সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদলের বিপদে আপদে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, আমি মনে করি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য হলো হোসিয়ারী শিল্প। এ হোসিয়ারী শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে শ্রমিক ইউনিয়ন, হোসিয়ারী শ্রমিক ইউনিয়নের সকল শ্রমিকেরা। আমি কথা দিতে পারি প্রয়াত শ্রমিক নেতা নজরুল ভাই যেমন সব সময় শ্রমিকদের বিপদে আপদে পাশে থাকতেন, যদি আপনারা আমার সরনাপন্ন হন আমিও আপনাদের বিপদে আপদে নজরুল ভাইয়ের মত পাশে থাকব।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই আইনজীবী নেতা আরও বলেন, নজরুল ভাই একজন অত্যন্ত অমায়িক ব্যবহারের লোক ছিলেন। এটা আপনারাই আমার চেয়ে ভাল জানেন। উনার মধ্যে কোন অহংকার ছিলনা। উনার সাথে দেখা হলে সব সময় উনি সবার আগে সালাম দিতেন। উনাকে আমি কোন সময় রাগ করতে দেখি নাই। আমি আমার কলেজের শিক্ষা জীবন থেকেই নজরুল ভাইকে চিনি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে এই নজরুল ভাই শ্রমিকদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
৪ মার্চ সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের হোসিয়ারী শ্রমিক ইউনিয়নের মিলনায়তনের সামনে জাতীয়তাবাদী হোসিয়ারী শ্রমিক দলের উদ্যোগে প্রয়াত নজরুল ইসলাম স্মরণে আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই আইনজীবী নেতা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী হোসিয়ারী শ্রমিকদলের সভাপতি আবদুল মতিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের সংগঠিত করে এই নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন নজরুল ইসলাম। আমি নজরুল ভাইকে দেখেছি শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে শুরু করে ট্রাক ইউনিয়ন সহ সকল ধরনের শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে নজরুল ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল। প্রত্যেকটি শ্রমিকের বিপদে আপদে এই নজরুল ভাই দৌড়ে যেতেন এবং শ্রমিকদের পাশে থাকতেন। কিন্তু এই নজরুল ভাই আমাদের এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন এটা কল্পনাও করতে পারিনি। যে সময় শুনলাম নজরুল ভাই আমাদের মাঝে আর নেই তখন দৌড়ে গিয়েছিলাম তার বাসায়। সেখানে দেখলাম শ্রমিকদের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, আমি আজ একটাই বলেতে চাই শ্রমিক উন্নয়ন ও শ্রমিকের শ্রমের মাধ্যমে দেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়। আজকে শ্রমিকদের যে ন্যায্য দাবি, অধিকার, সেই অধিকার থেকে তারা অনেক সময় বঞ্চিত হয়। আর এ অধিকার নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রতিবাদ করে শ্রমিকদের দাবি আদায় করে নিতে হবে।
এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি নাছির উদ্দিন, শ্রমিকদল নেতা নাজির আহমেদ নজির, লুৎফর রহমান মন্টু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হোসিয়ারী শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বেপারী, সহ-সভাপতি সাহাবুদ্দিন, সালাউদ্দিন মুন্সী, মো: দুলাল, আব্দুল কাদির, রুহুল আমিন, কামাল হোসেন, নেওয়াজ আলী, মোস্তফা মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেন, রাসেল, হাসেম, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বাবু স্বপন দত্ত, ট্রেড ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি আব্দুল হাই রশিদ ও শ্রমিক পার্টি হোসিয়ারী সভাপতি স্বপন দাস প্রমুখ।
এখানে উল্লেখ্যযে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন নজরুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে, স্ত্রী সহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। ওই দিন বাদ আসর নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি মসজিদে তার প্রথম জানাযা শেষে তার লাশ নেয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি ও পরবর্তীতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সৈরাচারী আন্দোলনেও ব্যাপক ভুমিকা রাখেন প্রয়াত শ্রমিকদলের নেতা। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন এই নেতা।