সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক নামে পরিচিত ঢাকা বাইপাস সড়কের গোলাকান্দাইল গোল চত্বরের ঘেঁষে সড়কের ঢালে ও মহাসড়কের উপরেই ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা । এসব আবর্জনা পঁচে চারদিকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী ও হাজারো পথচারী। এলাকায় আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাওঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে বিসমিল্লাহ আড়ৎ নামে পাইকারী কাঁচাবাজার। এই আড়তের অবশিষ্ট বর্জ্য প্রতিদিনই ভ্যান গাড়ি দিয়ে সড়কের ঢালে ও মহাসড়কের উপরেই ফেলা হচ্ছে। তাছারা প্রতিদিন ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল করে সড়কের উপরে বসা মাছ, ফলের ও সবজির দোকান। আর এসব দোকানের অবশিষ্ট ময়লা আবর্জনাও প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে।
গত এ বছর আগে বিগত ইউএনও মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ফুটপাত, মহাসড়ক দখলমুক্ত করে। তাছারা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেয়। এর কিছিুদিন পর আবার ধীরে ধীরে মহাসড়কের পাশে ফুটপাত ও সড়কের কিছু অংশ দখলদারদের দখলে চলে যায় এবং কিছু স্থানে ময়লা ফেলে ময়লা আবর্জনার স্তুপ তৈরী হয়।
এখন স্থায়ীভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়াান হাইওয়ে সড়ক নামে পরিচিত ঢাকা বাইপাস সড়কের গোলাকান্দাইল গোল চত্বরের ঘেঁষে সড়কের ঢালে ও মহাসড়কের উপরেই ময়লা আবর্জনা ফেলে এ স্থানটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে।
কথা হয় ব্যবসায়ী সোহেল মিয়ার সঙ্গে তিনি বলেন, ভুলতা গাউছিযা মার্কেটে আমার দোকান আছে। প্রতিদিন সকালে আমার দোকানে আসতে হয় এবং রাতের বেলা বিআরটিসি গাড়ি করে যেতে হয। ময়লার ভাগারের বিপরীদ দিকেই ভুলতা-কুড়িল বিআরটিসি কাউন্টার। সকাল বেলা বিআরটিসি থেকে নামলেই দুর্গন্ধে পেট ফুলে যায়। মনে হয় দুর্গন্ধে এই বুঝি বমি এলো। নাক, মুখে কাপড চেপে কোনমতে এতোটুকু রাস্তা পার হই।
আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ জানান, ভ‚লতা ফ্লাইওভারের নীচে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় এখন জনদ‚র্ভোগ হয়ে দাড়িয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়াচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা ময়লার ভাগাড় এখান থেকে অপসারণ না করলে এখানে ব্যবসা বানিজ্য ও বসবাস করা মুশকিল হয়ে পড়বে। এ ধরনের অভিযোগ হাজার হাজার সাধারণ মানুষের।
ময়লা ফেলতে আশা ভ্যান চালকদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, বিসমিল্লাহ ফিলিং স্টেশন এর পিছনের পাইকারি কাঁচাবাজার আড়তদার বাদশা মিয়ার নির্দেশেই এখানে আমরা ময়লা ফেলছি।
এ ব্যাপারে বাদশা মিয়ার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি তিনি তা অস্বীকার করে। তবে আড়ৎ কমিটির লিটন নামে এক ব্যক্তি জানায় স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নির্দেশেই এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমরা তার পরামর্শক্রমে সবকিছু করি। সরকারি জায়গায় ময়লা ফেলছেন কার কাছ থেকে অনুমোতি নিয়ে এই প্রশ্নের জবাবে লিটন মিযা বলেন, খোলা পড়ে আছে তাই আমরা এখানে ময়লা ফেলছি। আমাদের এখানে আশেপাশে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই তাই এখানে খালি জায়গা পেয়ে কর্মচারীরা ময়লা ফেলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরজাহান আরা খাতুন জানান, তীব্র গন্ধদুষনের শিকার হলে যেকোন মানুষের মস্তিস্কের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাড়তে পারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তাছাড়া শিশু ও বয়স্কদের শ্বাস কষ্টের সমস্যাও হতে পারে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুসরত জাহান বলেন, মার্কেট পরিচালনা কমিটিকে বলে দেওয়া আছে খোলা জায়গায় যাতে তাদের উচ্ছিষ্ট বর্জ্য না ফেলে। আর সরকারি জায়গাতে তো তাদের ময়লা ফেলার কোন এখতিয়ারই নাই।
ফুটপাত দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোভিডের কারনে আমাদের চলমান কাজগুলোও ব্যহত হচ্ছে । কোভিডের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে অভিযান চালানো হবে। তাছারা কেউ এ ব্যপারে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।