শীর্ষ নেতাদের নিয়ে রনির মন্তব্য: বিএনপিতে উত্তাপ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনি। ওই বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ছাত্রদলের রাজনীতিতেও বাড়ছে নানা বিতর্ক। প্রকাশ্যে মিডিয়াতে জেলা বিএনপির শীর্ষ ও ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের দিকে অভিযোগের ইঙ্গিত তুলে সমালোচনা হচ্ছেন মশিউর রহমান রনি।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে মশিউর রহমান রনির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে থাকতেন শাহজাহান মিয়া, জুয়েল আরমান, সাগর সিদ্দিকী, আরিফুর রহমানের মত বেশকজন ছাত্রদল নেতা। ছাত্রদলের ক্রাইটেরিয়ার কারনে অনেকের ছাত্রদলের রাজনীতিতে ঠাই মিলেনি। কমিটি হওয়ার আগেই এদের কারো কারো সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন রনি। যাদের মধ্যে অন্যতম সাগর সিদ্দিকী যেখানে বাকিরা মিউয়ে গেছে অনেক আগেই।

মুলত ফতুল্লা থানা সহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পর পদবঞ্চিতরা রনির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। যে আন্দোলনের ফলে ছাত্রদলের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে তারাবো কমিটি ও ফতুল্লা থানা কমিটির শীর্ষ পদে থাকা দুইজনকে অব্যাহতিও দেন। কিন্তু তাতেও থেমে থাকেনি পদবঞ্চিতদের আন্দোলন। যে আন্দোলনের নেতৃত্বে দিচ্ছেন সাগর সিদ্দিকী। জুতা ঝাড়ু মিছিল সহ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়। এসব আন্দোলনের ফলে এখন ব্যক্তিগতভাবে একজন আরেকজনকে হেয় করতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে।

যার ফলশ্রুতিতে ফতুল্লায় ছাত্রদলের পাল্টা বিদ্রোহী কমিটি ঘোষণা করেছেন পদবঞ্চিত ও আন্দোলনকারীরা। যে কমিটির ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রুহুল আমিন সিকদার ও জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মিয়া মেম্বার।

রনির বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের পেছনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা বিএনপির সদস্য মোশারফ হোসেন ও রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর দিকে ইঙ্গিত করে মিডিয়াতে মন্তব্য করেছেন রনি এমন অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। একইভাবে পদবঞ্চিত ও আন্দোলনাকারীদের বিরুদ্ধেও নানান মন্তব্য করেছেন রনি। এ বিষয়ে রনিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে থাকা সাগর সিদ্দিকী।

রনির সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে জেলা বিএনপির সদস্য মাহমুদুর রহমান সুমনের। রনির কর্মকান্ডের জন্য মাহমুদুর রহমান সুমনকে দায়ী করেছেন সাগর সিদ্দিকী। মাহমুদুর রহমান সুমনকে নিয়ে নানা কটুক্তিও করেছেন সাগর সিদ্দিকী।

এসব বিষয়ে রনিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন সাগর সিদ্দিকী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রনিকে ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী- সেবী, অর্থলোভী মন্তব্য করেন সাগর।

সাগর সিদ্দিকী তার ফেসবুকে লিখেন, সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক দুইজন সফল সংগঠক নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মোশারফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের নির্বাচিত সাবেক ভিপি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের তৃনমূল নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে সদ্য ঘোষিত ফতুল্লা থানা তৃনমূল ছাত্রদলের আহব্বায়ক কমিটির ব্যাপারে ওনাদের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। ছাত্রদলের সাংগঠনিক নীতিমালা অনুযায়ী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।

প্রিয় দুই অবিভাবককে অসংখ্য ধন্যবাদ দলের তৃনমূলের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষন ও দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য। পক্ষান্তরে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদকে নিয়ে ২০০৭ সালের ডাকাতি মামলার আসামী রনি সাংবাদিকদের নিকট যে মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ন কাল্পনিক, ভিত্তিহীন, বানোয়াট। নিজেকে জাহির করার জন্য এবং বিএনপির রাজনীতিতে আড়াইহাজারের সুমনকে খুশী করার জন্যই নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা বলে বেড়াচ্ছে এক সময়কার ডাকাত জেলা ছাত্রদল সভাপতি রনি।

অপরদিকে আমি সাগর সিদ্দিকী দেখেছি জেলা ছাত্রদল সভাপতি রনি জেলা ছাত্রদল কমিটি হওয়ার পূর্বে কমিটিতে স্থান পেতে ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে নজরুল ইসলাম আজাদের পায়ে ধরে বসেছিলো রনি এবং পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদে ভিতরে প্রবেশ করে পবিত্র কোরআান শরিফ স্পর্শ করে আর কখনো ভুল করবেনা এবং তার কথার অবাধ্য হবেনা বলে অঙ্গিকার করে।

মাহামুদুর রহমান সুমনকে নিয়ে কটুক্তি করে সাগর সিদ্দিকী লিখেন, জেলা কমিটি হওয়ার পর রনি আড়াইহাজারের (…) সুমনের রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে সে নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্বে নানা বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে কুলিয়ে উঠতে না পেরে সুৃমন রনিকে এজেন্ডা হিসেবে ব্যবহার করছে।

জেলা ছাত্রদল সভাপতি মশিউর রহমান রনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টার মতই নিজের অপকর্ম ঢাকতে প্রকৃত সত্যকে পাশ কাটিয়ে মিথ্যার আশ্র‍য় নিয়ে ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকে গণমাধ্যমে বিভিন্ন নোংরা ও শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। তার প্রতি আহবান রইলো কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে আরো মার্জিত, শিষ্টাচারীও সতর্কতালম্বন হওয়ার চেষ্টা করুন। তার মনে রাখা উচিত রাজনীতি তাদের পিতা-পুত্রের সম্পত্তি না।

‘রনি সবাইকে আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বলে। অথচ সে নিজেই আওয়ামী পরিবারের সন্তান। এনায়েতনগর আওয়ামীলীগ শির্ষ নেতা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মতি প্রধান সহ জেলা ও মহানগরের শীর্ষস্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতার নিকটাত্মীয় রনিকে আওয়ামী পরিবারের সন্তান বলেই জানেন সবাই। শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত আক্রমনের উদ্দেশ্যে কারো সম্পর্কে প্রমাণ ছাড়া এভাবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে আমার সাগর সিদ্দিকীর মুখোমুখি হোন।তখোন প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিবো এবং আপনার কমিটির বাবুর্চি,হোটেল বয়,অছাত্র,মাদক ব্যবসায়ী-সেবী, বিবাহীতদের তথ্য প্রমাণ সহ সাংবাদিক ভাইদের নিকট উপস্থাপন করবো। সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।’