সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন ৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী। যার মধ্যে তিনজনই আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত। আরেকজন এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন যিনি জাকের পার্টির রাজনীতিতে জড়িত রয়েছেন বলে জানাগেছে। তবে আওয়ামীলীগের তিন প্রার্থীর মধ্যে কার দিকে থাকবে স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সমর্থন তা দেখার অপেক্ষায় নেতাকর্মীরা। কারন সরকারি দল শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাকি পদে যে যার মত করে ছেড়ে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় এমপির সমর্থন বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। যদিও তিনজনই এমপি খোকার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
জানাগেছে, ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভায় সিদ্ধান্ত হয় তিন জনের নাম। যেখানে প্রথমে রাখা হয় বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপনের নাম। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সেক্রেটারি। এরপর রাখা হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শিক্ষানুরাগী আবু নাঈম ইকবাল ও বর্তমান উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু ওমর। তবে ইমেজের দিক থেকে আবু নাঈম ইকবালকেই এগিয়ে রাখছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে ইকবাল স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তার পক্ষে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের সমর্থন দেখা যাচ্ছে। রয়েছে উপজেলার শিক্ষক সমাজ ও ক্রীড়া সংগঠকের নেতৃবৃন্দরাও।
এদের মধ্যে আবু নাঈম ইকবাল বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সবচেয়ে কাছের ব্যক্তির হিসেবে পরিচিত। তিনি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তার বড় ভাই অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বী নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক। গত পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন এটি ফজলে রাব্বী। এর আগে আবু নাঈম ইকবাল জেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ওই সময় তিনি তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী ফারুক ভূইয়ার সঙ্গে সমান ভোট পান। পরে লটারির মাধ্যমে তিনি ফারুক ভুইয়ার কাছে পরাজিত হন। ইতিমধ্যে তিনি গণসংযোগে নেমে গেছেন।
বাবু ওমর কাচপুর এলাকায় ব্যাপক বিতর্কিত। তার ভাই মোশারফ ওমর কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্যাম্প ভাংচুর গুলিবর্ষণের অভিযোগ ওঠেছিল বাবু ওমরের বিরুদ্ধে। এছাড়াও স্থানীয়দের মাঝে আতংকের নাম বাবু ওমর। যে কারনে স্থানীয় জনগণের মাঝে তাকে নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ নাই বলে দাবি করেছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত বছর নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নান। বিভিন্ন নাশকতার মামলায় মান্নান অভিযুক্ত হলে চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। শাহআলম রূপন ভাইস চেয়ারম্যান থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। এ নিয়ে অপর ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তারও দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। আজহারুল ইসলাম মান্নান যতবার বরখাস্ত হয়েছেন ততবারই দুই ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এমনকি উপজেলা পরিষদের কক্ষ তালা লাগিয়ে দেয়ার মত ঘটনাও ঘটিয়েছিলেন দুই ভাইস চেয়ারম্যান। তা নিয়ে দুজনেই বিতর্কিত হয়েছেন। এনিয়ে শাহআলম রূপন তার আগের ইমেজ ধরে রাখতে পারেননি।
অন্যদিকে আবারও নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি এবারও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তবে তিনি গত নির্বাচনের পর সোনারগাঁয়ের মানুষের আসেননি। এমনিক নির্বাচনের পর তিনি নির্বাচিত হলেও উপজেলার উন্নয়নে দৃশ্যমান কোন উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারেননি। উল্লেখ্যযোগ্য তার কোন ভুমিকা নেই যখন তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। একইভাবে শাহআলম রূপনের ভুমিকা নিয়েও মানুষ সুন্তুষ্ট নয়। দুই ভাইস চেয়ারম্যানই নির্বাচিত হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের মানুষের সঙ্গে দূরত্ব রেখেছেন। ফলে দুজনকে মানুষ পরীক্ষা করেছেন। সাধারণ ভোটারা তাদের দুই ভাইস চেয়ারম্যানকে ব্যর্থ হিসেবে দাবি করেছেন। তাদের নিয়ে সোনারগাঁয়ের মানুষের মাঝে আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা। নতুনদের মাঝে আবু নাঈম ইকবালকেই দেখছেন সবার আগে সবদিক থেকে। ফলে আবু নাঈম ইকবালের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে।