সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
২৫শে ফেব্রুয়ারী ১৯৮৪ নারায়ণগঞ্জ শহর সকালে এক মুহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যে সমগ্র নারায়ণগঞ্জে নেমে এলো কালো শোকের ছায়া। যখন ছড়িয়ে পড়ল বিদ্রোহ কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাবশিষ্য, বিদ্রোহী কন্ঠস্বর স্তব্ধ হয়ে গেছে, পৌর পিতা আলী আহম্মদ চুনকা চলে গেছে না ফেরার দেশে। নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রিয় নেতা গরীব-দুঃখী, খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণ প্রিয় চুনকা ভাই আর ইহজগতে নেই (ইন্নালিল্লাি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
যে মানুষটা নারায়ণগঞ্জবাসীর দুঃসময়ে, সকলের সকল বিপদে আপদে আশার বানী শোনাতেন, শান্তনার বানী দিতেন তার মৃত্যুর সংবাদ নারায়ণগঞ্জবাসী সহজভাবে নিতে পারেনি। হতভাগার মত নারায়ণগঞ্জের মানুষের অনিশ্চিত আগামীর অপেক্ষা।
জননেতা আলী আহম্মদ চুনকার জন্ম ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৩৪ সালে এবং মৃত্যু ১৯৮৪সালে ২৫শে ফেব্রুয়ারি। পঞ্চাশ বছর বয়সে তার অকাল মৃত্যু হয়। তিনি ১৪ বছর বয়সে কিশোর চুনকা রাজনৈতিক অঙ্গনে আসেন এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর দায়িত্ব নেন।
আলী আহম্মদ চুনকা ছিলেন নারায়ণগঞ্জবাসীর সাহস ও প্রত্যয়ের অঙ্গীকার। চুনকার নামাজের জানাযায় লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে, এ ধরনের সমাবেশ আর কোন কালে কোন স্থানে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। আজ আলী আহম্মদ চুনকা সকল বিতর্কের উর্ধ্বে। বহু অপবাদ সহ্য করে লোভ লালসার উর্ধ্বে থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন যুগের পর যুগ। রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন কালের সাক্ষী।
শত প্রলোভনকে উপেক্ষা করে বিরোধী ভুমিকা পালন করেছেন। তৎকালীন সময়ে নগর পিতা নিঃস্বার্থভাবে জনগণের জন্য এবং আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গিয়েছেন নিরলসভাবে। তবু জনগণের সাথে নারায়ণগঞ্জবাসীর সাথে বেঈমানী করেননি, আপোস করেননি কারোর সাথে।
মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে শোনা যায় তার দলীয় নেত্রী নাজমা রহমানকে বারংবার বলেছেন ‘ওদের বলিস আমার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তবে যেন ক্ষমা করে দেয়।’ আলী আহম্মদ
চুনকা নারায়ণগঞ্জ জেলার দেওভোগ এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম ওয়াজেদ আলী স্বচ্ছল ছিলেন না বিধায় আলী আহম্মদ চুনকা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি।
১৯৬২ সালে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় দেওভোগ ইউনিয়নের বিডি মেম্বার নির্বাচিত হন তিনি। এ থেকে রাজনীতি শুরু। তারও আগে ১৯৪৮ সালের দিকে খান সাহেব ওসমান আলীর সানিধ্যে থেকে রাজনৈতিক মেধার চর্চা শুরু করেন।
লেখক: নুসরাত আহমেদ