সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তারাবো পৌরসভার নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দীন আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী হাসিনা গাজীর কাছে মনোনয়ন বিক্রি করে দিয়েছে বলে এমন অভিযোগ তুলে নাসিরউদ্দীনকে মারধরের চেষ্টা করেছেন তারাবো পৌর বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।
ওই সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দুলাল হোসেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে নাসির উদ্দীন ও তার সমর্থকেরা উল্টো দুলাল হোসেনের উপর চড়াও হয়। ওই সময় তারাবো পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিপন দুলাল হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, ‘তুই আমারে চিনোস? খাইয়া ফালামু কইলাম’। সমানতালে হুমকি ধমকি ও তেরে যান আলী আকবর নামে যুবদলের আরেক নেতা।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে যা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহামুদের সামনেই।
১১ জানুুয়ারি সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে জেলা বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধনে সামনের সারিতে নাসির উদ্দীনকে দাড়াতে দেখে ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন তারাবো পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা। ওই সময় তারাবো পৌর বিএনপির নেতা পিন্টু নাসির উদ্দীনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠলে দুলাল হোসেন শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনার সময় নির্বাক ছিলেন তৈমূর আলম ও মামুন মাহামুদ সহ সিনিয়র নেতারা। তারা নেতাকর্মীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি দর্শক হিসেবে দেখছিলেন।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, তারাবো পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন। তিনি ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থনকারীকে নিজের সমর্থনকারী হিসেবে দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর মনোনয়ন দাখিল করেন।
একই সমর্থনকারী দুই মেয়র প্রার্থীর হওয়ায় নাসির উদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এই ঘটনার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, নাসির উদ্দীন গোপনে সরকারি দলের প্রার্থীর সঙ্গে আতাত করে ধানের শীষ মনোনয়ন বিক্রি করে কৌশলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ওই অভিযোগ তুলেই সোমবার জেলা বিএনপির মানববন্ধনে নাসির উদ্দীনের উপর চড়াও হয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এমন পরিস্থিতি দুলাল হোসেন শান্ত করতে চাইলে নাসির উদ্দীন ও তার অনুগামী যুবদল নেতা জাকির হোসেন রিপন ও আলী আকবর দুলাল হোসেনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে দুলাল হোসেনকে হুমকি ধমকি দেন। ওই সময় তারাবো পৌর বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
তবে ঘটনা শেষে নাসির উদ্দীনের কাছে জানতে চাওয়া হয় সেখানে কি ঘটেছিল? এমনটা জানতে চাইলে তিনি অনেকটা রাগান্বিত হয়ে বলেন, দেখেননাই কি ঘটছিল?
ঘটনার সূত্রপাত কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুলাল হোসেন মানববন্ধনে নারী নেত্রীদের ধাক্কাধাক্কি করে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল। তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে সরিয়ে দিয়েছেন।
তবে ভিন্ন কথা বলেছেন নাসির উদ্দীনের অনুগামী আলী আকবর। তিনি বলেছেন, নাসির উদ্দীন ভাইকে দুলাল মানববন্ধনে এসে বলেছিল আপনি এখানে কেন দাঁড়াইছেন? তাই আমরা তাকে সরিয়ে দিয়েছি।
জাকির হোসেন রিপন বলেন, না তেমন কিছু হয়নি। আমাদের ইন্টারনাল ব্যাপার। কিছু হয়নি।
তবে দুলাল হোসেন বলেছেন, তারাবো পৌর নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নাসির উদ্দীন ধানের শীষ প্রার্থীতা আওয়ামীলীগের প্রার্থীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তারাবো পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা। তখন নেতাকর্মীরা নাসিরউদ্দীনের কাছে জানতে চাইছে আপনি এখানে দাড়াইছেন কেন? নেতাকর্মীরা নাসির উদ্দীনকে মারধরের চেষ্টা করেছিল। ওই সময় নেতাকর্মীদের মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমি শান্ত করার চেষ্টা করেছি।