সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে মাদক সন্ত্রাস ভূমিদস্যূ ঘুষ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন দেশব্যাপী আলোচিত আওয়ামীলীগ নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, সাধারণ মানুষ শান্তি চায়। সাধারণ মানুষ মাদক ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাঁচতে চায়। সাধারণ মানুষ ভূমিদস্যূদের হাত থেকে বাঁচতে চায়। সাধারণ মানুষ অন্যায় অত্যাচার থেকে বাঁচতে চায়। আমাদের মেয়েরা ইভটিজিং ্এর হাত থেকে বাঁচতে চায়।
শামীম ওসমান বলেন, আমাদের দলের মাঝেও ভাল খারাপ আছে। পুুলিশের মাঝেও ভাল খারাপ আছে। মসজিদের ইমামদের মাঝেও ভাল খারাপ আছে। আপনারা ভয় পাবেন না। এর মধ্যেই আমাদের লড়াই করতে হবে। আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি, মাদক সন্ত্রাস ইভটিজিং ভূমিদস্যূ খারাপ কাজ, মানুষের উপর জুলুম যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম।
২ মার্চ শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেলগেট এলাকায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন, মাদক সন্ত্রাস ভূমিদস্যূ নির্মূলে শামীম ওসমানের নিজের আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের শেষ সময়। কদিন বাঁচবো জানি না। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা কথায় কথায় বলেন এটা পুলিশের দায়িত্ব। এটা প্রশাসনের দায়িত্ব। নো, নো, এটা তাদের একার দায়িত্ব না। এটার দায়িত্ব হচ্ছে সবার আগে আওয়ামীলীগের দায়িত্ব। এই নারায়ণগঞ্জকে সম্মান দিয়েছেন আমার নেত্রী। তাই জনগণের পাশে দাড়াতে আওয়ামীলীগকে। জনগণকে বলতে হবে, জনগণ আমরা আপনাদের পাশে আছি। কোন অন্যায় অত্যাচার হলে আমরা তার প্রতিরোধ গড়ে তুলব। আমাদেরকে সহযোগীতা করবেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ র্যাব বিজিবি জেলা প্রশাসন, জজ ম্যাজিস্ট্রেট আইনের মাধ্যমে বিচার করবেন। পরিস্কারভাবে জানাতে চাই জীবনের শেষ সময়ে বলতে চাই, আমাদের বয়স বাড়ছে কিন্তু সাহস কমে নাই। আমরা লড়াই করতে চাই। সেই লড়াই হবে সুশাসনের পক্ষে লড়াই।
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগে ভন্ড নেতা রয়েছে বলে দাবি করে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, সিএস আরএস পর্চা দেখে আওয়ামীলীগ করান। খন্দকার মোস্তাকদের আওয়ামীলীগ করতে দিয়েন না। ইউটিউবে নাকি জামাতের সাথে কোন নেতা নেত্রীর কথা ভাইরাল হয়। আমার ভাই ইউটিউবও নাই ফেসবুকও নাই। আমার ফেসও নাই, বুকও নাই। আমার জীবনেও ফেসবুক কি জিনিস আমি বুঝিনা দেখি নাই। আপনারা ফেসবুক দেখেন, কার সাথে নাকি কার কানেকশন। জামায়াতের সাথে নাকি কার কানেকশন ইউটিউব ফেসবুকে ভাইরাল হইছে।’
তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া ও জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের প্রসংশা করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আমি মনে করি সারাদেশের মধ্যে বেস্ট জেলা প্রশাসক। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার এই কয়দিন ধরে আসছে। পরপর তিন বার পুরস্কার পেয়েছেন বেস্ট পুুলিশ সুপার হিসেবে। তিনি কিসে কাজ করছেন। তিনি কাজ করছেন মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। অথচ একটি পত্রিকায় লিখছে আজকে নাকি পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলব? ওই লোকাল পত্রিকা গোয়েন্দা সংস্থার উদ্বৃত্ত দিয়ে নিউজ করছে আজকে নাকি পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলব।
তিনি বলেন, আমি আইন শৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা। আমরা আইন প্রেণতা। আমি আইনের ছাত্র। যদিও কোন পত্রিকায় বলা হয় দুইটা গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে আজকে নাকি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ পুলিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করবে। আগামী আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ এটা উত্থাপন করা হবে।
এমপি শামীম ওসমান ওই জনসভার সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই, সেক্রেটারি আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সেক্রেটারি খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, সেক্রেটারি এম শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি ইয়াসিন মিয়া, সোনারগাঁও থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, শেখ সাফায়েত আলম সানি, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আজিজুর রহমান আজিদ ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রধান প্রমুখ।
বিকেল ৩টা থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগদান করেন। নেতাকর্মীদের আগমনে সভা স্থল থেকে চাষাড়া পর্যন্ত জমায়েত হয়। শামীম ওসমানের ডাকা এই সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের কঠোর নিরাপতা বেষ্টনী দেখা যায়। সাজোয়া জান, আর্ম পুলিশ কার, জলকামান নিয়ে ডিবি পুলিশের বেশকটি টিম দায়িত্ব পালন করেছেন।