সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী থেকে রাজপথে অগ্নিকন্যার ভুমিকায় ছিলেন নাসরিন সুলতানা ঝরা। বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে ঢাকার রাজপথ কাঁপিয়েছেন এই নেত্রী। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে অসংখ্যবার হামলা মামলার শিকার হয়েছেন তিনি। আন্দোলন করতে গিয়ে ৭বার কারাভোগও করেছেন এই তুখোর নারী নেত্রী। সর্বোচ্চ কারাভোগ করেছেন একটানা ১৯ দিন। তবুও রাজপথ ছেড়ে যাননি তিনি। এমন একজন নারী যিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কৃতি সন্তান নাসরিন সুলতানা ঝরা। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন।
এবার তিনি স্বপ্ন দেখছেন নিজের জন্মস্থান সোনারগাঁও পৌরবাসীর সেবা করবেন। তার মরহুম পিতা জয়নাল আবেদীন ছিলেন আওয়ামীলীগের নেতা। পিতার মিছিল মিটিংয়ে শিশুকালেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে শ্লোগান তুলেছিলেন। একজন ক্ষুদ্র কর্মী থেকে আজকে তিনি আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সম্ভাব্য প্রার্থী। নির্বাচনী উঠান বৈঠকেও তার বক্তব্যে ঝড়ছে অগ্নিকন্ঠে প্রতিবাদী বক্তব্য।
নিজের রাজনীতি, পৌরসভা নির্বাচন ও পৌরবাসীর জন্য নানা স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেছেন সান নারায়ণঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে। পৌরসভার লাহাপাড়া এলাকায় তার বাসভবনে সাক্ষাতকারে জানালেন তার রাজনীতিতে ওঠার আসার গল্প। জানালেন পৌরবাসীকে নিয়ে তার স্বপ্নের কথা। কেন মেয়র প্রার্থী হয়েছেন এবং কেন মেয়র হতে চান জানালেন সেইসব বিষয়েও। এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন সেই সব বিষয় নিয়ে।
সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে কেন মেয়র প্রার্থী নির্বাচন করতে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছি। টাকা পয়সার পেছনে দৌড়াইনি। রাজনীতি আমার নেশা। এটাকে পেশা হিসেবে নেয়নি। এখন গ্রামে থাকি, অনেক মানুষ সহযোগীতার জন্য আসে, কেউ বয়স্ক ভাতা চায়, বিধবা ভাতার কার্ড চায়, আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যে রাস্তা রয়েছে সেটা দিয়ে হেটে যাওয়ার মত নয়। মুলত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার লক্ষ্যেই আমি প্রার্থী হয়েছি। ছোট বেলা থেকে দেখেছি আমার বাবাও মানুষের জন্য কাজ করতেন।
মেয়র হতে চাওয়ার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়র হতে চাওয়ার উদ্দেশ্যে হলো আমি ২০১৩ সাল থেকে পুুুরোদমে এলাকায় থাকি। তারপর থেকে সোনারগাঁয়ের মানুষের সঙ্গে আছি। এলাকায় থাকার কারনে বিভিন্ন লোকজন আমার কাছে সহযোগীতা প্রত্যাশা করছেন। কোন জামেলা হলেও মানুষ আমার কাছে আসে। রাস্তা ঘাটের সমস্যা, নানা সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসে। যেটা ব্যক্তিগতভাবে পারি সেটা করি। কিন্তু তখন আমার মনে হলো একটা চেয়ারে বসলে সেই কাজগুলো করা আমার জন্য আরো সহজ হয়। আমি যদি মেয়র হতে পারি তাহলে কাজগুলো করা সম্ভব। ধর্মীয় উৎসবগুলোতে গরীব মানুষ আমার কাছে আসে বয়স্ক ভাতার কার্ড, বিধবা ভাতার কার্ড, বিজিএফ কার্ড সহ এসব সাহায্যগুলো পাওয়ার জন্য। তখন বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে গরীব মানুষগুলোর হাতে তুলে দেই। তখন আমি চিন্তা করে দেখলাম দীর্ঘদিন রাজনীতি করে এখন এর ওর কাছ থেকে কার্ড নিয়ে বিতরণ করতে হচ্ছে আমাকে! আরো হতাশ হলাম যে, যখন দেখি এসব কার্ডগুলো বিতরণেও কাজ করছেন যারা, তারা অন্যান্য দলের রাজনীতি করছেন। তারা আওয়ামীলীগ করে নাই তারাই মাতাব্বরীটা করছেন। মানুষকে সাহায্য করার জন্য এসব কার্ড আমি পাচ্ছি ৫টা ৬টা, আর বিএনপি জাতীয়পার্টির রাজনীতি যারা করছে তারা এসব বিতরণ করছেন। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়। এসব বিষয়গুলো আমাকে নাড়া দিয়েছে। তাই আমি মেয়র প্রার্থী হয়েছি।
