সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত সমস্যা নিয়ে বলেছেন, আমার যারা পূর্বসূরী ছিলেন বিশেষ করে পুলিশ সুপার মইনুল স্যার যখন ছিলেন এরপর হারুন স্যার আসছেন তাদের সবাই ফুটপাত নিয়ে অনেক পুলিশ আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত হয়েছেন এবং চেষ্টা করেছেন। আমি ১০ মাস চেষ্টা করতেছি। এই চেষ্টায় কি ফুটপাত বন্ধ হয়েছে? একটাও বন্ধ হয় নাই। আমি সারাদিন চেষ্টা করলে বন্ধ হবে? একার চেষ্টায় হবে না।
তিনি আরও বলেন, ফুটপাত নারায়ণগঞ্জে একটি জাতীয় সমস্যা। এত লোক। মুন্সিগঞ্জে যত লোক সংখ্যা আছে তার চেয়ে বেশি আছে নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে। নারায়ণগঞ্জে যে ফুটপাতগুলো আছে সকল থানায় মিলিয়ে ১৫ লক্ষের নিচে হবে না।
৩ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা আয়োজিত ওপেন হাউজ ডে’তে হকার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম একথা বলেন।
পুুলিশ সুপার বলেন, এখান থেকে যদি আমরা পরিত্রান পেতে চাই তাহলে আমাদের সকলের সম্মিলিত ব্যবস্থা নিতে হবে। ডিসি সাহেব এসপি সাহেব একা পারবেন না। জনপ্রতিনিধিদের আসতে হবে। এই সিটির দায়িত্বে সিটি মেয়র আছেন। এখানে জাতীয় সংসদ থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন, চেম্বারের নির্বাচিত সদস্যরা আছেন, বনিক সমিতি আছেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, সুশীল সমাজ আছেন, সাংবাদিকরা আছেন সবাই মিলে যদি আমরা চাই তাহলে বন্ধ হবে, তা নাহলে বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, আমি এই ফুটপাতে রমজানে বসতে দেইনাই। এখনও দেই না। ২৪ ঘণ্টাতো আমি আটকাই রাখতে পারি না। আমি যখন যাই আমার লোক যখন যায় তখন তারা দৌড়ায় চলে যায়। মালামাল আটক করে। চলে গেলে আবার বসে যায়। ফুটপাতে কারা বসে? এর মধ্যে শতকরা ৯৫ জন আছে যারা অন্য জেলার অধিবাসী। তাহলে অন্য জেলার অধিবাসীর জন্য মায়া দেখিয়ে লাভ আছে? কান্নাকাটি করে লাভ আছে? তারা ওই জেলায় গিয়ে বসতে পারে না? ওই জেলায় কাজের অভাব? তারা কেন নারায়ণগঞ্জে এসে ফুটপাতে বসবে? এই জিনিসটা আমাদের সবার মাথা ঢুকাতে হবে। হকার পুনর্বাসন অনেকেই বলেন। আমিও বলি। কোন হকার পুনর্বাসন করবো? যে হকার আমাদের নারায়ণগঞ্জের, যারা খাইতে পায় না তাদের পুনর্বাসন করবো। যে ৬৪ জেলা থেকে এসে বসবে তাকে আমি পুনর্বাসন করবো কেন?
তিনি আরো বলেন, আর দোকান বসলেই চাঁদাবাজি। এটা আমি অস্বীকার করবো না। যেখানে অবৈধ কিছু আছে সেখানেই অবৈধ লেনদেন আছে। চাঁদাটা নেয় কে? ওই যে ব্যাংকের কর্মচারি নেয়, মিষ্টির দোকানদার নেয়। সে সাথে আমার পুলিশ যে নেয় না সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি বলেছি যদি একটি প্রমান পাই তাহলে ওই পুলিশ নারায়ণগঞ্জে থাকবে না। আবার এক শ্রেণি আছে কথাকথিত নেতা। হকার নেতা, এই নেতা, সেই নেতা। তারা প্রতি দোকান থেকে টাকা নেয় ২০০ করে ৫০০ করে। কি করবে এই টাকা? বলবে যে এসপি সাবরে দিতে হবে, ওসি সাবরে দিতে হবে। আসলে পুরাটাই ভন্ডামী। ও নিজে খায়। ওরতো কোনো রোজগার নাই। ওর নিজের দোকানই নাই। ঐ লোক কিসের নেতা। এই ধরণের কিছু নেতা আছে আমার কাছে মাঝে মাঝে গেছে আমি না করে দিয়েছি। হকারের আবার নেতা কি? যার নিজের বাড়ি ঘরই নাই ছিন্নমূল তাকে আমি কোথায় খুঁজে পাবো। এরা আপনাদের চোখে ধুলা দিয়া নেতাগিরি করে টাকা ওঠায় বিভিন্ন জনের নাম বলে। আপনা সবায় সোচ্চার হন। রাস্তা আপনাদের। আপনারা রাস্তা দখল করবেন। দেখবেন এই হকার চলে যাবে।
এসময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা পিপি অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং’র সভাপতি ডা. শাহ নেওয়াজ, নাসিক কাউন্সিলর অসীত বরণ বিশ্বাস, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুম্মন রেজা, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা কমিউনিটি পুলিশিং’র সভাপতি শংকর সাহা প্রমুখ।