সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবার ওসমান পরিবার। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরিবার যার দিকে সুদৃষ্টি দিচ্ছে তারই ভাগ্য খুলছে। তাদের আশীবার্দ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে জনপ্রতিনিধির চেয়ারে বসা দূরহ ব্যাপার। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগের ৭জন নেতা জনপ্রতিনিধির চেয়ারে বসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারন নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সদস্য এমপি একেএম সেলিম ওসমান যখন ৭জন নেতাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তখন সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
যদিও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদটি দখলে নেই ওসমান পরিবারের। যেখানে তাদের অনুগত কাউকে বসানোর চেষ্টা চলছে দুই টার্ম ধরে। প্রথমবার ২০১১ সালে ধাক্কা খেয়েছেন খোদ ওসমান পরিবারের আরেক সদস্য এমপি একেএম শামীম ওসমান নিজেই। তবে সেই দকল কাটিয়ে ওঠতে পারেনি তারা। যদিও এবার আটসাট বেধেই মাঠে নেমেছেন ওসমান পরিবারের অনুগামী নেতারা।
তবে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদটি নিয়ন্ত্রণে না আসলেও এ পদে লড়াইয়ে নামিয়ে মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানানোর পেছনের কলকাঠি ওসমান পরিবারেরই। গত নির্বাচনে মেয়র পদে তাকে নিয়ে নৌকার লড়াইয়ে নেমেছিল ওসমান পরিবার। মেয়র পদে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীকে মনোনয়ন দিয়ে আনোয়ার হোসেনকে বসানো হয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে। তবে এবারও সে রকম কিছু ঘটনার সম্ভাবনা।
জানাগেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নে উন্নয়ন বিষয়ক এক সমাবেশে বক্তব্য রেখেছিলেন এমপি একেএম সেলিম ওসমান। যেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে দেখতে চান বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
ওই অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান বলেছেন, চন্দনশীল, বাদল, খোকন সাহা সন্তানের মতো। নিজাম, হেলাল, সাজনু, নিপু অনেক সময় তারা পার করেছে। শামীম ওসমান সংসদ সদস্য হতে পারলে তারাও পারবে। বাদলকে আগামীতে সিটি কর্পোরেমনের মেয়র নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছি।
এদের মধ্যে আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, অ্যাডভোকেট খোকন সাহা মহানগর আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি, চন্দন শীল মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, জাকিরুল আলম হেলাল মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, শাহনিজাম মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক, শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া সাজুন শহর যুবলীগের সভাপতি ও এহসানুল হাসান নিপু জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
জেলা পরিষদের গত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মাঠে আলোচনায় ছিলেন চন্দন শীল। কিন্তু আনোয়ার হোসেনের কারনে সেই সুযোগ তার আসেনি। নারায়ণগঞ্জ-৩ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক চেয়ে গত নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন খোকন সাহা।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে শহীদ বাদল ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে বাদলের সহধর্মিনী নাহিদা সুলতানাও মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন। যদিও ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন ও শহীদ বাদল চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে হেরেছিলেন।
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাকিরুল আলম হেলাল ও শাহনিজাম বেশ আলোচনায় ছিলেন। যদিও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার মামলায় বর্তমানে সেই বিএনপি নেতা আজাদ বিশ্বাসই চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন!
শাহাদাত হোসেন সাজনু সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে হেরেছিলেন বিএনপি নেতা শওকত হাশেম শকুর কাছে। তবে এহসানুল হাসান নিপু এখনও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।