সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে গত দুই দিনে পৃথক অভিযানে র্যাব ৪৭ জন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শুক্রবার সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আইপিএল ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়া খেলার সময় ১৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জে আরও ১৩জন জুুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইয়ার্ণ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনে অভিযান চালিয়ে ২২ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ এপ্রিল শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ২২ জুয়াড়িকে আটক করেছে র্যাব-১০। এ সময় দুই লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা ও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- টানবাজারের সর্বজিৎ সাহা, কৃষ্ণ রায়, আরকে দাস রোডের লিটন কুমার রায়, বন্দর রেললাইনের মো. কমল ওরফে বাবু, জালকুড়ি মিজিরবাড়ি এলাকার মো. এনামুল, শহরের বালুরমাঠ এলাকার মো. হাসান জামান, শহরের গলাচিপা আউয়াল চেয়ারম্যানের বাড়ির মো. নজরুল, মুন্সিগঞ্জের মো. আলমগীর, টানবাজারের রিপন কুমার সাহা, বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার লক্ষ্মণ সাহা, ১ নম্বর বাবুরাইল
বউবাজার এলাকার হাফিজুর রহমান, ফতুল্লার ভোলাইল গেউদ্দার বাজার এলাকার মো. সোলায়মান, টানবাজারের তাপস কুমার শীল, বন্দরের মদনগঞ্জ এলাকার মো. শুক্কুর মিয়া, মুন্সিগঞ্জের শ্যামল বৈদ্য, শহরের নিতাইগঞ্জের মো. আবু সাবেদ প্রিন্স, চাঁদপুরের মো. জলিল খান, দেওভোগ চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার মো. রুবেল, ফতুল্লার মাসদাইর গুদারাঘাটের মো. রুস্তম, শরীয়তপুরের মো. মনির হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের জীবন কুমার সাহা, টানবাজারের রিপন সাহা।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি শাহজামান গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় রবিবার র্যাব-১০ এর হাবিলদার মো. আলমগীর হোসেন আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ অভিযান চালিয়ে ১২ জয়াড়িকে গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়টি ১৮ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৮ এপ্রিল বিকেল ৫টা ৫ মিনিটের সময় র্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর, নারায়ণগঞ্জ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আদমজীনগর সোনামিয়া বাজার এরাকায় ৩নং বালুর মাঠের পশ্চিম দিকের দেয়ালের পাশে ফাঁকা মাঠে এক বিশেষ অভিযানে জুয়ার আস্তানায় ১২ জন জুয়াড়িকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মোঃ মনোয়ার হোসেন, মোঃ ইমরান, মোঃ মাহবুব খান, দেওয়ান বাদশাহ, মোঃ জাফর, মোঃ মুন্না, মোঃ জাহাঙ্গীর, মোঃ মুন্না, মোঃ বাবু, মোঃ মাসুম, মোঃ আলী আহমেদ ও মোঃ নওছার। এ সময় তাদের দখল হতে নগদ ৭ হাজার ২৫০ টাকা ও জুয়ার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগর সোনামিয়া বাজার এলাকায় ৩নং বালুর মাঠে দীর্ঘদিন ধরে নানা কায়দায় জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। কখনো গোপনে আবার কখনো কখনো প্রকাশ্যে চলতো এই জুয়ার আসর। সম্প্রতি এই সংঘবদ্ধ চক্রটি ৩নং বালুর মাঠের পশ্চিম দিকের দেয়ালের পাশে ফাঁকা মাঠে প্রকাশ্য দিবালোকে জুয়ার আস্তানা বানিয়ে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছে।
সেখানে প্রায় শতাধিক লোক নিয়মিত নিষিদ্ধ জুয়া খেলায় অংশ নিতো। উপস্থিত স্বাক্ষী, স্থানীয় লোকজন ও গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত নিষিদ্ধ জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। নিষিদ্ধ জুয়ার আস্তানা বন্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে আগের দিন ১৬ এপ্রিল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ১৩ ক্রিকেট জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার একটি চায়ের দোকানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
ওই দিন আটকরা হলেন- জহুরুল ইসলাম, লিটন, ইকবাল, মো: শাহীন, বাচ্চু মিয়া, মাসুম, আলমগীর, পলাশ, নয়ন, শাহ পরান, রাহাত, জাহাঙ্গীর আলম ও জিকু। তাদের কাছ থেকে জুয়া খেলার ৮৮ হাজার ৪৩৫ টাকা ও ৩২ ইঞ্জি একটি রঙিন এলইডি টেলিভিশন জব্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে র্যাব-১০ জানিয়েছিল, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হওয়ার সময় তারা প্রতি বল ও ওভার প্রতি কত রান হবে এর উপর বাজিধরে জুয়া খেলছিল। জুয়া খেলার কথা আটকরা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।