মহানগর যুবদল। কিন্তু সম্প্রতি ওই ৫টি ইউনিয়ন জেলা যুবদলের আওতাধীন বহাল থাকার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল।
ওই ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে প্রায় ৮ বছর পূর্বে তৎকালীন মহানগর যুবদলের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন সময়ে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হোন মনিরুল ইসলাম মনু ও সেক্রেটারি হোন শহিদুল ইসলাম রিপন। এ ছাড়াও সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ খান, মোহাম্মদ শাহিন আহম্মেদ সহ বেশকজন দায়িত্ব পালন করে আসছিল।
২০১২ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তৎকালীন সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সেক্রেটারি শাহআলম মুকুলের সময়ে বন্দরের ওই ৫টি ইউনিয়ন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ঢাকার একটি কর্মসূচিতে বন্দর উপজেলা যুবদলের ব্যানারে মহিউদ্দীন শিশির কর্মসূচি পালন করতে গেলে খোরশেদ বাহিনীর লোকজনের হামলার শিকার হন মহিউদ্দীন শিশির। এরপর ৫টি ইউনিয়ন মুলত ভয়ে মহানগর যুবদলকে গচ্ছা দেন মোশারফ হোসেন ও শাহআলম মুকুল। কিন্তু জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সেক্রেটারি গোলাম ফারুক খোকন ৫টি ইউনিয়ন নিজেদের দখলে নেন।
এদিকে বন্দর উপজেলায় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সেক্রেটারি গোলাম ফারুক খোকন। এখানকার নেতৃত্ব পেতে যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশিরা যে যার মত করে জেলা যুবদলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ লবিং করছেন। একই সঙ্গে কেউ কেউ জেলা যুবদল ছাপিয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সঙ্গেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন। এ নিয়ে যুবদলের রাজনীতিতে চাঙ্গা ভাব ফিরে আসলেও হতাশায় পড়েছেন বিএনপির মুলদলের শীর্ষ নেতাদের দৌড়যাপ ও তদবিরের কারেন।
কারন হিসেবে জানাগেছে, বন্দর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম মনু ও মহিউদ্দীন শিশির। প্রায় দুই যুগ পূর্বে বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে অধিষ্ট হয়েছিলেন মহিউদ্দীন শিশির। প্রায় ৮ বছর পূর্বে বন্দর উপজেলা যুবদলের সভাপতি হন মনিরুল ইসলাম মনু। তারা থানা বিএনপির শীর্ষ পদ ছাড়াও মহানগর বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদেও রয়েছেন। যেখানে মহিউদ্দীন শিশির মহানগর বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং মনিরুল ইসলাম মনু মহানগর বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন। তারা মুলদলে থেকেও এখন বন্দর উপজেলা যুবদলের নেতৃত্ব পেতে দৌড়যাপ করছেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন তারা বিশেষ সুবিধা নিয়ে জেলার নেতাদের পেছনে ঘুরঘুুর করছেন জেলার নেতাদের ম্যানেজ করার জন্য।
কিন্তু যুবদল নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় টিমের দল নেতা জাকির হোসেন নান্নু সাফ নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, যারা মুলদলের রাজনীতিতে থাকবে তাদেরকে যুবদলের নেতৃত্বে রাখা যাবে না।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাদের দুজনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।