সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন,‘ ৩/৪দিন যাবত নারায়ণগঞ্জে একই মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আজকে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেখলাম হুজুররা ক্ষেপছে। আরেকদিন দেখি হিন্দুরা ক্ষেপছে। এখন যদি আমিও কিছু বলি, তাহলে জিনিসটা খারাপ দেখায়। সবই ঠিকই হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। হাতে কয়েকটা দিন সময় আছে। অবশ্যই একদিন সুন্দর হবে সবকিছু।
১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লার ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে আরজিয়ান ওসমান চ্যালেঞ্জ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনলাম খেলা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটুর সভাপতিত্বে ও ইসদাইর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে বন্দরের সিরাউদ্দৌলা ক্লাব’র জয় এবং আয়োজন প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ‘আজকের খেলা ট্রাইবেকার হবে আশা করেছি। কারণ, ট্রাইবেকার হলে মজা লাগে। আজকে বন্দরের যারা খেলেছেন তারা জিতেছে। বন্দর জেতার কারণ আছে। এ কারণে বন্দর জিতেছে যে, সিরাউদ্দৌলা ক্লাব বন্দরে সেখানে আমার বাবার সিট ছিল। আমার নাতির বড় বাবার সিট বন্দর। আসলে ফুটবল ফুটবলই। এর উপর খেলা হয় না। সময় অল্প লাগে, কিন্তু খেলাটা খুব মজা লাগে। আগে একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল খেলা, টিটুকে ধন্যবাদ একটার পর একটা প্রত্যেকটা খেলা হচ্ছে এখন। আমরা কিছু পাচ্ছিলাম না। বর্তমানে একেএম সামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স হয়েছে, খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম আছে’।
ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয় বন্ধন ফুটবল কোচিং সেন্টার ও সিরাউদ্দৌলা ক্লাবের মধ্যে। খেলায় বন্ধন ফুটবল কোচিং সেন্টারকে ১-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয় বন্দরের সিরাউদ্দৌলা ক্লাব।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার সভাপতি সালমা ওসমান লিপি ও রাইফেল ক্লাবের খেলাধুলা বিষয়ক সম্পাদক ইমতিনান ওসমান অয়ন’র উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তারা উপস্থিত ছিলেন না।
সেই প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ভয় পাইছিলাম স্ত্রীর করোনা হলো নাকি, টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। দোয়া করবেন সবাই আমার স্ত্রীর জন্য, সামান্য জ্বর আছে। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। আমার নাতির জন্য দোয়া করবেন, যাতে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে খুশি ও মানুষের জন্য কাজ করতে পারে। মানুষ তো হাত পা হলেই মানুষ হয় না, মানুষের গুণের মধ্যেই মানুষ হয়। সেই গুনের মতো যাতে হতে পারে আরজিয়ান ওসমান সে জন্য দোয়া করবেন’।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, ‘করোনাকালে সব শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়ে বসবো। ৯৮ থেকে শুরু করেছি কাজ। আমরা যখন শিশু মাতৃকল্যাণ সংস্থা করি, তখন স্পটে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, নারায়ণগঞ্জে হাসপাতাল দেয়ার জন্য। আরপি সাহার আমাদের সম্পর্কের মাসি জয়ত্রী উনারা রাজি হয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তন হলো। বর্তমানে তারা মেডিক্যাল রিসার্চ ইন্সটিটিউট করছেন, পরশুদিন প্রধানমন্ত্রী ওপেনিং করবেন। আমি খুশি বাকি সব কাজও চলে এসেছে। আমাদের সরকারী মেডিক্যাল কলেজ দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় চলে এসেছে। যে কাজ এসেছে সেগুলো যাতে সঠিক ভাবে হয়। কে বিএনপি, কে আওয়ামী লীগ, কে জাতীয় পার্টি তা না দেখে, সবাই মিলে যদি একসাথে বসতে পারি, নারায়ণগঞ্জ ঢাকার চেয়ে ইমপরটেন্ট শহরে পরিণত করতে পারবো’।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ‘একটা মানুষকে দরকার তার জন্য দোয়া করবেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চারদিকে নোংরা খেলা হচ্ছে, দেশকে ধ্বংস করার খেলা হচ্ছে। ক্ষমতার পরিবর্তনে নয়, দেশ ধ্বংসের খেলা হচ্ছে। আফগানিস্তানের মতো করতে চাইছে তারা। বিদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা প্রবেশ করছে। এর মধ্যে আমাদের মধ্যে এবং দেশের বাহিরের লোকও আছে। আমার সময় হয়ে গেছে ৫-১০ বাঁচবো বয়স হয়ে যাবে। পরবর্তী জেনারেশন তাদের জন্য ভালো রাখতে হবে। দেশকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য একজনকে লাগবে প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি নিজের স্বপ্নকে জলাঞ্জলী দিয়ে বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন’।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, ‘আমরা সবসময় যা নাই সেটির দিকে আমরা বেশি জোড় দিয়েছি। সেজন্য সবসময় সার্বিক সহযোগীতায় ওসমান পরিবারের দুই সংসদ সদস্যই সহযোগীতা করেছে। সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ জয়কে তার কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। এজন্য যে তাকে রিকুয়েস্ট করার ১ মাসের মধ্যে, উনি বাহিরের স্টেডিয়াম করে দিয়েছি। মন্ত্রীত্বে নাই কিন্তু জেলা ক্রীড়া সংস্থা আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। আমরা প্রতিমন্ত্রী কাছে মাননীয় এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে ইনডোর স্টেডিয়ামের জন্য যে দাবি করেছিলাম, সেই প্রেক্ষিতে গত তিনদিন আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে আমাকে ফোন দিয়েছিল। সেখানে মাননীয় এমপি মহোদয়ের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল এবং এমপি প্রতিমন্ত্রীকে খুব করে বলেছিল বিধায়, ফোন দিয়ে আমাকে জানিয়েছে অতি জরুরি তালিকায় নারায়ণগঞ্জের ইনডোর স্টেডিয়াম দিয়েছেন, এবং অতি শীগ্রই ইনডোর স্টেডিয়ামের কার্যক্রম জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে শুরু হবে। আমরা চাইছি পূর্ণাঙ্গ কমপ্লেক্স তৈরি করতে। যেখানে ফুটবল ক্রিকেটের সাথে যেন কনফ্লিক্ট না করে, ক্রিকেট ফুটবলের যেন কনফ্লিক্ট না করে, বলিবল খেলা হলে যেন কোন খেলা বন্ধ না করতে হয়। সর্বপরি কোন খেলা যেন অন্য খেলার জন্য ব্যাহত না হয়। সে লক্ষ্যে কমপ্লেক্স সাজাতে চাই। আমরা নারায়ণগঞ্জে খেলাধুলার আয়োজন করি, কিন্তু প্রচার হয় না। প্রচার ছাড়া আমাদের অর্জনগুলো পৌঁছানোর উপায় নেই আপনাদের ছাড়া’।
অনুষ্ঠানে জেলা মানবাধিকার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ লাভলু, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, নীট কনসার্ণ গ্রুপের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম মোল্লাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।