সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, স্বাধীনতা-সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত প্রয়াত জননেতা একেএম শামসুজ্জোহার ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকীকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী সমাজ।
২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে মাসদাইর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছেন কয়েক’শ আইনজীবী। ওই সময় দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণে দেখা গেছে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও বর্তমান সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান সহ সিনিয়র অনেক আইনজীবী।
এর আগে শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি প্রয়াত এই ভাষা সৈনিকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এই সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বিদ্যুত কুমার সাহা, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বরুণ চন্দ্র দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, আপ্যায়ণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভুঁইয়া, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মমিন সহ কার্যকরী পরিষদের সকল আইনজীবী নেতা ও অন্যান্য আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, স্বাধীনতা-সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষাসৈনিক ও স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত প্রয়াত জননেতা একেএম শামসুজ্জোহার ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ২০ ফেব্রুয়ারি। তিনি ছিলেন একাধারে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদের সদস্য ও স্বাধীনতা-পরবর্তী জাতীয় সংসদ সদস্য। মরহুম একেএম সামসুজ্জোহা এদেশের অন্যতম ঐহিত্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্ম নেন। তার বাবা মরহুম জননেতা খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন একজন ভাষাসৈনিক, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক এমএনএ। ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারের আদি নিবাস নারায়ণগঞ্জের ‘বায়তুল আমান ভবন’ আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থী শিবিরে একেএম সামসুজ্জোহা ‘ত্রাণবন্ধু’ নামে পরিচিত ছিলেন। প্রয়াত এই জননেতা সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ওইদিন অপরাহ্নে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। প্রয়াত শামসুজ্জোহার সহধর্র্মিণী ও রত্নগর্ভা নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষাসৈনিক। তার বড় ছেলে প্রয়াত জননেতা ও সাবেক এমপি নাসিম ওসমান, মেজো ছেলে বিএমইএ’র সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি ও ছোট ছেলে একেএম শামীম ওসমান। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রয়াত সামসুজ্জোহাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।
মরহুম ভাষা সৈনিক সামসুজ্জোহার তিন ছেলে স্বাধীন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য হওয়ার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। মরহুমের বড় ছেলে প্রয়াত নাসিম ওসমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের চারবারের এমপি। তার মেঝো ছেলে সেলিম ওসমান ও ছোটে ছেলে শামীম ওসমান তিনবারের এমপি। একই পরিবারের তিন সন্তান জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিত্বকারী বিরল পরিবারের একটি এই সামসুজ্জোহার পরিবার।