সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তুকে এবার কোনঠাসা করার চেষ্টা করছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার অনুগামীরা। এর আগে সুপার ফাইভের ৫ নেতার মধ্যে তিনজনই খোরশেদের বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চার করে বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু এবার মন্তুর ঘরের টিনের চালে ঢিল ছুড়েছেন খোরশেদ অনুগামীরা।
জানাগেছে, মহানগর যুবদলের বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের বিষয়ে মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভের সঙ্গে কেন্দ্রীয় যুবদলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকে জমা দেয়ার পর কমিটির খসড়াগুলো ফেরত দেয়া হয়। সেই সঙ্গে নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে যুবদল নেতাদের তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণের জন্য ফরম তুলে দেয়া হয়। ওই বৈঠকে মহানগর যুবদলের শীর্ষ তিন নেতা খোরশেদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেন।
সেখানে তারা জানান, করোনাকালে খোরশেদ যুবদলের ব্যানারে কোন কর্মসূচি পালন করেননি। তিনি টিম খোরশেদ নাম দিয়ে ব্যক্তি প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের নামও মুখে নেননি। অথচ সরকার দলের এক এমপির বক্তব্যকে খেতাব হিসেবে নিয়ে নাচানাচি করেছেন তিনি। দলীয় আদর্শ নীতি নৈতিকতা ভুলে সেই এমপিকে আবার ধন্যবাদও দিয়েছেন খোরশেদ। তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন তিনি বিএনপির রাজনীতি করেন।
ওই ফরম গত ১৫ সেপ্টেম্বর সভাপতি খোরশেদের বাসায় বিতরণ করা হয়। যেখানে সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ১৭ সেপ্টেম্বর উপরোক্ত তিন নেতা সহ মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হক রানা, আহাম্মদ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন মিলে বন্দরে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেন।
এই ঘটনার পর ১৮ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের ৮নং ওয়ার্ডে সভাপতি অনুগামী মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু প্রধান অতিথি এবং মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ অপু, ইকবাল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি জুয়েল প্রধান মিলে ফরম বিতরণ করেন। এই ওয়ার্ডেই সেক্রেটারি মন্তু ও যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধানের নিজ এলাকা।
২১ সেপ্টেম্বর ১০নং ওয়ার্ডে সুপার ফাইভের ওই তিন নেতা ছাড়াও মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি জুয়েল রানা, আহাম্মদ আলী, নাজমুল হক রানা মিলে যুবদল নেতাদের মাঝে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেন। ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক পর্যায়ে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মমতাজ উদ্দীন মন্তু। তিনি বলেছেন, ‘১৮ সেপ্টেম্বর ৮নং ওয়ার্ডে যুবদলের কোন প্রোগ্রাম হয়নি। ওটা ছিল মাদকসেবীদের মিলন মেলা। ছবিতে দেখেছি মঞ্চের ৭ জনের মধ্যে ৬জনই মাদকসেবী। কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্দেশনা রয়েছে যুবদলে মাদকসেবীদের রাখা যাবে না।’
এই কর্মসূচির পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর মহানগরীর দেওভোগ এলাকায় সদর থানায় যুবদলের নেতাদের মাঝে তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করেন মন্তু। যেখানে সকল পূর্বের সকল নেতারা উপস্থিত থাকলেও জুয়েল রানা সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন না।
এদিকে ৯ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির একসময়কার দাপটশালী নেতা মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেনের বাসায় যান খোরশেদ অনুগামী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সেক্রেটারি জুয়েল প্রধান। কামাল হোসেনের ছেলে মাজহারুল ইসলামকে যুবদলের তথ্য সংগ্রহ ফরম দেয়া হয়। ওই ফরম বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কামাল হোসেন হলেন মমতাজ উদ্দীন মন্তুর আপন বড় ভাই। অর্থাৎ মাজহারুল ইসলাম হলেন মন্তুর ভাতিজা। আর সেই ফরম মন্তুর কাছ থেকে নয় ফরম গ্রহণ করেছেন খোরশেদ বলয় থেকে।
এই বিষয়টিকে মহানগর যুবদলের শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, এর আগে মন্তু ও সাগর প্রধানের এলাকায় গিয়ে ফরম বিতরণ করে মন্তু ও সাগর প্রধানকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়। যার ফলে মন্তু ও সাগর প্রধান সিদ্ধিরগঞ্জে কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়ে যায়। এবার কামাল হোসেনের ছেলের হাতে ফরম তুলে দিয়ে মন্তুর ঘরের টিনের চালে ঢিল ছোড়ার মত কান্ডটা করা হলো। এসব কারনে যুবদলের বিরোধ আরও বেড়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন ওই নেতা।