সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জেলা পুলিশ ও নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রীতি ফুটবল খেলায় হ্যাট্রিক করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। তার হ্যাট্রিক গোলে ৯-৭ গোলে জেলা পুুলিশের কাছে পরাজিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব। তবে খেলায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব দলের গোলরক্ষক দৈনিক সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক আবু আল আমিন খান মিঠু একাধিক নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পক্ষে তার খেলাই ছিল সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দিত। নতুবা গোলের সংখ্যা আরও ৯ থেকে ১০টি বাড়তো। তিনি পেশাদার গোলরক্ষকের মতই ঝাঁপিয়ে পড়ে একাধিক গোল ঠেকিয়েছেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ পুুলিশ লাইন মাঠে অনুষ্ঠিত খেলায় পুলিশ সুপার একাদশের বিপক্ষে ৯-৭ গোলে হেরেছে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব একাদশ। তবে মাঠের খেলায় হার-জিত থাকলেও খেলায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা রেঞ্জের জিআইটি চৌধুরী আব্দুুল্লাহ আল মামুন নিজেও স্বীকার করেছেন। এ খেলায় প্রেস ক্লাব দলের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে খেলেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম ও জেলা পুলিশের দলের অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। খেলায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ছাড়াও অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী হ্যাট্রিক করেন।
খেলায় প্রেস ক্লাবের দলের অধিনায়ক মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাফিজ আশরাফ, হাসানুজ্জামান শামীম, ইউসুফ আলী এটম, আবু সাউদ আল মাসুদ, আরিফ আলম দিপু, আব্দুস সালাম, শরীফ উদ্দিন সবুজ, রফিকুল ইসলাম রফিক, শফিউদ্দিন বিটু, আফজাল হোসেন পন্টি, আহসান সাদিক শাওন, বিল্লাল হোসেন রবিন, আবু আল আমিন খান মিঠু, প্রণব কৃষ্ণ রায়, শফিকুল ইসলাম, মজিবুল হক পলাশ, নাহিদ আজাদ সবাই খেলায় লড়াই করেছেন এবং তারা সাতটি গোল করতে সক্ষম হলেও ৯-৭ গোলে পুুলিশ সুপারের দলের কাছে পরাজিত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পক্ষে হ্যাট্রিক করেছেন শফিউদ্দিন বিটু। বেশকটি প্রতিপক্ষের দুর্দান্ত শট ঠেকিয়ে নিজের মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন সাংবাদিক মিঠু। মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাফিজ আশরাফ, শরীফ উদ্দিন সবুজ, রফিকুল ইসলাম রফিক, পলাশ কিংবা পন্টি সবাই পায়ে বল পেয়েই ভুগিয়েছেন প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়ারদের।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আসলে আজকের এই খেলাটি কোন প্রতিযোগিতা নয়, একটি সুন্দর সম্পর্ক ও আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ। এতে সকলেই মজা ও আনন্দ পেয়েছে। এটি পুলিশের সাথে সকল কমিউনিটির দৃঢ় মিলবন্ধন তৈরির প্রয়াস। নারায়ণগঞ্জবাসীর সাথে পুলিশের যে চমৎকার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তা অটুট থাকবে। নারায়ণগঞ্জে পুলিশের উপর মানুষের আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সুপারের মতো এমন অফিসাররাই আগামী দিনে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব একাদশের অধিনায়ক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ‘এমন আয়োজন অদ্ভুত সুন্দর। পুলিশ সুপারের আয়োজন হলেও আমরা বিনোদনের সুযোগ পেলাম। তাঁর দক্ষতায় শুধু এমন আয়োজনেই নয়, বিভিন্ন কর্মকান্ডে চিত্র বদলে যাচ্ছে। নগরী থেকে ফুটপাত উচ্ছেদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নেয়া উদ্যোগে তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন। প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে যে জুয়ার আসর বসতো তাও তিনি উচ্ছেদ করেছেন। দলীয় প্রভাবের উর্ধ্বে উঠে কাজ করলে যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থাকে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন তিনি।’
শুভেচ্ছা বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, খেলাধুলায় শরীর ও মন ভালো থাকে। পুলিশ সুপারের কিছু পদক্ষেপ নারায়ণগঞ্জে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তিনি অবৈধভাবে ফুটপাত দখল রোধে, অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে এবং জুয়ার আসরে হানা দিয়ে প্রভাবশালীদের উচ্ছেদ করেছেন। এসব প্রভাবশালীদের উচ্ছেদ করতে তিনি দ্বিধাবোধ করেননি। এটি সত্যিই কৃতিত্বের দাবিদার। ফরমালিনযুক্ত খাবার বিক্রি বন্ধে আমি তার কাছে কিছু পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম এন্ড এ্যাডমিন) মোহাম্মদ আবু কালাম সিদ্দিক, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপস্ এন্ড ইন্টেলিজেন্স) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের খেলোয়ারদের মাঝে অতিথিরা ক্রেস্ট, মেডেল, ট্রফি তুলে দেন।