সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
পতিতাবৃত্তির অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে তিন নারীর চুল কর্তন করে দিয়েছে এলাকার বর্বর পাষন্ড লোকজন। মুলত যেসব লোকজনদের সুযোগ করে দেয়নি সেইসব লোকজন ওই তিন নারীর উপর অমানসিক জাহিলিয়া যুগের ন্যায় বর্বরতা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। কিন্তু এ বিষয়ে বর্বরতা চালানো লোকজনদের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুুলিশ।
স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন ওই তিন নারীর উপর অনেক লম্পটদের কুনজর ছিল। যারা সুযোগ পায়নি ওই সব লম্পট লোকজনই ওই তিন নারীর উপর নির্যাতন চালায় কিছু অতিউৎসাহি লোকজনদের নিয়ে। কেউ কেউ বলছেন ওই নারী পতিতাবৃত্তি করছিলেন এবং সেই সুযোগটা কেউ কেউ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন মুলত সেই কারনেই ওই নারীকে নির্যাতন করা হয়। সচেতন মানুষের দাবি- ওই তিন নারী পতিতাবৃত্তি করলেও তাদের আইনের আওতায় আনা যেতো কিন্তু এভাবে অমানসিক নির্যাতন আইনত সঠিক হয়নি। যা বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। যারা এটা করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত। কারন যারা এমন বর্বর নির্যাতন ওই তিন নারীর উপর চালিয়েছে তাদেরকেও যদি ওই তিন নারী বিছানায় ডাকতো তাহলে তারাও তিন নারীর বিছানায় দৌড়ে যেতো। মুুলত সুযোগ না দেয়ার কারনেই তিন নারীর উপর এমন নির্যাতন করা হয়েছে যা হিংসাত্মক।
জানাগেছে, শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের দক্ষিণ কলাবাগ এলাকায় তিন নারীকে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ তুলে তাদের আটক করে অমানসিক নির্যাতন চালানো হয়। যা বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্বর নির্যাতনের পর পুলিশ সংবাদ পেয়ে দুপুর সাড়ে ৩টায় দ্রুত ঘটনাস্থল এলাকায় গিয়ে অতিউৎসাহি বর্বর লোকজনদের কাছ থেকে ৩ নারীকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
নির্যাতনের শিকার ওই তিন নারী হলেন- বন্দর ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাবাগ খালপার এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা বেগম(৫০), বন্দর শাহীমসজিদ এলাকার বাছেদ আলীর মেয়ে আসমা বেগম (৩৫) ও বুরুন্দি এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগম (৩০)।
বর্বর নির্যাতনকারীদের দাবি- বন্দর দক্ষিণ কলাবাগ খালপার এলাকায় মফিজ উদ্দিনের বাড়ীতে মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ বহিরাগত পতিতা দিয়ে অসামাজিক কাজ করে আসছিলেন। এলাকাবাসী একাধিকবার সাবধাণ করলেও কাউকে তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন এলাকার পতিতাদের নিয়ে গোপনে তার দেহ ব্যবসা অব্যাহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় গত শনিবার বিকেল ৩টায় গোপনে উল্লেখিত নারীদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করার সময় ফাতেমা বেগমসহ উল্লেখিত ৩ নারীকে আটক করে চুল কর্তন করে অমানসিক নির্যাতন চালায় লোকজন।
এ সময় বন্দর দক্ষিন কলাবাগসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক লোকজন ফাতেমা বেগমকে মারধর করতে থাকলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যায়। খবর পেয়ে বন্দর ইউপি সদস্য ইউসুফ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত লোকজনকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করে। সংবাদ পেয়ে বন্দর থানার এসআই সাফিউল দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ৩ নারীকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার এসআই সাফিউল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে ৩ নারীকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।