সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলার আওতাধীন সকল ইউনিটের কমিটি না হলেও মহানগর ছাত্রদলের সকল ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু কমিটি গঠনের বাহবা পাওয়ার চেয়ে বিতর্কিত কমিটি গঠনের কারনে নানা সমালোচনা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন শীর্ষ নেতারা। আন্দোলনরত নেতাকর্মী ও পদবঞ্চিতদের অভিযোগ এই ৪ নেতার হাতে ধ্বংসের পথে ছাত্রদল।
জেলার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে জুতা ঝাড়ু মিছিল সহ মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাকে মাদকসেবী ইয়াবাখোর আখ্যায়িত করেও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পদ বঞ্চিতরা। অর্থের লেনদেনের অভিযোগও রয়েছেই। তুমুল আন্দোলনের মুখে জেলা ছাত্রদল বেশকজনকে অব্যাহতিও দেয়।
কমিটি গঠনের পর জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা খন্ড খন্ডভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। খোদ দুটি কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিদের মাঝেও দা কুমড়া সম্পর্ক। কমিটি গঠনের মুখের ফুলঝুড়ি ছাড়া কিছুই দেখাতে পারেনি নতুন কমিটিগুলো। সম্প্রতি মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হলেও সেখানে সভাপতি ও সেক্রেটারিকে দেখা যায়নি। জেলা ও মহানগর ছাত্রদলে যখন নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড চলেই আসছে তখন জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের অনেক নেতারা এখন যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন বন্দর থানা, সদর থানা, সিদ্ধিরগঞ্জ সহ কলেজ কমিটিগুলো ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কমিটিগুলোতে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহাম্মেদের পছন্দ অগ্রাধিকার পেয়েছেন। যে কারনে সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবুর সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কমিটিতে পদ পাওয়া দুচারজন বাদে কারোরই ছাত্রত্ব নাই। অনেকের ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করে পদ ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। কলেজ কমিটিগুলোতে যাদেরকে নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে তাদের অনেকের সেই কলেজে ছাত্রত্ব নেই বলেও বিক্ষোভ মিছিলে অভিযোগ করা হয়। দুই শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে মহানগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হলেও তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। একই সঙ্গে মহানগর ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিট কমিটিগুলোর দ্এুকটি মিছিলের ছবি দেখিয়ে নেতাকর্মীরা বলছেন, এটা তো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর চেয়েও বেশি দৈন্যদশা।
একইভাবে জেলা ছাত্রদলের আংশিক কমিটির ১২ জনের মধ্যেই রয়েছে বারোটি গ্রুপ কিংবা বলয়। তাদের কারো সঙ্গেই কারো কোন সম্পর্ক নেই। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে লেগেই আছে। জেলা ছাত্রদলের বেশকটি ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদলের পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে রনির কুশপুত্তালিকাদাহ সহ নানান ধরণের অরাজনৈতিক কর্মকান্ডও করা হয়েছে। তবে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে যখন জেলা ছাত্রদলের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম সজীবকে ছাড় দিয়ে শুধুমাত্র মশিউর রহমান রনির বিরুদ্ধে টানা কর্মসূচি পালন করার কারনে। তাহলে রনির বিরুদ্ধে এসব আন্দোলনের পেছনে সজীবের হাত রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছেন নেতাকর্মীরা।
যদিও আন্দোলনের মুখে বিবাহিত তারাবো পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক থেকে রাজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। একইভাবে এসএসসি পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়ার অভিযোগে মেহেদী হাসানকেও ফতুল্লা থানা কমিটির সদস্য সচিব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর আরও ৪জন এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। নেতাকর্মীদের অভিযোগ- জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ ৪ নেতা নারায়ণগঞ্জে কমিটি গঠন করলেও বিতর্কিত কমিটি গঠন করার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রদলের রাজনীতিকে ও ছাত্রদলকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। কারন যোগ্যদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করায় আজকে অযোগ্যদের কমিটির কোন কার্যক্রম নেই।
অন্যদিকে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের কর্মকান্ডে চরম ক্ষোভ রয়েছে বিএনপির শীর্ষ পর্যাযের নেতাদের মাঝেও। যার প্রমাণ মেলেছে যারা সাহেদ আহাম্মেদকে ইয়াবাখোর নেশাখোর আখ্যায়িত করে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন সেইসব নেতাদের অনুষ্ঠানেই উপস্থিত হয়েছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশুর মত নেতারা।