সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। তবে ভোটের আগেই তিনি এলাকা ছাড়া। নির্বাচনে তিনি তার মনোনয়ন পত্র আড়াইহাজারের নির্বাচন কমিশন বরাবর দাখিল করতে পারেননি। সংঘর্ষের আশংকায় তিনি তার মনোনয়ন পত্র নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরাবর দাখিল করেছেন।
৪ মার্চ মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে এসে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। এ সময় তার সঙ্গে মাত্র গুটিয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তবে একই সময়ে আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজালাল মিয়া মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। মুলত শাহজালাল মিয়া স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর ঘনিষ্ঠজন এবং মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার হলেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের অনুগামী হিসেবে রাজনীতি করছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেলো সরকার এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে গিয়ে ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেছিলেন। নৌকা প্রতীকে পেলেও মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি আবদুর রশিদ ভূইয়া সহ শীর্ষ নেতাদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না।
আড়াইহাজার রেখে আপনি নারায়ণগঞ্জে এসে মনোনয়ন দাখিল করলেন কেন আপনি কি কোন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানতে চাইলে হেলো সরকার বলেন, আমি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে লড়াই করেছি।. এরশাদের সঙ্গে লড়াই করেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ঢাকার রাজপথে প্রথম আমি মিছিল করেছি। আমি আবার কাকে ভয় পাবো? আমি কাউকে ভয় পাই নাই। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। তিনি এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে গিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের জন্য মনোনয়ন চেয়ে কাজ করেছিলেন। শুধু তাই নয় নজরুল ইসলাম বাবুর বিরোধী সরাসরি বক্তব্যও রেখেছিলেন হেলো সরকার।
এবারের নির্বাচনে নজরুল ইসলাম বাবু চেয়েছিলেন বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজাহাল মিয়াকে। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল হেলো সরকারের পক্ষে সুপারিশ করে কেন্দ্রে নাম পাঠায়। ফলে এখানে মনোনয়ন ইকবাল পারভেজের ঘনিষ্টজন পান হেলো সরকার। তার মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে কাজ করেছিলেন ইকবাল পারভেজ।
আরও জানাগেছে, এর আগে আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ করেছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের চার নেতা। দলটি থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছে নৌকার মাঝি। মনোনয়ন পেতে লবিং করে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজালাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ ভূঁইয়া, থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঞা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন ও উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হোলো সরকার।
অন্যদিকে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছেন স্থানীয় নজরুল ইসলাম বাবুর ভাগিনা ও থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন মোল্লা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম শরীফ। তবে আওয়ামীলীগ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ঝর্ণা রহমানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন মনোনয়ন দিবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামীলীগ। ফলে এ দুটি পদে একাধিক প্রার্থী থাকতে পারবেন।