সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সম্পর্কে জেলা, মহানগর ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের বেশকজন নেতাদের নানা অশালীন বক্তব্যের বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে আওয়ামীলীগ নেতাদের নানা কটুক্তি ও অশোভন অশালীন বক্তব্যের বিষয়ে কঠোর প্রতিবাদও জানান জাতীপার্টির নেতারা।
২২ নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও পৌরসভার রয়েল রিসোর্টে উপজেলা ও পৌর জাতীয়পার্টির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এমপি খোকার বিরুদ্ধে ও পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে নেতারা অভিযোগ তুলেন। এই ঘটনায় আগামী ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়পার্টি।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভাঙ্গার ঘটনায় ২০ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে জেলা পরিষদের আয়োজনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুুল ইসলাম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আরজু রহমান ভুঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদ সদস্য আলাউদ্দীন আহাম্মেদ, মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, রোমান ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট নূর জাহান, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সামসুজ্জামান খান ভাসানী প্রমূখ।
মুলত সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের জাতীয়পার্টির টানা দুইবারের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে ওই নামফলক ভাঙ্গার জন্য দায়ী করা হয়। ওই ঘটনায় এমপি খোকাকে অভিযুক্ত করেই সমাবেশের সকল বক্তারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বেশকজন নেতা তাদের বক্তব্যে এমপি খোকার চরিত্রহননের চেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ হুমকি ধমকি দিয়েছেন। এসব ছাড়াও বক্তব্যে এমন সব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা সংবাদপত্রের ভাষায় লিখনযোগ্য নয়। কারো কারো বক্তব্যের ভাষা নিম্মশ্রেণির লোকজনদেরকেও ছাড়িয়ে গেছে। সমাবেশে আওয়ামীলীগ নেতাদের বক্তব্যের অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে কে কত নোংরা ভাষায় এমপি খোকাকে হেয়প্রতিপন্ন করে বক্তব্য রাখতে পারবেন চলছে সেই প্রতিযোগীতা। সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা নানা অশ্লীল শ্লোগানও দিয়েছেন।
ওই সময় আওয়ামীলীগ নেতাদের এমন বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে উপস্থিতিদের মাঝে হাসির খোরাক সৃষ্টি হলেও সমাবেশ শেষে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে যখন ওইসব নেতাদের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি সোনারগাঁয়ের সচেতন নাগরিকদের মাঝেও এমন সব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হয়নি। উপস্থিত সাংবাদিক সমাজও ওইসব নেতাদের ওইসব বক্তব্য মিডিয়াতে প্রচার করেননি। তবে দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যে কারনে আবার জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরাও ফেসবুকে কঠোর সমালোচনা করে মন্তব্য করছেন।
জানাগেছে, ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ওই বিদ্যালয়ের সামনে পৌর আওয়ামীলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এর আগের দিন ১৮ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ২০ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের সামনে জেলা পরিষদ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন যেখানে আওয়ামীলীগের বেশকজন নেতা অশালীন অশ্রাব্য অকথ্য ভাষায় বক্তব্য রাখেন। যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল সমালোচনা হয়েছে। ২১ নভেম্বর শনিবার মহানগর আওয়ামীলীগের ব্যানারে শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এখানেও জেলা আওয়ামীলীগের একজন শীর্ষ নেতা নানান ধরণের চরিত্রহননের চেষ্টার মত বক্তব্য রাখেন।