সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে নিয়ে কটুক্তি, ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা ও পৌর জাতীয়পার্টি।
২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই দাবি জানান নেতারা। একই সঙ্গে এমপি খোকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানান নেতারা। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভাঙ্গার ইস্যূকে কেন্দ্র করে যারা এমপি খোকাকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র করছেন এবং অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন ও নানান ধরণের অশালীন কটুক্তি করছেন তাদের প্রতি হুশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। ওই সময় এমপি খোকার পক্ষে নেতাকর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার অলিগলির সড়কগুলো। একই সঙ্গে নেতাকর্মীরা এমপি খোকাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধেও নানা শ্লোগান দেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার উন্নয়ন দেখে ইষার্ণিত হয়ে একটি মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। এমপি খোকা সোনারগাঁয়ের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি আমজনতার নেতা হিসেবে সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সোনারগাঁয়ের প্রতিটি এলাকায় তিনি উন্নয়ন করেছেন। এ কারনে তিনি আগামীতেও এই আসনে মনোনায়ন পাবেন, আর সে কারনেই এমপি খোকাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কারন তারা এত উন্নয়নের ফলে এমপি খোকার জনপ্রিয়তাকে সহ্য করতে পারছেনা।
বক্তারা বলেন, এমপি খোকা গত ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সোনারগাঁ জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটকে জেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের সাঁটানো ফলক ভাঙ্গেননি বা ভাঙ্গার নির্দেশও দেননি। অপপ্রচারকারীরা নিজেরাই ভেঙ্গে এমপি খোকাকে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে তাকে দোষারোপ করছেন। তিনি সেদিন নামফলক ভাঙ্গতে আসেননি। তিনি এসেছেন শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল সেটা নিরসন করতে। এমপি খোকা নিজের ভর্তুকি দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন, যদি শিক্ষকদের বেতনে সমস্যা হয় তাহলে সেটা এমপি দেখবেন। অথচ সেই ভাল কাজটিকে আড়াল করে এমপি খোকার বিরুদ্ধে উল্টো নানা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার শুরু হলো।
বক্তারা আরও বলেন, সোনারগাঁ জি. আর. ইনষ্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুলতান মিয়া ও গভর্ণিংবডির সদস্য দুলাল মিয়ার একটি ফোনালাপে এমপি খোকা যে নির্দোষ তা প্রমাণিত হয়েছে। মহাজোটের প্রার্থী হয়ে এমপি খোকা নির্বাচিত হয়েছেন। এমপিকে নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সোনারগাঁও পৌর জাতীয়পার্টির সভাপতি এমএ জামানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, জাতীয় যুব সংহতির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম রাজা হোসেন রাজা, আড়াইহাজার উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতি এমএ হান্নান, রূপগঞ্জ উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতি মীর আনোয়ার হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতি ও শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল, সদর উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন মোল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জাতীয়পার্টির সভাপতি কাজী মোহসীন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ, জেলা যুব সংহতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক করোনার হিরো রিপন ভাওয়াল, সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিডিআর, পৌর জাতীয়পার্টির সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম শফিক, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া, পৌর কাউন্সিলর জায়েদা আক্তার মনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ তপন, কাউন্সিলর দুলাল মিয়া, জাতীয় পার্টি নেতা মোহাম্মদ আলী, রেজাউল করিম, সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মাষ্টার প্রমূখ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সোনারগাঁ জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটকে সাঁটানো নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নামে লাগানো নাম ফলকটি কে বা কারা ভেঙে ফেলে। এ নামফলকটি ভেঙে ফেলার জন্য এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামীলীগের কিছু নেতা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে। এ নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টি ও জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ লিখিতভাবে এ অভিযোগের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথকভাবে বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা এ ঘটনার সাথে জড়িত নন উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে। অনেকেই পক্ষে বিপক্ষে মতামত দিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। কেউ বলেন আগের নাম ফলক অসম্পূর্ণ ছিল, বানানেও ভুল ছিল। তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই এটা ভাঙ্গা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ৈর গভর্নিং বডির সদস্য কাউন্সিলর দুলাল মিয়া ও অধ্যক্ষ সুলতান মিয়ার একটি অডিও কথাপোকথন ফাঁস হলে সেখানে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায় যে, এই নামফলক ভাঙ্গার সাথে এমপি খোকার কোন সম্পৃক্ততা নাই।