সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার চরাঞ্চল এলাকা আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রয়েছেন মতিউর রহমান মতি। যিনি গত নির্বাচনে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন তরুণ সমাজ সেবক সায়েম আহাম্মেদ। এমন পরিস্থিতিতে জেলার প্রভাবশালী বেশকজনকে ম্যানেজ করে সায়েমের দ্বারস্থ হোন মতিউর রহমান মতি। ফলে পরবর্তীতে মতি নির্বাচন করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।
তবে এ সামনের নির্বাচনকে সামনে রেখে আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর একটি আলোচনা ছড়িয়ে দেয়া হয় যে আবারো মতিউর রহমান মতি বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হতে চান। কিন্তু আলীরটেক ইউনিয়নবাসী নির্বাচনে ভোটের দাবিতে আন্দোলনে নেমে যান। চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদকে নিয়েই নির্বাচনের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলন করেন আলীরকেট ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।
এমন আন্দোলনের ফলে যখন নির্বাচন ও সুষ্ঠ ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করছেন সায়েম আহাম্মেদ তখন আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর মাঝে আলোচনায় থাকতে মিডিয়া প্রচারণায় নেমেছেন সাবেক চেয়াম্যান জাকির হোসেন। অথচ এই জাকির হোসেনকে গত কয়েক বছর আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর মাঝে দেখাও যায়নি। এমনকি যখন বিনা ভোটেই আবারো মতি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তখনও নির্বাচনের দাবিতে আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর পাশে দাঁড়াননি। কিন্তু তিনি গর্ত থেকে মুখ বের করেছেন নির্বাচনের আশা নিয়ে। কিন্তু এতে বিব্রত ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নবাসী। ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের দাবি- যেহেতু নির্বাচনের জন্য আমরা সায়েম আহাম্মেদকে নিয়েই মাঠে নেমেছি তাই আগামী নির্বাচনে সায়েম আহাম্মেদকেই চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই।
যে বিষয়ে আলীরটেক ইউনিয়নে একটি কর্মসূচিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ জানিয়েছেন, আমাদের এলাকার মুরুব্বিরা আমাকে গতবার ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে বলেছিলেন, তাদের অনুরোধে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হই। ওই নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান বিভিন্ন কায়দায় আমার মনোনয়ন আটকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। আমি যেনো নির্বাচন না করি তার জন্য তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে আমাদের এলাকার মুরুব্বি সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী আমাকে ফোন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে যেতে বলেন এবং তার অনুরোধে আমি ওইখানে যাই। ওইখানে আমাদের আলীরটেক ইউনিয়নের আরো গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিতে মতি আমার কাছে চেয়ারম্যানি ভিক্ষা চায়। তিনি সবার সামনে বলেছিলেন ‘এবার আমাকে চেয়ারম্যান হতে দাও, এরপরে আমি আর নির্বাচন করিবো না।’ তিনি এখন সেই কথা ভুলে গেছেন। ওই সভায় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমাকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলে। তখন আমি বলেছিলাম মতিউর রহমান আমার সাথে নির্বাচনের মাঠে আসুক। তার সাথে আমি ভোটের মাঠে খেলতে চাই। এবারও মতি একই কায়দায় বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য পায়তারা করছে। তার স্বপ্ন এবার আমরা সফল হতে দিবোনা।
এর আগে গত ২ এপ্রিল শুক্রবার আলীরটেক ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড এলাকার গঞ্জকুমারিয়া শাহ্ আলী বাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদকে নিয়ে পথসভা ও আলোচনা সভা করেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী। যেখানে কয়েক হাজার ভোটার উপস্থিত ছিলেন।
পরে আলোচনা ও মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ বলেছিলেন, আমাদের এলাকার মুরুব্বিরা আমাকে গতবার ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে বলেছিলেন, তাদের অনুরোধে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হই। ওই নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান বিভিন্ন কায়দায় আমার মনোনয়ন আটকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। আমি যেনো নির্বাচন না করি তার জন্য তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে আমাদের এলাকার মুরুব্বি সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী আমাকে ফোন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে যেতে বলেন এবং তার অনুরোধে আমি ওইখানে যাই। ওইখানে আমাদের আলীরটেক ইউনিয়নের আরো গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিতে মতি আমার কাছে চেয়ারম্যানি ভিক্ষা চায়। তিনি সবার সামনে বলেছিলেন ‘এবার আমাকে চেয়ারম্যান হতে দাও, এরপরে আমি আর নির্বাচন করিবো না।’ তিনি এখন সেই কথা ভুলে গেছেন। ওই সভায় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমাকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলে। তখন আমি বলেছিলাম মতিউর রহমান আমার সাথে নির্বাচনের মাঠে আসুক। তার সাথে আমি ভোটের মাঠে খেলতে চাই। এবারও মতি একই কায়দায় বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য পায়তারা করছে। তার স্বপ্ন এবার আমরা সফল হতে দিবোনা। তার যদি সাহস থাকে মাঠে এসে আমাদের সাথে খেলুক। আমি তার সাথে ভোটের মাঠে খেলতে চাই।