এ ছাড়াও তিনি পৌরসভার বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে পৌরসভা হলো। কিন্তু এখনও রাস্তাঘাটের কত সমস্যা, পয়ঃনিস্কাশনেরও কোন ব্যবস্থা নাই। পৌরসভার পরিকল্পিত কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। কয়েকটা রাস্তা ছাড়া বাকি রাস্তাগুলো অন্ধকার। বিভিন্ন এলাকা ঘুরলে মনে হয় আমরা কি পৌরসভায় আছি? আমি মেয়র হলে অনেক কাজ হবে। কারন আমরা ঢাকায় যাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছি তাদের অনেকেই বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী। অনেকেই এমপি রয়েছেন। আমি মেয়র হলে তাদের কাছে যাওয়া আমার জন্য সহজ হবে। এমনকি আমি মেয়র হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও কোন কাজের জন্য যেতে পারবো।
আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশি। সকলকে বাদ দিয়ে আপনাকে কেন আপনার নাম স্থানীয় আওয়ামীলীগ কেন্দ্রে পাঠাবে এবং দল কেন আপনার হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিবে? এমনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনীতি, আমার রাজনীতিতে উত্থান, রাজনীতিতে রাজপথে আমার যে ত্যাগ তা কতজনের আছে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশি? ধরে নিলাম প্রত্যেক মনোনয়ন প্রত্যাশিরাই ত্যাগী। কিন্তু আমার মত ত্যাগ স্বীকার করেছেন কে কে? আমার চেয়ে বেশি ত্যাগী কে? যখন বিরোধী দলে ছিলাম ঢাকার রাজপথে প্রতিদিন মিছিল করেছি, প্রতিদিন পুুলিশের ধাওয়া খেয়েছি, প্রতিদিন পুলিশের লাঠিপেটা খেয়েছি, টিয়ারসেলের যন্ত্রনা সহ্য করেছি। আমি একজন নারী হয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে ৭বার জেল খেটেছি, আমি রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের জীবন সংসারের দিকেও তাকাইনি। ঢাকার মিছিলের নেতৃত্ব দিতাম। মিছিলের শ্লোগান দিতাম। প্রতিদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কখনও ছাত্রদল দৌড়ানি দিতো, কখনও পুলিশ দৌড়ানি দিতো। ছাত্রদল পুলিশ একসাথে হয়ে আমাদের উপর হামলা করতো। পুুলিশের বুটজুতার লাথি খেয়েছি কয়েক’শ বার। কিন্তু গ্রাম কেন্দ্রীক রাজনীতিতে কিন্তু প্রতিদিন আন্দোলন সংগ্রাম হয়না। মাসে দুই মাসে তারা একটি কর্মসূচি পালন করতেন। এখন আমার মত নির্যাতন তাদের মধ্যে ক’জন সহ্য করেছেন? আমার চেয়ে ত্যাগী কে বেশি? আমি মনে করি যারা মনোনয়ন প্রত্যাশি রয়েছেন এবং অনেকেই বয়সে আমার চেয়ে বড় কিন্তু রাজনীতিতে সিনিয়র হিসেবে আমি মনে করি স্থানীয় আওয়ামীলীগ সর্বপ্রথম আমার নামটাই কেন্দ্রে প্রস্তাব করে পাঠাবে। যদি তারা ত্যাগ ও নির্যাতন এবং দলে অবদানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন।
তবে যদি স্থানীয় আওয়ামীলীগ আপনার নাম কেন্দ্রে প্রস্তাবনায় না পাঠায় এক্ষেত্রে আপনার করণীয় কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতটুকু আমার সুযোগ আছে সরাসরি কেন্দ্রে চলে যাওয়ার মত। আমার মনে হয়না তারা আমার নামটি বাদ দিবে। আমি মনে করি কেন্দ্রে জবাবদিহি করতে হবে কেন ঝরার নামটি প্রস্তাবনায় আসলো না? স্থানীয় আওয়ামীলীগ প্রস্তাবনায় আমার নাম যদি কোন কারনে নাও দেয় তাহলেও আমি কেন্দ্রে গিয়ে মনোনয়ন চাইবো। আমি যাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তারাই কেন্দ্রে দায়িত্বে রয়েছেন। তারা আমাকে সন্তানের মত ভালবাসেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আপনার উত্থান কিভাবে জানতে চাইলে নাসরিন সুলতানা ঝরা বলেন, আমি যখন খুব ছোট, তখন আমাদের ঘরে দেখতাম পলিটিক্যাল কথাবার্তা হতো। জন্মের পর থেকেই দেখি আমার বাবা আওয়ামীলীগের নেতা। আমার যখন ৭/৮ বছর তখন দেখি আমার বাবার নেতৃত্বে রাস্তা দিয়ে মিছিল যায়। আমি তখন মিছিলের সঙ্গে দৌড়াতাম। আমিও মিছিলকারীদের সঙ্গে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলতাম। ওই সময় জাতীয়পার্টি কিংবা বিএনপির দাপট ছিল এখানে। আমাদের তখন টিনের ঘর ছিল। সেই টিনের ঘরের চালে নির্বাচনের সময় নৌকা প্রতীক বাধাই করা ছিল। মুলত ছোট বেলা থেকেই আওয়ামীলীগের শ্লোগান ধরেছি। যখন আমি ঠিক বুঝতেও পারিনি।
তিনি তার পিতার বিষয়ে বলতে গিয়ে জানান, আমার মরহুম বাবা জয়নাল আবেদীন আমিনপুর ইউনিয়ন ও পরবর্তীতে পৌরসভায় নিয়ে ২১ বছর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যখর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিল না, ১৫আগস্ট পালন করতেও বাধা দিতো, পালন করতে গেলে আমার আব্বার উপর হামলাও হয়েছিল। অনেক হামলা মামলার শিকার হয়েছিলেন আমার পিতা। মৃত্যুর আগেও তিনি মামলায় হাজিরা দিয়েছেন।
আপনার পরিবারের আর কেউ রাজনীতিতে রয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছোট বোন নাজনীন সুলতানা সুখী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। তখন সে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছে। বিয়ের পর সে পলিটিকস ছেড়ে দেয়।
তিনি জানান, সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশনে ক্লাস সিক্সে লেখাপড়া শুরু করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শেখ ফজলুল হক মনির হাতে গড়া ‘শাপলা কুড়ি আসর’ নামে আওয়ামী সাংস্কৃতিক সংগঠন, এই সংগঠনের স্কুল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হই। ওই সময় মাহফুজুর রহমান কালাম ভাই সোনারগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। মুলত যাযাবর মিন্টু ভাই আমাদের গাইড করতেন। তিনি কালাম ভাইয়ের মাধ্যমে শাপলা কুড়ি আসরের কমিটি গঠন করে দেন। ওই সময় কালাম ভাইয়ের নেতৃত্বে আবু নাঈম ইকবাল ভাই, আনিসুর রহমান ভাই, নেকবর হোসেন নাহিদ ভাইয়ের মাধ্যমে আমরা ছাত্রলীগের র্যালীতে যেতাম। শেখ রাসেল শিশু কিশোর দিবসের দিন ঢাকায় আমাদের নিয়ে যেতো। আমরা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সামনে নেত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করতাম।
তিনি জানান স্কুল জীবন শেষ করে এরপর তিনি ইন্টারমেডিয়েটে বদরুন্নেছা কলেজে ভর্তি হোন। তিনি বলেন, মুলত রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে আমার সেখানে ভর্তি হওয়া। লালমাটিয়া কলেজে আমার বাবা আমার ভর্তি প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন বদরুন্নেছা কলেজে বেড়াতে যেতাম, আমার ফুফাতো বোন ছিল। তখন থেকে সেখানে পড়ার আমার ইচ্ছা জাগে।
