সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতি মামলায় সাঁজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু সেই খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে দেখা যায়নি নারায়ণগঞ্জের দুই তরুণ রাজনীতিক। তারা মুলত মাঠের নয় নমিনেশন ভিত্তিক রাজনীতি করেন সেটাও তারা প্রমাণ করেছেন। এর মধ্যে একজন আবার গিয়েছেন রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে। সঙ্গে সরকারি দলের এমপিও।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক মনোনয়ন বাছাইয়ে দুজনই বিএনপির টিকেট পান। কিন্তু চূড়ান্ত মনোনয়নে বাদ যান একজন। একজন নির্বাচনে মাঠেই দাড়াতে পারেননি। আরেকজনের হুদিস পাওয়া যাচ্ছেনা বিএনপির রাজনীতিতে। একজন আড়াইহাজারে আন্দোলনের নামে ফটোসেশন করলেও আরেকজন তাতেও নারাজ। তাকে কোন কর্মকান্ডেই দেখা যায়নি। তবে তিনি পারদর্শ তার চাটুকার কর্মীদের দিয়ে বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটিতে বড় বড় পদে আসীন করতে।
নেতাকর্মীরা বলছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরাই চলে গেছেন পর্দার আড়ালে। কেউ কেউ আবার বিএনপির ভরাডুবির পর মাঠে না থাকলেও দেখা যায় দলীয় নেতাদের বিপদে ছুটে যাচ্ছেন তাদের পাশে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি থেকে প্রায় হারিয়ে গেছেন। কেউ কেউ বলছেন দিপু ভূঁইয়া আর রাজনীতি করবেন না। তিনি তার অঢেল ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। যে কারনে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ তেমন একটা রাখছেন না।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন নজরুল ইসলাম আজাদ। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা তাকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করলেও নির্বাচনের মাঠে ছিল তিনি চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। যার ফলে সারা দেশের মধ্যে এ নজরুল ইসলাম আজাদ পেয়েছিলেন সবচেয়ে লজ্জাজনক ভোট। নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে। নির্বাচনের পর বিএনপির একাধিক কর্মসূচী পালন হলেও ছিলেন না তিনি কোন কর্মসূচীতে। এমন কি গত মাসে জেলা বিএনপির শ্রমিকদলের নেতা নজরুল ইসলামের জানাযাতেও আসেননি এ ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া নেতা।
এছাড়াও জানাগেছে, নির্বাচনের পর থেকে আজাদ তার অনুসারি নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। নির্বাচনের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে বসেননি তিনি। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না শর্তে তার অনুগামী এক কর্মী বলেন, আমরা ভুল করেছি এমন নির্বাচনমুখী নেতার রাজনীতি করে। আর আমরা তার নির্বাচন করে এখন বাড়িঘর ছাড়া। কিন্তু রাখছেন না আমাদের কোন খোঁজখবর। এছাড়া নির্বাচনের আগেই তিনি জিয়া পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন একাধিকবার। নির্বাচনে মনোনয়নে ছিল তার বিশাল নাটকীয়তা। যার ফলও পেয়েছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। তার পক্ষে ছিল না বিএনপি নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু একজন নির্বাচন কেন্দ্রীক রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিত। ধন কুবের এই নেতা কখনই বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলেন না। নিজের গাঁ বাঁজিয়ে দলে টিকে রয়েছেন। কমিটি ও তার কর্মীদের জন্য পদপদবী কেনা ছাড়া তার আর কোন রাজনীতি নাই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে প্রাথমিকভাবে তাকে মনোনিত করা হলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ে যান দিপু ভুঁইয়া। এ আসনে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পান জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। দিপু ভূইয়া নির্বাচনের আগেও বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে যেমন ছিলেননা তেমনি নির্বাচনের পর আরও তিনি উধাও হয়ে গেছেন। কেউ কেউ বলেছেন তিনি আর রাজনীতি করবেন না। নির্বাচনে পর থেকে বিএনপির কোন কর্মসূচি তো দূরের কথা বিএনপির কোন নেতার মৃত্যুর সংবাদ শুনেও তিনি জানাযাতেও যান না। কদিন আগেও শ্রমিকদল ও মৎস্যজীবী দলের দুই নেতা মারা গেলেও তারা আসেননি।