সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটি নেই প্রায় ৪ মাস পেড়িয়ে গেল। কমিটি হবে হচ্ছে করেও এখনও হয়নি মহানগর যুবদলের কমিটি। তবে মহানগর যুবদলের শীর্ষ পদ প্রত্যাশি নেতারা নিশ্চিত করেছেন প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব পদে অধিষ্ট হতে বিভিন্ন বলয় থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং গ্রুপিং দৌড়যাপ করছেন যার যার মত করে। তবে দৌড়যাপে থাকা বেশক’জন নেতার শীর্ষ পদে আসার যোগ্যতা নিয়ে আপত্তি অনাপত্তি ওঠেছে বেশ জোরালোভাবে।
চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। ওই কমিটিতে সভাপতি ছিলেন কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি ছিলেন মমতাজ উদ্দীন মন্তু।
নেতাকর্মীরা জানান, এই কমিটি গঠনে প্রথমে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় যা ২০১২/১৩ সালের দিকে। ওই কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন খোরশেদ এবং বেশকজন ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক। এই কমিটি গঠনের সময়ও বিরোধীতা ছিল বেশ জোরালো। পরবর্তীতে একটি সুপার ফাইভ কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সভাপতি ও সেক্রেটারি বাদে সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু।
এই কমিটিতে মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে রশু এই পদে আসেন। বাকি দুজন যুবদলের আগের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তবে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেনকে টপকে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদটি ভাগিয়ে নেন শোখন। পরবর্তীতে হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। দেড় ডজন করে সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদকের বন্যা বইয়ে দেয়া হয় পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে। এ নিয়ে শীর্ষ ৫ নেতার মাঝে তুমুল বিরোধ বিভক্তি চলে। রীতিমত হয় বিরোধীয় ঝড়ের ঢেউ। তবে সভাপতি ও সেক্রেটারি একজোট থাকায় টিকে যায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কিন্তু শেষ অবধি সভাপতি ও সেক্রেটারির বিভক্তিতে বিলুপ্ত হয় মহানগর যুবদলের কমিটি।
সামনে মহানগর যুবদলের কমিটিতে আসতে নারাজ বিগত কমিটির সভাপতি খোরশেদ। তবে তার অনুগামী বলয় থেকে বেশকজন শীর্ষ নেতা ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফকে নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা চাচ্ছেন জোসেফকে আহ্বায়ক পদে রেখে মহানগর যুবদলের রাজনীতি চাঙ্গা করতে। কিন্তু জোসেফকে নিয়ে জোরালো আপত্তি ওঠেছে মহানগর যুবদলের আরেক অংশের নেতাদের মাঝে। তাদের দাবি- জোসেফ দীর্ঘদিন রাজনীতিতেই ছিলেন না। যুবদলের রাজনীতি তো তিনি করেননি। তাকে হুট করে শীর্ষ পদে বসিয়ে দিলেই নেতাকর্মীরা মেনে নিবে না। ফলে মহানগর যুবদলে চরম বিরোধ সৃষ্টি হবে।
নেতাকর্মীরা বলছেন- সদস্য সচিব কিংবা সেক্রেটারি পদে একাধিক যোগ্য নেতা মহানগর যুবদলে রয়েছে। কিন্তু আহ্বায়ক কিংবা সভাপতি পদে নেতৃত্ব দেয়ার মত নেতার সংখ্যা নেই বললেই চলে। যে কারনে কেউ কেউ চাচ্ছেন সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক পদটি নগরীতে রাখতে। শহর কেন্দ্রীক রাজনীতিতে এখানকার কাউকেই শীর্ষ পদে রাখতে হবে।
খোরশেদের পর সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক হিসেবে সবার আগেই নাম থাকছে মমতাজ উদ্দীন মন্তুর। কিন্তু তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর কখনও জোরালো সক্রিয় আবার কখনও একেবারেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। সেই ধারাবাহিকতার তার অভাব থাকলেও কেন্দ্রীয় যুবদলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্টতা।
এর পরের নামটি মনোয়ার হোসেন শোখন ও সাগর প্রধান। কিন্তু শোখন নিজেই এখন জোসেফকে আহ্বায়ক পদে আনতে মাঠে নেমেছেন। মন্তু ও সাগর প্র্ধানের মধ্যে আহ্বায়ক পদে মন্তুকেই নেতাকর্মীরা এগিয়ে রাখছেন। তবে সেক্রেটারি কিংবা সদস্য সচিব পদে শক্ত ও যোগ্য নেতৃত্ব মনে করা হচ্ছে সাগর প্রধানকে। রাজনীতির মাঠে যার সক্রিয়তা সব সময় এবং করোনাকালেও খোরশেদের পর যুবদল নেতাদের মধ্যে তার ভুমিকা ছিল বেশ প্রসংশনীয়। কোনো কারনে মন্তু ফসকে গেলে এগিয়ে থাকবেন সাগর প্রধান।
এদিকে রানা মুজিব এক সময় রাজপথের সক্রিয় ও ত্যাগীদের মধ্যে অন্যতম থাকলেও তিনি মাঝখানে ছিলেন প্রবাসে। যে কারনে তাকে নিয়ে একটি পক্ষের আপত্তি বেশ। যদিও জোসেফ রানা মুজিবকে নিয়েই জোট বেধেছেন। রশিদুর রহমান রশুর এক সময়কার দাপটশালী রাজনীতির বর্তমানে তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়েছেন। তিনি তার দুই রাজনৈতিক মামার নিয়ন্ত্রনের বাহিরে গিয়ে আহ্বায়ক কিংবা সদস্য সচিব পদে আসতে চান সেটা প্রকাশ করার স্বকীয়তা হারিয়েছেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
একইভাবে আহাম্মদ আলী, নাজমুল হক রানা, জুয়েল প্রধান, জুয়েল রানা, শেখ মোহাম্মদ অপু সহ এ রকম আরো বেশকজন নেতা যারা আহ্বায়ক কিংবা সদস্য সচিব পদে আসতে চান কিনা সে রকম দৌড়যাপে তারা নাই। তারা নিজ নিজ থানার নেতৃত্ব বহাল রাখার চিন্তায়। মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ পদে থাকা বেশকজন নেতাও মহানগর যুবদলে আসতে চাচ্ছেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের একটি বলয় শীর্ষ দুটি পদের লড়াইয়ে দৌড়যাপে রয়েছেন। তবে আজাদের বলয়ে নেতৃত্ব দেয়ার মত কোনো নেতা দেখছেন না নেতাকর্মীরা।