সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহরিয়া রেজা হিমেল ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে একটি অসহায় পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ ওঠেছে। হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছে পরিবারটি।
গত ৪অক্টোবর রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে নির্যাতিত একটি পরিবারের সদস্যরা। এর আগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয় নির্যাতিত হত দরিদ্র পরিবারটি। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন রিকশা গেরেজ মাহজন শফি প্রধান, তার স্ত্রী ও তিন ছেলে সন্তান।
তথ্য মতে, রাস্তায় রিক্সা রাখাকে কেন্দ্র করে হতদরিদ্র এক পরিবারকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করায় ছাত্রলীগ নেতার চাচা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলাটি তুলে নিতে হুমকি দিয়ে ব্যর্থ হয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার হিমেল ফতুল্লা মডেল থানায় মিথ্যা অভিযোগ এনে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এতে ছাত্রলীগ নেতার চাচা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার না করায় এক নারী দিয়ে মিথ্যা গণধর্ষণের অভিযোগ এনে আদালতে আরেকটি পিটিশন মামলা দায়ের করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়। ধর্ষণের এ মামলা নারায়ণগঞ্জ পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ঘটনায় হতদরিদ্র ওই পরিবারটি মানসিক ও পারিবারিক দুশ্চিন্তায় থেকে অবশেষে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে ছাত্রলীগ নেতা হিমেল তার চাচা মজিবুর ও তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
শফি প্রধান অভিযোগ করে বলেন, সস্তাপুর এলাকায় আমার গ্যারেজের সামনে রাস্তায় এক চালক রিক্সা রেখে গ্যারেজে আসে। এসময় ছাত্রলীগ নেতা হিমেলের চাচা মজিবুর ও তার লোকজন যেতে সমস্যা হওয়ায় আমার তিনটি সন্তানের সামনে আমাকে এলোপাথারী মারধর করে। এতে আমার ছেলেরা আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। তখন মজিবুর তার লোকজন দিয়ে আমার তিন ছেলেকে গলায় ছুরি ধরে রাখে। ওই সময় পার্শ্ববর্তী সজল সহ কয়েকজন এগিয়ে এসে আমাকে তাদের কাছ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এতে সজলসহ কয়েকজনকে এলোপাথারী মারধর করে। এক পর্যায়ে সজলের একটি আঙ্গুল কোপ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং আরো একজনকে কুপিয়ে তারা চলে যায়।
এঘটনায় আমার ছেলে বাদল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় হিমেলের চাচা জুয়েল ও তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তুলে নিতে হিমেল তার চাচা মজিবুর, জুয়েল নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে শফির পরিবারকে। এক পর্যায়ে মজিবুর তার সহযোগি আনোয়ারকে দিয়ে কয়েকজনকে আমার গ্যারেজে পাঠায়। তারা এসেই আবারো মারধর করে হুমকি দিয়ে যায়। মামলা না উঠালে একাধিক মামলা দিয়ে আমাদের এলাকা ছাড়া করবে। বিষয়টি ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলামকে জানাই। এতে হিমেল ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কর্মচারীকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানায় আমার ছেলে বাদলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মারধরের মামলা করেছেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, তারপরও আমার ছেলে বাদল মামলা প্রত্যাহার করেনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিমাংসার প্রস্তাব দেয় তারা। আমি বলেছি আমার মিমাংসা প্রয়োজন নেই তারা শুধু দুঃখ প্রকাশ করুক এতেই মামলা তুলে নিবো। কিন্তু তারা দুঃখ প্রকাশ না করে উল্টো এক নারী দিয়ে আমার ছেলে বাদলের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা করেছে। আমরা হতদরিদ্র আমার ক্ষমতা নেই এই মামলা চালানোর। আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাই আমি বিচার চাইনা। আমার ছেলেরা ফেরি করে কাপড় বিক্রি করে সংসার চালায়। আমি পরিবার নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই।
তিনি আরো বলেন, হিমেলের শেল্টারে তার চাচা মজিবুর ও জুয়েল এলাকায় সাধারন মানুষদের অনেক অত্যাচার করেন। সস্তাপুরে অনেক পরিবারকে বাসা থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা দিয়েছে। সাইনবোর্ড লাগিয়ে বাড়ি ঘর দখল করেছে। তারা অনেক প্রভাবশালী তাদের সঙ্গে আমাদের কোন তুলনা হয়না। আমরা খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ। তাদের আক্রোশ থেকে রক্ষা পেতেই জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।
ছাত্রলীগ নেতা হিমেল এসব অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার কলে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি এসব ঘটনার সাথে জড়িত না।