তিনি জানান, ১৯৯৬ সালে আমি এসএসসি পাশ করি। ওই বছরে বদরুন্নেছা কলেজের হোস্টেলে উঠি সেপ্টেম্বরের ২০তারিখে। মজার বিষয় হলো ২১ তারিখেই আমি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মিছিলে যোগদান করি। আমার ফুফাতো বোন ছিল ছাত্রলীগের নেত্রী, তার হাত ধরেই সেখানে উঠা। বদরুন্নেছা কলেজেই এইচএসসি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত লেখাপড়া সম্পন্ন করি। এরি মাঝে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বেশ পাকাপোক্ত অবস্থান তৈরি হয় আমার। ১৯৯৭ সালে বদরুন্নেছা কলেজে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি হয়। সেখানে তখন মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবু যিনি বর্তমান এমপি। সেক্রেটারি ছিলেন মামুনুর রশিদ ভাই। একটি জামেলা নিয়ে ওই সময় আমাদের কলেজের হলরুমে একটি প্রোগ্রাম হয়। ওই সময় ইন্টারমেডিয়েটে মাত্র পড়ি। ওই অনুষ্ঠানে আমি বক্তৃতা দেই। ওই সময় ঘনঘন জামেলা হতো রাজনীতিতে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আমাদের বেশ জামেলা হতো। একটি জামেলা মেটাতে সেখানে যান নজরুল ইসলাম বাবু ভাই। তখন আমি সেখানে বেশ উত্তপ্ত বক্তব্য রাখি। তখনি আমি কর্মী হিসেবে উনার চোখে পড়ি। যে কারনে ৯৭ সালের আহ্বায়ক কমিটিতে আমাকে ১নং সদস্য করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কের পরেই ছিল ১নং সদস্য পদটি। অর্থাৎ ১৯৯৭ সালে বদরুন্নেছা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে ১নং সদস্য হই।
তিনি জানান, পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয় সেই কমিটিতে আমি সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হই। একই বছরে বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আমাকে ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ওই সময় আমাকে সবাই চিনে ফেলে। ১৯৯৯ সালে কলেজ কমিটিতে আমি সাংগঠনিক সম্পাদক হই। ২০০১ সালে যখন বিরোধী দল চলে আসি। ২০০১ সালেই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়কের পরের পদে আমি ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক হই। ২০০২সালে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আমাকেই সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০১২সাল পর্যন্ত দুই টার্মে আমি ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছি।
তিনি আরও বলেন, এরি মাঝে ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হই। এটা ছিল ২০০৬ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত। পরবর্তী কমিটিতে আর ছিলাম না। ২০১২ সালে আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করি। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। বর্তমানে আমি এই পদে দায়িত্ব পালন করছি।
তিনি আরও জানান, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময়ও তিনি ওই সমাবেশে ছিলেন। তিনি দূরে থাকায় গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে ২০০৩ সালে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হোন নাসরিন সুলতানা ঝরা। ২০০১ সালে ঢাকা কলেজের সভাপতি ছিলেন এসআর পলাশ। পরবর্তীতে তিনি মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি হোন। ২০০৩ সালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার হত্যার প্রতিবাদে ১৯ জুন হরতাল পালন করতে গেলে ঝরাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ঝরা বলেন, দুইদিন কারাভোগও করেছিলাম। তখন প্রয়াত সাহারা খাতুন আমার জামিন করান। বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে ১০/১২টির মত মামলায় আসামিও হয়েছিলাম। এমনকি ইডেন কলেজের জামেলার ঘটনাতেও আমাকে আসামি করা হয়। আমি ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেছি ৭ বার। মামলা খেয়েছি আরও বেশি। একটানা সর্বোচ্চ জেল খেটেছি ১৯ দিন। হাওয়া ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে গ্রেপ্তার হই। সেই মামলায় আমি ১৯ দিন কারাভোগ করি। এছাড়াও সাতদিন তিনদিন এরকম করে ৭বার জেল খেটেছি।