সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
রাজনীতিতে চলছে শামীম ওসমানের শেষ টাইম। এমনটা তিনি নিজেও দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে তার শেষ টাইম। তবে তিনি কি কারনে রাজনীতিতে শেষ টাইম বলছেন সেটা তিনি এখনও পরিষ্কার করেননি। যদিও অনেকের ধারণা তার একমাত্র পুত্র অয়ন ওসমানকে রাজনীতিতে পাকাপোক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করেই তিনি রাজনীতিকে বিদায় জানাবেন। তবে আদৌ তিনি রাজনীতিকে শেষ টাইম বলছেন নাকি তিনি নির্বাচনকে শেষ টাইম বলছেন সেটাও পরিষ্কার করেননি। শনিবার শামীম ওসমান এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘দিনের বেলায় বিএনপি আর রাতের বেলায় জামাত করে না তারাই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগে থাকবে। এইবার আমার শেষ টাইম আগেই বলছি। তাই অরিজিনাল আওয়ামীলীগের হাতেই দায়িত্ব দিয়ে বিদায় নেবো, তার আগে না।’
এদিকে এবার নিজ দলের নেতাকর্মীদের কঠোর হুশিয়ারী দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের এমপি একেএম শামীম ওসমান। কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে শামীম ওসমান বলেছেন, দলের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দল সৃষ্টিকারীদের কোন ছাড় দেবো না। তিনি বলেন, ‘অন্য দিক দিয়া লাইন কইরা কেউ নেতা হইতে চাইলে পারবেন না। এই হাতের ফাঁক দিয়ে বের হইয়া কেউ নেতা হইতে পারবেন না। একসাথে চলবো, একসাথে বাচবো, একসাথে মরবো।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার ফতুল্লায় নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচন পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় তিনি নেতাকর্মীদের এমন হুশিয়ারী দেন।
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘কিছু কিছু লোক চেষ্টা করবে দ্বন্দ সৃষ্টি করার জন্য। অভিযোগ থাকলে আমাকে বলবেন। অভ্যন্তরীন দ্বন্দ কেউ করবেন না। দলের সমস্যা দলের সিনিয়র নেতারাই সমাধান করবে, বাইরের কেউ এসে সমাধান করবে না।’
তিনি অন্য এক প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি কেউ মনে করেন, শেখ হাসিনার সরকারকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছি, তাহলে তাদের বলবো, আপনারা এই কথা মনে কইরেন না। অন্তত নারায়ণগঞ্জে যেন এই কথা কেউ মনে না করেন। নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের রাজপথে দখলে রাখার ক্ষমতা পূর্বেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা কারোর উপর ভরসা করে আওয়ামীলীগ করিনা। আমরা কেবল শেখ হাসিনার নির্দেশেই চলি।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিটা ঘরে ঘরে আবার যাবো। আমরা পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নম্বরের তালিকা জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে দিয়ে আসবো। যাতে কেউ আশেপাশে কোন দুর্নীতি দেখলে তারা প্রশাসনকে দ্রুত জানাতে পারে।’
শামীম ওসমানকে মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়েছিল দাবি করেন তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ সাহেবের সামনেই আমাকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়েছিল কিন্তু আমি নেই নাই। কেননা যে মন্ত্রিসভার প্রধান শেখ হাসিনা সেখানে মন্ত্রী হবার মতো উপযুক্ততা আমার মতো নেতার হয় নাই। আমি দূরে যেতে চাইনা। আমি আমার নারায়ণগঞ্জেই থাকতে চাই। চাওয়া-পাওয়ার আশা করি না। তাই আমি কাউকে ট্যাক্স টোকেন দিয়ে রাজনীতি করবো না।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, জেলা আদালতের পিপি ও আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, নাসিক কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু ভূইয়া, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি নাজিমউদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, শেখ সাফায়েত আলম সানি, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।