সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিধবা এক নারীকে গণধর্ষণের রেশ কাটতে না কাটতেই (১৪) বছর বয়সী মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে ফের গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রেমিক নজরুল ইসলাম সাগর নাম পরিচয় দিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে ১ মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়।
পরে নজরুল ইসলাম সাগর তাকে প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার বড় ভাই বাদল ও তার ফুফাত ভাই মুছা বিষয়টি টের পেয়ে নজরুলকে শাসিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে তারা মেয়েকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে একই স্থানে জোরপূর্বক তারা দুজনই পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ওই তিনজনকে আসামি করে ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ মামলার সূত্রধরে অভিযুক্ত তিনকে রাতেই গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত নজরুল ইসলাম সাগর স্থানীয় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী মধ্যপাড়া এলাকার মোতালিবের ছেলে টিউবওয়েল মিস্ত্রী, তার বড় ভাই রিকশা চালক বাদল ও তাদের ফুফাতো ভাই একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে টিউবওয়েল মিস্ত্রী মুছা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতা ছাত্রী দিঘলদী এলাকায় একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। মাদ্রাসার হোস্টেলেই সে থাকতো। হঠ্যাৎ করে হোস্টেলের পানির ট্যাঙ্কে সমস্যা হলে সে ১২ অক্টোবর গোসল করতে বাড়িতে যায়। পরে আবার মাদ্রাসায় যথা সময়ে ফিরেও যায়।
তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাদ্রাসায় গিয়ে মেয়ের খোঁজ করলে গেটের দারোয়ান সামুছুন্নাহার জানায়, তার মেয়ে মাদ্রাসায় নেই। বাড়িতে ফিরে তার ব্যবহারের মোবাইলটি পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হয় রিং হলেও কেউ তা রিসিভ করছিল না। পরে তাকে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যাাচ্ছিল না।
পরে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে স্থানীয় প্রভাকরদী এলাকা থেকে জৈনক মোবারক নামে এক ব্যক্তি ফোন করে তার মেয়ের অবস্থান জানায়। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসে তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রেমিক নজরুল ইসলাম ছদ্ম নাম (সাগর) পরিচয় দিয়ে তাকে এক মাস ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।
গত ১২ অক্টোবর (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে ফোনে ডেকে নিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ব্রাহ্মন্দী সরকারী হাসপাতালের পেছনে রবিন্দ্র বাবুর পুকুর পাড়ে তার মেয়েকে প্রথমে নজরুল ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
পরে তার বড় ভাই বাদল ও ফুফাতো ভাই মুছা নজরুলকে সাশিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে তার মেয়েকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস একই স্থানে জোরপূর্বক তারা দুজনই পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ধর্ষিতার মা জানান, প্রথমে জানতে পারি নজরুল আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। তাই প্রথমে অপহরণের অভিযোগ করেছি। কিন্তু পরে ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারি এবং মামলা দায়ের করি। এসময় তিনি আসামিদের কঠিন শাস্তি দাবি করেন।
তিনি আরো জানান, সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে আমার মেয়ে বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে ছিল। আমার মেয়ের ওপর নির্যাতনের সঠিক বিচার চাই।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নির্যাতিতার মায়ের পক্ষ থেকে একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আড়াইহাজারের স্থানীয় নৈকাহন এলাকায় (৪০) বছর বয়সী বিধবা এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নির্যাতিতা স্থানীয় ফকিরবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ভাই ভাই ম্পিনিং মিলের শ্রমিক।
এ ঘটনায় (১৪ অক্টোবর) ধর্ষিতা বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ আলী আকবর (৪৫) নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
অপর অভিযুক্তরা হলো- নৈকাহন এলাকার মৃত আ: মালেকের ছেলে মোস্তফা, মৃত রহমত আলীর ছেলে আনারুল, ডা. হোসেন মিয়ার ছেলে লিটন, খোকা মিয়ার ছেলে তরিকুল ইসলাম ও একই এলাকার লস্কর আলীর ছেলে শাহীন।