সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
চরম বিশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। একই সঙ্গে সংগঠনটির চেইন অব কমান্ড বলতে কিছুই নেই। নেতাও দাঁড়ায় মিছিলের ব্যানারের সামনে আবার তার কর্মীও দাঁড়াতো ধাক্কাধাক্কি ধস্তাধস্তি ও টানাটানিতে জড়িয়ে যায়। তেমনি দেখা গেল ২৫ মার্চ বৃহস্পতিবার জেলা যুবদলের একটি বিক্ষোভ মিছিলে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের একটি আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী বৃৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল।
বৃহস্পতিবার সকালে মহানগরীর সরকারি মহিলা কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক দিয়ে গিয়ে জামতলা হীরা কমিউিনিটি সেন্টারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
কিন্তু মিছিল শুরুর আগেই সামনের সারিতে দাঁড়ানো নিয়ে জেলা যুবদলের শীর্ষ নেতাদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। এরপর ব্যানার সামনে রাখা হলে সেই ব্যানারে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের মাঝে রীতিমত যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। মিছিলে কোন রকম শৃঙ্খলা দেখা যায়নি। শীর্ষ নেতারাও ব্যানার টানাটানি ও ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয়ে যায়। একজন আরেকজনকে ধাক্কার পাশাপাশি কেউ কেউ কুনই দিয়েও গুতো দিতে দেখা গেল। ৪/৫ মিনিটের বিক্ষোভ মিছিলে দশ সেকেন্ডও শৃঙ্খলা দেখা যায়নি।
এদের সঙ্গে ৩০/৩৫ জন যুবদলের কর্মীরা মিছিলের সামনে এসে মোবাইলে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে যায়। কেউ কেউ ব্যানারের একবারে সামনে থেকেই সেলফি কিংবা ভিডিও ধারণ শুরু করেন। পেছনে সংবাদকর্মীরা তাদের জন্য ছবি তুলতে ব্যাঘাত পোহাত হয়। এসব কর্মীরা মিছিল করার চেয়ে মিছিলের ছবি ও ভিডিও ধারণে ব্যস্ত ছিলেন। এসবের মাঝে যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি টানাটানি তো চলছিলই।
এক পর্যায়ে যুবদলের সভাপতি, সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যানার ছেড়েদিয়ে ব্যানার ছাড়াই মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। পেছনে চলে যান সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। জেলা যুবদলের সভাপতি থেকে শুরু করে প্রায় সকলেই ব্যানার নিয়ে টানাটানি ধাক্কাধাক্তিতে লিপ্ত ছিলেন। তাদের এমন টানাটানি ও ধাক্কাধাক্কি দেখে মনে হয়েছিল তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে একজন আরেকজনকে ব্যানারের সামনে থেকে সরাতে ধাক্কাধাক্কি করছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত, সহ-সভাপতি আফজাল কবির, দেলোয়ার হোসেন, মো. মাসুদুর রহমান, ইসমাইল খাঁন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল রানা, শাহিন আহমেদ, আরিফুজ্জামান ইমন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন, সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, সেলিম হোসেন দীপু, সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভূইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ প্রধান, বন্দর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মহিউদ্দিন শিশির, যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন, ফতুল্লা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন, সোনারগাঁও সনমান্দি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রেজাউল হক, সদস্য সচিব খোকন সিকদার সহ জেলা যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানা/উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন যুবদলের শত শত নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ সোমবারসুনামগঞ্জের আদালতে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক বলায় মামলাটি দায়ের করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মঈনুল হক।