সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
র্যাব-১১ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জে এক মাদক ব্যবসায়ীর অভিনব কায়দায় পেটের ভিতর থেকে ইয়াবা পাচারের সময় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আটক করে তার পেটের ভেতর থেকে ১ হাজার ৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। ৮ মার্চ সোমবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।
তিনি জানান, গোপনসূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৭ মার্চ রবিবার সকাল ৯টায় র্যাব-১১, সিপিএসসি’র মাদক বিরোধী অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন মদনপুরস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থিত রাফি ফিলিং স্টেশন এর সামনে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বাস হতে রমজান শেখ নামক এক মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে রমজান শেখ’কে হাসপাতালে নিয়ে তার পেটের ভিতর হতে ১০৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কায়দায় পেটের ভিতর ইয়াবা ঢুকিয়ে টেকনাফ থেকে বাসযোগে ঢাকায় এসে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবার চালান পৌঁছে দিয়ে আসছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর থানাধীন আন্দারমানিক গ্রামের মোঃ আলম শেখের ছেলে।
গোপনসূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীর একজন ইয়াবা পাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কৌশলে বাসযোগে ইয়াবা পাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ০৭ মার্চ উক্ত ইয়াবা পাচারকারী একই কৌশলে টেকনাফ হতে বাসযোগে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন মদনপুরস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থিত রাফি ফিলিং স্টেশন এর সামনে পাকা রাস্তার উপর চেকপোষ্ট স্থাপন করে। চেকপোষ্টে গাড়ী থামিয়ে তলাশীকালে টেকনাফ হতে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে সন্দিগ্ধ হিসেবে রমজান শেখকে আটক করা হয়।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কথা ও আচরণে অসংলগ্নতা এবং অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেলেও ইয়াবা পাচারের বিষয়ে সে অস্বীকার করে। অতঃপর গোপনসূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী তার পেটের ভিতর ইয়াবা রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আলিফ ডক্টরস চেম্বার এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করে দেখা যায় তার পেটের ভিতর অসংখ্য ডিম্বাকৃতির বস্তু বিশেষ রয়েছে।
উক্ত ঘটনার সত্যতা অধিকতর যাচাইয়ের নিমিত্তে নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানাধীন জেনারেল হাসপাতাল ভিক্টোরিয়া এর অবজারভেশন ওয়ার্ডের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত রমজান শেখ স্বীকার করে যে তার পেটের ভিতর কালো টেপ দিয়ে মোড়ানো ছোট ছোট ২১টি ইয়াবার পোটলা রয়েছে যার প্রত্যেকটিতে ৫০ পিস করে মোট ১০৫০ পিস ইয়াবা রয়েছে।
সে আরও স্বীকার করে যে, টেকনাফে এই ইয়াবার পোটলাগুলো সে খাবারের সাথে গিলে খায় এবং কলা এবং পাউরুটি খেয়ে সেই পোটলাগুলো পায়ু পথ দিয়ে বের করে। অতঃপর তাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তারের চিকিৎসা প্রদানের পর হাসপাতালের টয়লেটে গিয়ে তার পায়ু পথ দিয়ে কালো টেপ দ্বারা মোড়ানো ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির ২১টি পোটলা বের করে দেয়।
উক্ত পোটলাগুলো হতে প্রত্যেকটিতে ৫০ পিস করে মোট ১০৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামী দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত এবং এভাবে অভিনব কৌশলে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় মাদকদ্রব্য ইয়াবা বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।