সায়েম আহাম্মেদ আরও বলেছিলেন, মতি তো ওয়াদা দিয়েও তা ভঙ্গ করে। আমি আমার এলাকার এক মুরুব্বিকে বললাম ডিক্রিরচরের মানুষতো এমন হয়না, তখন তিনি আমাকে বললেন মতিতো ডিক্রিচরের বাসিন্দা না। সে মুন্সিগঞ্জ থেকে এসেছে। তিনি যদি আমাদের এলাকার বাসিন্দা হতেন তাহলে আলীরটেকের জন্য তার মায়া থাকতো। কিন্তু তার আচরণে আমরা তা পাইনা। ২৩ বছর চেয়ারম্যানি করার পরও কেন তার আরো চেয়ারম্যান হতে হবে। সৎ সাহস থাকলে তিনি ভোটে এসে নির্বাচন করুক।
আলীরটেকের সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরকে উদ্দেশ্য করে সায়েম আহাম্মেদ বলেছিলেন, জাকির চেয়ারম্যান হাজার কোটি টাকার মালিক। তিনি চাইলে এমনিতে নিজের টাকা দিয়ে উন্নয়ন করতে পারতো। কিন্তু তা না করে উন্নয়ন করার জন্য তার চেয়ারম্যান হতে হবে। তারা চায়না আলীরটেকে নতুন নেতৃত্ব আসুক।
চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম বলেছিলেন, বহিরাগতরা এসে আমাদেরকে জিম্মি করে রাখছে। তারা বার বার মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হতে চায়। আমি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য গতবার যতটুকু চেষ্টা করেছি এবার ২ হাজার গুণ বেশি করবো। প্রয়োজনে আমার জান দিয়া দিবো তাও মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিতে দিবোনা। আমরা পরিবর্তন চাই। এই পরিবর্তন হলো এলাকার উন্নয়ন মাধ্যমে মানুষের পরিবর্তন। এখানকার মানুষ যেন ন্যায় বিচার পেতে পারে তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা যেন আপনাদের ভোট দিতে পারেন আমরা সেই পরিবেশ তৈরীর লক্ষে কাজ করছি। এই এলাকার মানুষ যদি আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে আমরা এলাকার রাস্তা ঘাট ব্রীজ কালভার্ট সহ সকল উন্নয়নমূলক কাজগুলো সবার আগে করবো। তা আপনাদেরকে সাথে নিয়ে করবো। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। একই সাথে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখেন।
তবে এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে ইউনিয়নের আলীরটেক, কুড়েরপাড় ও গোপচর সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদকে নিয়ে গণসংযোগে নির্বাচন ও ভোটের দাবিতে পথচারণা চালিয়েছিলেন আলীরটেক ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ।
ওইদিন পথসভায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ বলেছিলেন, স্বাধীনতার পর এই আলীরটেকবাসী আওয়ামীলীগের কোন তৃণমুলের জনপ্রতিনিধি পায়নি। এখানে আওয়ামীলীগের তৃনমূলের পছন্দে প্রার্থী করা হলে নৌকার বিজয় নিশ্চিত এবং এখানে আওয়ামীলীগ শক্তিশালী হবে।
সায়েম আহাম্মেদ প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি একেএম সেলিম ওসমানের প্রতি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, আজকে নির্বাচনের দাবিতে আলীরটেকবাসী যে পথসভা করেছেন এই কর্মসূচিতে আমার সহমত রয়েছে। আমরা নির্বাচন চাই। এখানে বিএনপি-জামাতের প্রেত্মাতারা শাসন করছে। আমরা তৃনমূলের একজন নৌকার প্রার্থী চাই।
ওইদিন নির্বাচনের দাবিতে শোডাউন করেছেন ওই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। তারা রাজপথে নেমে শোডাউন করে শ্লোগানে শ্লোগানে নির্বাচনের দাবিতে উত্তাল করে তুলে আলীরটেক ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। তাদের একটাই দাবি ‘চাই নির্বাচন’ সিলেকশন নয় চাই ইলেকশন।’
আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মো. সায়েম আহম্মেদের নেতৃত্বে কয়েক হাজার জনতা এই পথসভা ও র্যালীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
নির্বাচনের দাবির পাশাপাশি পথসভায় আলীরটেক ইউনিয়নের উন্নয়ন ও ইউনিয়নবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে মো. সায়েম আহম্মেদকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয়রা বলেছিলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত আলীরটেক ইউনিয়নকে আধুনিক ইউনিয়নে রূপান্ততি করতে চেয়ারম্যানপ্রার্থী সায়েমের বিকল্প নেই। গত নির্বাচনগুলোতে যারাই এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে এসেছেন, তারা আলীরটেক ইউনিয়নের জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নের কথা চিন্তা না করে বরং ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করে গেছেন।
‘সিলেকশন নয়, চাই ইলেকশন’ এমন দাবি জানিয়ে আলীরটেক ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেছিলেন, গত কয়েক নির্বাচনে আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারিনি। কোন এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এখানে একচেটিয়াভাবে চেয়ারম্যান হয়ে আসছে। এতে করে সাধারণ মানুষ একদিকে যেমন ভোটাধিকার বঞ্চিত হচ্ছে, একই সাথে অযোগ্য লোকেরা জনপ্রতিনিধির চেয়ারে বসায় দীর্ঘদিন যাবত তারা উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির পরিবর্তনে এবার জোড়ালো ডাক দিয়েছেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী। উন্নয়নের প্রশ্নে তারা এবার পরিবর্তন চান। সেক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ।